Ajker Patrika

মানুষের তারুণ্য ধরে রাখতে জীবন যায় লাখো গাধার

আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯: ৩৮
মানুষের তারুণ্য ধরে রাখতে জীবন যায় লাখো গাধার

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এখনো ভার বহনসহ নানা কাজের জন্য গাধার ব্যবহার আছে। বিশেষ করে আফ্রিকার দেশগুলোতে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরেই আফ্রিকা তো বটেই বিশ্বের অনেক দেশেই গাধা চুরি ও হত্যার হার বেড়ে গেছে। উদ্দেশ্য একটাই—মানুষের জন্য বিভিন্ন ওষুধ বা চিকিৎসা সামগ্রীসহ নানা পণ্য তৈরি। 

গাধার চামড়া থেকে যে ওষুধ তৈরি করা যায়, তার সূত্রপাত কিন্তু গাধাবহুল মহাদেশ আফ্রিকায় নয়। বরং সেখান থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরের চীনে। মূলত চীনে গাধার চামড়া থেকে এক বিশেষ ধরনের জেলাটিন নিষ্কাশন করা হয় যেটিকে এজিয়াও নামে ডাকা নয়। ধারণা করা হয়, এই জেলাটিন মানুষের যৌবন বা তারুণ্য ধরে রাখে, ত্বক সুস্থ-সুন্দর রাখে। চীনে এই বিষয়টির প্রচলন বহু পুরোনো। 

সাধারণত, গাধাকে হত্যার পর সেটির চামড়া ছাড়িয়ে নিয়ে ফুটন্ত পানিতে সেদ্ধ করা হয় এবং এক বিশেষ পদ্ধতিতে জেলাটিন নিষ্কাশন করা হয়। পরে নিষ্কাশিত তরল জেলাটিনকে গুঁড়া বা পাউডারে পরিণত করা হয়। এরপর সেগুলোকে বিভিন্ন পিল বা তরল আকারে বিভিন্ন খাদ্যের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া হয়। 

গাধা সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা অলাভজনক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ডানকি স্যাংকচুয়ারির হিসাব অনুসারে, ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিশ্বে প্রতিবছর গড়ে মোট ৫৯ লাখ গাধা হত্যা করা হয়েছে। সংগঠনটির দাবি, প্রতিবছর জেলাটিনের জন্য গাধার চামড়ার চাহিদা বেড়েই চলেছে। 

বর্তমান বিশ্বে প্রায় ৫ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি গাধা আছে বলে অনুমান করা হয়। এর দুই-তৃতীয়াংশই আফ্রিকার দেশগুলোতে। মহাদেশটির কিছু দেশে গাধা শিকার বৈধ এবং কিছু দেশে অবৈধ। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে গাধার চামড়ার চাহিদা বেশি থাকায় মহাদেশটিতে অবৈধভাবে গাধা শিকার বেড়েই চলেছে। 

ডানকি স্যাংকচুয়ারির কর্মকর্তা সলোমন ওনইয়াঙ্গো বলেন, ‘২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে কেনিয়ায় যত গাধা ছিল তার অর্ধেকই হত্যা করা হয়েছে কিংবা দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছে স্রেফ চামড়ার ব্যবসায় বজায় রাখার জন্য।’ এই অবস্থায় কেনিয়াসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশ এবং ব্রাজিল গাধা হত্যা ও রপ্তানি নিষিদ্ধ করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। 

এই সমস্যা কেবল আফ্রিকার দেশগুলোতেই নয়, চীনেও প্রকট। দেশটির কৃষি ও গ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুসারে, ১৯৯০ সালে চীনে ১ কোটি ১০ লাখেরও বেশি গাধা ছিল। কিন্তু ২০২১ সালে তা নেমে এসেছে মাত্র ২০ লাখে। এর একটাই কারণ, এক সময় বিলাসদ্রব্য হিসেবে বিবেচিত এই এজিয়াও এখন ব্যাপক চাহিদাসম্পন্ন ওষুধ। 

কতটা চাহিদাসম্পন্ন তার একটা চিত্র পাওয়া যাওয়া আফ্রিকা-চীন সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ও অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সিডনির অধ্যাপক লরেন জনস্টনের হিসাব থেকে। তাঁর মতে, ২০১৩ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে চীনে এজিয়াওয়ের চাহিদা বেড়েছে ৩২০ কোটি ডলারের সমান। 

তথ্যসূত্র: বিবিসি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...