Ajker Patrika

ভারত-পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি হামলার পর কী অপেক্ষা করছে সামনে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৭ মে ২০২৫, ১৪: ৩২
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে অচেনা বিমান বিধ্বস্ত। ছবি: এএফপি
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে অচেনা বিমান বিধ্বস্ত। ছবি: এএফপি

পাকিস্তানজুড়ে ৯টি স্থাপনায় হামলার অল্প কিছুক্ষণ পরই ভারত ঘোষণা করে, ‘ন্যায়বিচার সম্পন্ন হয়েছে।’ এপ্রিলের শেষ দিকে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় ভারতীয় পর্যটকদের ব্যাপক প্রাণহানির পর দেশটি পাকিস্তানকে দায়ী করে প্রতিশোধের পথ বেছে নেয়।

শেষমেশ তথাকথিত প্রতিশোধ হিসেবে ভারত পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলের ৯টি স্থাপনায় হামলা চালিয়েই দিয়েছে। পাকিস্তানও দাবি করেছে, এই হামলার পর তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে এবং সেগুলোর পাইলটকে গ্রেপ্তার করেছে। এমনকি, কাশ্মীর অঞ্চলে দুই দেশের সীমান্ত লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি) বা নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর উভয় পক্ষের সেনারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে।

এই অবস্থায় বিশ্ব উদ্বেগজনকভাবে এই সংঘাতের দিকে তাকিয়ে আছে এবং প্রশ্ন উঠছে—এই সংঘাত কতটা বাড়বে এবং দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে যুদ্ধ লেগে যেতে পারে কি না।

দিল্লির স্পষ্ট সামরিক বার্তার পরও দেশটির সংযত ভাষা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে এটি লাগামহীন সংঘাত নয়, বরং এটি পরস্পরের ওপর আঘাত এবং নিয়ন্ত্রিত সংঘাতের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। ভারত জোর দিয়ে বলেছে, ‘পাকিস্তানের কোনো সামরিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি। বরং তারা লক্ষ্য নির্ধারণ এবং কার্যকারিতায় যথেষ্ট সংযম প্রদর্শন করেছে।’

দিল্লি অবিলম্বে বিশ্বকে ও ইসলামাবাদকে জানিয়ে দেয় যে, তাদের হামলা ছিল ‘সুনির্দিষ্ট, পরিমাপযোগ্য এবং উত্তেজনা না বাড়ানোর উদ্দেশ্যে।’ তবে উদ্বিগ্ন কূটনীতিকেরা আশা করছেন যে, ছয় বছর আগে ঘটে যাওয়া একই ধরনের উত্তেজনা সম্ভবত বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত করার একটি নজির হতে পারে।

২০১৯ সালের শুরুতে পুলওয়ামায় বোমা হামলায় ৪০ জন ভারতীয় আধা সামরিক কর্মী নিহত হন। জবাবে দিল্লি পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলা চালায়। দিল্লি দাবি করেছিল, তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ শিবির। ইসলামাবাদ অবশ্য সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানায়, সেটি ছিল জনমানবহীন বনভূমি।

পরদিন পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালায় এবং একটি ডগ ফাইটে (আকাশে যুদ্ধবিমানের লড়াইয়ে) ভারতীয় বিমানবাহিনীর এক পাইলট গুলিবিদ্ধ হয়ে বন্দী হন। উত্তেজনা বৃদ্ধি সত্ত্বেও, চিরবৈরী দুই দেশ যুদ্ধের দ্বারপ্রান্ত থেকে সরে আসতে সক্ষম হয়েছিল। উভয় পক্ষই বিজয় দাবি করেছিল এবং তাদের জনগণকে বলতে পেরেছিল যে সম্মান রক্ষা হয়েছে।

কিন্তু ভারত এখন তার প্রতিশোধ নিয়েছে। এখন সবার নজর পাকিস্তানের দিকে, তাদের সামরিক বাহিনী কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় তা দেখার জন্য। অর্থাৎ, এই অঞ্চল আরও একবার উত্তেজনা বৃদ্ধি ও সংযমের পথ অনুসরণ করার এক কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতের হামলার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ভারতের হামলাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ বলে ঘোষণা করেন এবং বলেন যে কোনো সামরিক জবাব দেওয়া যুক্তিযুক্ত। উভয় পক্ষের কাছেই এমন অস্ত্র রয়েছে, যা একে অপরের ভয়াবহ রক্তপাত ঘটাতে পারে। এখন প্রশ্ন হলো, ভারত কি কেবল একটি বার্তা দিতে চায় এবং পাকিস্তান চরমপন্থীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে কিনা। তবে বিষয়টি এখানেই সীমাবদ্ধ নয়। পাকিস্তানের নেতারা কীভাবে জবাব দেবেন এবং নিজ জনগণের কাছে মুখ রক্ষা করবেন তাই এখন দেখার বিষয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অপারেশন সিন্দুর ঘিরে আলোচিত কে এই কর্নেল সোফিয়া কুরেশি

কাশ্মীরে বিধ্বস্ত বিমানের অংশবিশেষ ফরাসি কোম্পানির তৈরি, হতে পারে রাফাল

সীমান্তে সাদা পতাকা উড়িয়ে আত্মসমর্পণের ইঙ্গিত দিয়েছে ভারত: পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী

নিজ কার্যালয়ে র‍্যাব কর্মকর্তার গুলিবিদ্ধ লাশ, পাশে চিরকুট

আকাশ প্রতিরক্ষায় কে এগিয়ে, পাকিস্তান কি ভারতের আক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত