Ajker Patrika

নোবেল পুরস্কারে লিঙ্গবৈষম্য

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২১, ১৭: ১৪
Thumbnail image

বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক পদক হিসেবে বিবেচনা করা হয় নোবেল পুরস্কারকে। তবে এই পুরস্কারে লিঙ্গবৈষম্য প্রকট। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এমনটিই বলা হয়েছে।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত পাঁচ ক্যাটাগরির মধ্যে চারটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই চার ক্যাটাগরিতে এবার ১০ জন নোবেল পেয়েছেন। এর মধ্যে ৯ জনই পুরুষ। শুধু এবারই নয় এখন পর্যন্ত নোবেল পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৮৮৫ জনই পুরুষ। আর নারী রয়েছেন মাত্র ৫৯ জন।

চলতি বছর সাহিত্যে নোবেল জিতেছেন ভারত মহাসাগরের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ জানজিবারের শরণার্থী আবদুল রাজাক গুরনাহ। চিকিৎসায় নোবেল পেয়েছেন মার্কিন বিজ্ঞানী ডেভিড জুলিয়াস ও আহডেম পাটাপোশিয়ান। জলবায়ু বিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের জন্য পদার্থবিদ্যায় নোবেল জিতেছেন জাপানের সুকোরো মানাবে, জার্মানির ক্লাউস হাসেলম্যান, ইতালির জর্জিও পারিসি। নতুন অণু তৈরির কৌশল উদ্ভাবন করে নোবেল পেয়েছেন দুই বিজ্ঞানী বেনজামিন লিস্ট ও ডেভিড ম্যাকমিলান। আর গতকাল শুক্রবার শান্তিতে নোবেল পেলেন মারিয়া রেসা ও দিমিত্রি মুরাতভ। অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ীর নাম এখনো ঘোষণা করা হয়নি। এটি আগামী সোমবার ঘোষণা করা হবে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সাল পর্যন্ত নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মোট নারীর সংখ্যা ৫৮ জন। এ বছর এখন পর্যন্ত পাওয়া ১ জনকে হিসাবে নিলে তা ৫৯। এটি ৬০-এর কোটা পেরোনোর সম্ভাবনা তেমন নেই এবার। অন্যদিকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নোবেল পাওয়া পুরুষের সংখ্যা ৮৭৬ জন। এবার এ তালিকায় এরই মধ্যে ৯ জন যুক্ত হয়েছেন। শতাংশের হিসাব আনলে এই পরিসংখ্যান আরও চমকে দেবে। কারণ, এই হিসাব বলছে, এখন পর্যন্ত মোট ঘোষিত নোবেল পুরস্কারের ৯৩ দশমিক ৭৫ শতাংশই গেছে পুরুষের দখলে। নারীর জন্য তাহলে বাকি থাকল কী? ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। 

এ নিয়ে নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থা সুইডিশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফিমেল অ্যাকাডেমিকসের প্রধান অ্যান মেরি বলেন, সাহিত্যে নোবেল জেতা আবদুল রাজাক গুরনাহ ইউরোপের নন। তবে তিনি তো আর নারী নন। 

এ প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট লন্ডনের অধ্যাপক উইনস্টন মরগান রয়টার্সকে বলেন, নোবেল পুরস্কারের ক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্য অনেক বড়। নারীদের নোবেল জেতার সংখ্যা খুবই কম। 

নোবেল পুরস্কার প্রদান করে নরওয়ের নোবেল কমিটি। এই কমিটির অধিকাংশই নারী। বোস্টন ইউনিভার্সিটি স্কুল অব পাবলিক হেলথের মহামারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এলি মারে বলেন, এমআরএনএ ভ্যাকসিন বিকাশের প্রধান বিজ্ঞানী ক্যাটালিন কারিকো ও কিজমেকিয়া করবেট। এই প্রযুক্তি বৈশ্বিক মহামারি করোনার বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে লড়াই করতে সহায়তা করছে। তবু তাঁরা নোবেল পাননি। বিষয়টি হতাশাজনক। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামনের বছরের এই দুই নারীর কাজকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। নোবেল অ্যাসেম্বলির চেয়ারম্যান জেসপার হেগস্ট্রোম। এই সংস্থাটি চিকিৎসায় নোবেল দেওয়ার বিষয়টি দেখভাল করে। নারীদের নোবেল জয় সম্পর্কে হেগস্ট্রোম বলেন, নারীদের পুরস্কার কম জেতার কারণ ব্যাখ্যা করা সহজ নয়। তবে এটি বিজ্ঞানে নারীর প্রতিনিধিত্বকে প্রতিফলিত করেছিল। 

নোবেল কমিটির বাছাই প্রক্রিয়ায় লিঙ্গ কোনো ভূমিকা পালন করেছে কি-না এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অবশ্য রাজি হননি হেগস্ট্রোম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত