Ajker Patrika

অস্ট্রেলিয়ার গণভোটে আদিবাসী পক্ষ পরাজিত

ফজলুল বারী, অস্ট্রেলিয়া থেকে
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২৩, ২০: ০৫
অস্ট্রেলিয়ার গণভোটে আদিবাসী পক্ষ পরাজিত

অস্ট্রেলিয়ায় আজ শনিবার আদিবাসী দ্বীপবাসীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য গণভোট হয়েছে। আদিবাসীদের সমস্যা দ্রুত সমাধানে জাতীয় সংসদে বিশেষ একটি কমিটি করতে চেয়েছিল ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি। সংসদে আদিবাসীদের কণ্ঠস্বর নামে প্রচার পেয়েছিল এই গণভোট। এ জন্যে সংবিধান সংশোধন দরকার ছিল। 

সংবিধান সংশোধনের জন্য সম্মতি দরকার ছিল মহাদেশটির ছয়টি রাজ্যের অন্তত চারটির। কিন্তু দিন শেষে জানা গেল অস্ট্রেলিয়ান ভোটাররা ঐতিহাসিক গণভোটে সাংবিধানিক সংশোধনী প্রত্যাখ্যান করেছেন। জরিপ সংগঠনগুলো এমন আভাস অবশ্য আগেই দিয়েছিল। একমাত্র রাজধানী ক্যানবেরাতে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হয়েছে। ৩৩ শতাংশের বেশি আদিবাসী নর্দান টেরিটোরিতে থাকেন। সেখানেও আদিবাসীরা পরাজিত হয়েছেন। 

অস্ট্রেলিয়ার গ্রাম এলাকাগুলোয় ধনী শ্বেতাঙ্গরা বেশি থাকেন। গ্রামের দিকে ‘না’ ভোট একচেটিয়া পড়েছে। এই ভোটের প্রচারণার ধরনও ছিল লক্ষণীয়। বিরোধী দল লিবারেল-ন্যাশনাল কোয়ালিশন এই গণভোটের বিরোধিতা করলেও প্রচার নিয়ে তাদের অতটা হইচই ছিল না। বিরোধী দলের নেতা পিটার ডাটন বলেছেন, ভোটের ফলাফল অস্ট্রেলিয়ার জন্য ভালো হয়েছে। 

৬০ হাজার বছরেরও আগে থেকে আদিবাসী আর দ্বীপবাসীরা এই মহাদেশটিতে বসবাস করে আসছিলেন। চারদিকে সাগর মহাসাগর অধ্যুষিত মহাদেশের চারপাশে অনেকগুলো দ্বীপদেশ রয়েছে। সেসব আদিবাসী-দ্বীপবাসীদের অস্ট্রেলিয়ার আধুনিক কালের শাসকেরা সোহাগে ‘ফার্স্ট নেশন’ নাম দিলেও বিশেষ মর্যাদা দিতে যে নারাজ, শনিবারের গণভোটে তা আবার প্রমাণ হলো। 

ভোটের গণ রায় মেনে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজি, অস্ট্রেলিয়ানদের একে অপরের প্রতি দয়া দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন। 

আলবানিজি বলেন, ‘আদিবাসীদের হৃদয় থেকে নম্রতা, করুণা এবং ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদের প্রসারিত একটি আমন্ত্রণ ছিল। কিন্তু ভোটে সেটি গৃহীত হয়নি। আগামীকাল আমাদের অবশ্যই একই আশাবাদ নিয়ে একটি নতুন পথ খুঁজতে হবে।’ 

আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ান মন্ত্রী লিন্ডা বার্নি যখন প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন তিনি চোখের পানি লুকোতে পারেননি। বার্নি স্বীকার করেছেন, সাম্প্রতিক মাসগুলো আদিবাসী এবং টরেস স্ট্রেইট দ্বীপবাসীদের জন্য কঠিন ছিল। 

আদিবাসী এবং টরেস স্ট্রেইট দ্বীপবাসীদের উদ্দেশে বার্নি বলেন, ‘আপনি কে তা নিয়ে গর্বিত হন। আপনার পরিচয়ে গর্বিত হোন। আপনি যে ৬৫ হাজার বছরের ইতিহাস এবং সংস্কৃতির অংশ এবং এই দেশে আপনার সঠিক জায়গা নিয়ে গর্বিত হন। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাব এবং আমরা এগিয়ে যাব এবং আমরা উন্নতি করব।’ 

উপপ্রধানমন্ত্রী রিচার্ড মার্লেস স্বীকার করেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় গণভোট জেতা খুব কঠিন ছিল। কিন্তু যেহেতু কিছু কঠিন, তার মানে এই নয় যে আমরা চেষ্টা করি না। এটা হতাশাজনক। কিন্তু একই নিশ্বাসে আমরা এই ফলাফলকে অত্যন্ত সম্মান করি এবং বুঝতে পারি অস্ট্রেলিয়ানরা সংবিধান পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দিচ্ছে না।’ 

গণভোটে ‘না’ ভোট প্রচারণার নেতা ওয়ারেন মুন্ডাইন বলেছেন, তারা বিজয় উদ্‌যাপনের পরিকল্পনা করছে না।

ওয়ারেন বলেন, ‘নিশ্চয়ই লোকেরা খুশি। কারণ, তারা প্রচারে সত্যিই কঠোর পরিশ্রম করেছেন। কিন্তু আমাদের জন্য এটা আগামীকাল। আমরা আগামীকালের দিকে মনোনিবেশ করছি। আমাদের সেই অস্ট্রেলিয়ানদের কাছে পৌঁছাতে হবে যারা আমাদের পক্ষে ভোট দেয়নি।’ 

বিরোধী দলের নেতা পিটার ডাটন বলেছেন, ‘না ভোট বিজয়ী হওয়ায় দেশের জন্য ভালো হয়েছে। আদিবাসী ভয়েসের নামে দেশকে বিভক্ত করার প্রয়াসকে ভোটাররা নস্যাৎ করে দিয়েছেন। এখন আমাদের তাদের কাছে যেতে হবে যারা হ্যাঁ ভোট দিয়েছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কাও ঢাকায় এসিসির সভা বর্জন করল

মুক্তি পেয়ে আ.লীগ নেতার ভিডিও বার্তা, বেআইনি বলল বিএনপি

গাড়ি কেনার টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীকে মারধর, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে মামলা

সালাহউদ্দিনকে নিয়ে বিষোদ্‌গার: চকরিয়ায় এনসিপির পথসভার মঞ্চে বিএনপির হামলা-ভাঙচুর

যুদ্ধবিমানের ২৫০ ইঞ্জিন কিনছে ভারত, ফ্রান্সের সঙ্গে ৬১ হাজার কোটি রুপির চুক্তি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত