Ajker Patrika

অস্ট্রেলিয়া থেকে ইউটিউব তারকা পরিচয়ে বিশ্বজুড়ে যৌনতার ফাঁদ ছিল রশিদের

আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২৪, ১৮: ২৯
অস্ট্রেলিয়া থেকে ইউটিউব তারকা পরিচয়ে বিশ্বজুড়ে যৌনতার ফাঁদ ছিল রশিদের

নিজেকে তারকা ইউটিউবার হিসেবে জাহির করে বিভিন্ন দেশের মেয়েদের সঙ্গে যুক্ত হতেন মুহাম্মদ জৈন উল আবেদিন রশিদ। পরে ওই মেয়েদের ব্ল্যাকমেল করতেন তিনি। এভাবে শত শত মেয়েকে ব্ল্যাকমেল করে ক্যামেরার সামনে যৌন কার্যকলাপে বাধ্য করানোর অভিযোগে রশিদকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার একটি আদালত। 

আজ বুধবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ফ্রান্সসহ ২০ দেশের অন্তত ২৮৬ জন মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত ১১৯টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন রশিদ। তাঁর শিকারে পরিণত হওয়া মেয়েদের দুই-তৃতীয়াংশেরই বয়স ১৬ বছরের কম। 

রশিদের বিচার করা অস্ট্রেলিয়ার পার্থের ওই আদালতে বলা হয়েছে, ২৯ বছর বয়সী রশিদ মেয়েদের সঙ্গে আদান-প্রদান করা বার্তা ও ছবি তাঁদের প্রিয়জনদের কাছে পাঠানোর হুমকি দিতেন। এভাবে তিনি মেয়েদের নিজের কথামতো ক্যামেরার সামনে যৌন কার্যকলাপ করতে বাধ্য করতেন। 

পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত জৈন উল আবেদিন রশিদের এই মামলাটিকে ইতিহাসের ‘সবচেয়ে নিকৃষ্ট যৌন নির্যাতনের ঘটনা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ান আদালত। অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পুলিশের সহকারী কমিশনার ডেভিড ম্যাকলিন বলেছেন, ‘এই লোকটি বিশ্বজুড়ে তার শিকারদের প্রতি যে নির্মম অবহেলা করেছে এবং তাদের কষ্ট, অপমান এবং ভয় এটিকে অস্ট্রেলিয়ায় বিচার করা সবচেয়ে ভয়ংকর যৌন নির্যাতনের মামলাগুলোর মধ্যে একটি করে তুলেছে।’ 

ম্যাকলিন মনে করেন, এই ধরনের অনলাইন নিপীড়ন মানুষের মাঝে আজীবনের জন্য ট্রমা সৃষ্টি করে। 

অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের তথ্যানুসারে, মঙ্গলবার সাজা ঘোষণার সময় বিচারক আমান্ডা বারোজ বলেছিলেন, ‘রশিদের অপরাধ এত বেশি মাত্রার যে দেশে এর তুলনাযোগ্য আর কোনো মামলা নেই।’ 

জানা গেছে, রশিদ মেয়েদের কাছে নিজেকে একজন ১৫ বছর বয়সী আমেরিকান ইন্টারনেট তারকা হিসেবে জাহির করতেন। প্রথমে ভালো ভালো কথা দিয়ে যোগাযোগ শুরু হতো। পরে তিনি ধীরে ধীরে যৌনবিষয়ক কথোপকথন শুরু করতেন। এসব কথোপকথন এবং আদান-প্রদান করা ছবি ও ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেল করে মেয়েদের যৌন কার্যকলাপ করার জন্য তিনি চাপ দিতেন। মেয়েদের যৌন কার্যকলাপে বাড়ির পোষা প্রাণী থেকে শুরু করে অন্য শিশুদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হতো। 

আদালত জানতে পেরেছেন, রশিদ অনলাইনে ‘ইনসেল’ নামে নারী বিদ্বেষী একটি গ্রুপের সঙ্গেও জড়িত। তাঁর কথামতো ক্যামেরার সামনে মেয়েদের যৌন কার্যকলাপ লাইভস্ট্রিম করে অন্যদেরও দেখার সুযোগ করে দিতেন তিনি। 

রশিদের ফাঁদে পড়া অনেকেই আত্মহত্যা প্রবণ হলেও রশিদ তাঁদের কষ্ট দেওয়া এবং ভয় দেখানো অব্যাহত রেখেছেন। 

বিবিসি জানিয়েছে, ইন্টারপোল এবং মার্কিন তদন্তকারীদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে রশিদকে ২০২০ সালে গ্রেপ্তার করেছিল অস্ট্রেলিয়ান কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই তিনি পার্থের একটি পার্কে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে নিজের গাড়িতে দুবার যৌন নির্যাতনের জন্য পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। আদালতের সর্বশেষ রায় অনুযায়ী, ২০৩৩ সালের পর প্যারোলের জন্য আবেদন করতে পারবেন রশিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত