
গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস নিয়ে ক্যাঁচাল নতুন নয়। এর প্রধান কারণ এ নিয়ে দেশে কোনো আইন নেই। এ ছাড়া সারা বছর যানজটে মানুষের এত কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পরও গণপরিবহন কখনো শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে। আবার শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গণপরিবহনের বদলে আলাদা পরিবহন ব্যবস্থাও আছে যুক্তরাজ্যের মতো কিছু দেশে। এ ক্ষেত্রে সরকারই এই পরিবহনের ব্যবস্থা করে, অথবা স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে পরিবহন রাখে অথবা স্থানীয় কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্পনসর করে।
ইদানীংকালে অবশ্য শিক্ষার্থীদের হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেমন, ব্রিটেনে শিক্ষার্থীকে তার বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় এবং হেঁটে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হয়।
শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহন ব্যবস্থাটি দেশ ভেদে বিভিন্ন রকমের। যেমন:
সাধারণ গণপরিবহন
পাবলিক ট্রান্সপোর্ট (সরকারি পরিবহন) ব্যবহার করা কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য খুবই সাধারণ মাধ্যম। অস্ট্রেলিয়ার মতো কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ রুট এবং সময়সূচি রয়েছে। এ সময়টা একচেটিয়াভাবে রুটগুলো শুধু শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে। তবে এখনো পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পরিষেবা নিতে হয় তাদের। কখনো অভিভাবক বা শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনের টিকিট কেনার সময় টাকা ফেরত পান।
স্কুল বাস
দেশ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পরিবহনে বিশেষভাবে ডিজাইন করা স্কুল বাস ব্যবহার করা হয়। কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কাউন্টিতে বিশেষভাবে নির্মিত এবং সজ্জিত স্কুল বাস ব্যবহার করে। হলুদ রং করা বা বিভিন্ন ধরনের সতর্কবার্তা এবং সুরক্ষা ডিভাইস দিয়ে সজ্জিত থাকে এসব বাস। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে স্কুল বাসগুলো উত্তর আমেরিকার দেশগুলোর মতো অতটা বিশেষ নয়। এগুলো প্রায় সাধারণ বাসের মতোই হয়।
ব্যক্তিগত গাড়ি
অনেক দেশে পরিবারের প্রাইভেট কারে করে শিক্ষার্থীরা আসা-যাওয়া করে। অভিভাবকেরাই এ কাজটি করেন। তবে গণপরিবহন বা স্কুল বাসের তুলনায় এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি থাকে। কিছু দেশে শিক্ষার্থীরা গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়। বেশির ভাগ দেশে গাড়ি চালানোর ন্যূনতম বয়স ১৭ বা ১৮। অবশ্য কসোভোতে ১৪ বছর বয়সেই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়।
হাঁটা
‘ওয়াক টু স্কুল’ ক্যাম্পেইন ইদানীং জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের দল বেঁধে স্কুলে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়। এর জন্য আলাদা রুট বা লেন থাকতে পারে।
সাইক্লিং
ইউরোপের অনেক দেশে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়া বেশ জনপ্রিয়। স্কুলগুলোতে বিশাল বাইক শেড দেখলেই সেটি বোঝা যায়। বাইসাইকেল বা প্যাডেল স্কুটারের মতো মানবচালিত যানবাহনে শিক্ষার্থীরা বড়দের তত্ত্বাবধানে দল বেঁধে যাতায়াত করে থাকে।
শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কিছু জরিপ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সড়ক নিরাপত্তা পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে ১৯৯৪ সালের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে,
বাসে যাতায়াত করলে-
পারিবারিক গাড়িতে যাতায়াতের চেয়ে গুরুতর আঘাত বা মৃত্যুর আশঙ্কা সাত গুণ কম; হাঁটার চেয়ে একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ৩১ গুণ কম; সাইকেল চালানোর তুলনায় ২২৮ গুণ কম ঝুঁকি থাকে।
ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের (যুক্তরাষ্ট্র) কর্মকর্তারা বলছেন, সিট বেল্ট না লাগানো থাকলেও স্কুল বাসগুলো অন্যান্য গাড়ির চেয়ে বেশি নিরাপদ।
বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা-
আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হয় হেঁটে স্কুলে যায়, নয়তো অভিভাবকের সঙ্গে অথবা নিয়মিত পাবলিক ট্রানজিটে যাতায়াত করে। অনেকে প্রতিটি শহরে সরকার নির্ধারিত বেসরকারি বাসে যাতায়াত করে। এসব বাস সাধারণত সাদা বা কমলা রঙের হয়। অভিভাবকেরা ওই বেসরকারি ভ্যান মালিককে মাসিক একটা ফি দেন। ভ্যানগুলোর সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পর্ক নেই। সাধারণত একই রুটে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের বহন করে তারা।
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ায় শহরতলির বাইরের বা গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী শিক্ষার্থীরা সাধারণত পাবলিক বাস এবং ট্রেন বা বেসরকারি বাস কোম্পানির বিশেষ রুটে যাতায়াত করে। শহরের অভ্যন্তরীণ এলাকার স্কুলছাত্ররা সরকারি মালিকানাধীন রুটের বাসে যাতায়াত করে। ছাত্ররা হয় একটি পাবলিক রুটের বাসে, অথবা একটি ‘স্কুল স্পেশাল’ পরিষেবাতে নেয়। কিছু বেসরকারি স্কুলের নিজস্ব বাস আছে। সাধারণত কোনো স্পনসর না পেলে স্কুল থেকেই এই সেবা দেওয়া হয়।
নিউ সাউথ ওয়েলসে স্কুল বাস পরিবহনকে ট্রেনের পরেই স্থল পরিবহনের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ বলে ধরা হয়। কিন্ডারগার্টেন-২ গ্রেডের শিক্ষার্থীরা যেখানেই থাকুক না কেন বিনা মূল্যে যাতায়াতের সুবিধা পায়। এরপর ৩-৬ বছরের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার দূরে থাকে। উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ২ কিলোমিটার দূরে থাকে।
কানাডা
কানাডার শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের মতোই। এখানেও তাদের জন্য রয়েছে হলুদ স্কুল বাস। কানাডীয় স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী পরিবহন পরিষেবার জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত করে। এর জন্য অভিভাবকদের কোনো পয়সা দিতে হয় না। এখানে স্কুলবাসগুলো দেখতে একই রকম এবং সাধারণত একই কোম্পানির তৈরি।
ফিনল্যান্ড
ফিনল্যান্ডে যে সমস্ত শিক্ষার্থী নিকটতম স্কুল থেকে ৫ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে থাকে বা কোনো প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তারা বিনা ভাড়ায় বাস বা ট্যাক্সিতে যাতায়াত করতে পারে। এসব বাস এবং ট্যাক্সিগুলো সাধারণ পরিবহন হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। সাধারণত স্থানীয় কোম্পানি এই পরিবহন পরিচালনা করে। যে বাসগুলো শুধু স্কুল বাসের জন্য সংরক্ষিত সেগুলোর সামনে এবং পেছনে ‘Koulukyyti/Skolskjuts’ চিহ্ন দেওয়া থাকে। শিক্ষার্থী পরিবহনে নিয়োজিত ট্যাক্সিগুলোর ছাদে একটি ত্রিভুজাকার চিহ্ন থাকে। এসব বাসের গতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
জার্মানি
কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া জার্মানিতে কোনো বিশেষ স্কুল বাস নেই। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সময়সূচি প্রায়শই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রয়োজনের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়। কিছু জার্মান রাজ্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট টিকিটের জন্য অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা রেখেছে।
হংকং
হংকংয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে স্কুলে আনা নেওয়ার জন্য পরিবহন আছে। প্রতিটি পরিবহনে একজন আয়া থাকেন। সরকার-নিয়ন্ত্রিত যানবাহন এই পরিবহনগুলো নির্দিষ্ট রুটে চলে।
নেদারল্যান্ডস
নেদারল্যান্ডসে, বৃহৎ পরিসরে ছাত্র পরিবহনের কোনো সংগঠিত রূপ নেই। শিশুকালে অভিভাবক আর হাইস্কুলে নিজেই বাইক চালিয়ে স্কুলে যায়। তবে কলেজে পড়ার সময় বিনা ভাড়ায় গণপরিবহনে যাতায়াত করতে পারে।
নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডে ঠিকাদার বা সাধারণ বাস কোম্পানির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিবহন ব্যবস্থা করা হয়। স্কুল পরিষেবার জন্য বাস কোম্পানিগুলোতে সাধারণত পুরোনো ট্রানজিট বাস বা কোচের বহর থাকে। সেগুলো বিভিন্ন সংকেত দিয়ে চিহ্নিত করা থাকে। গতি সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার।
এ দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (৫-১২ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (১৩ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাস করলে পরিবহন পরিষেবা দেওয়া হয় না। এ দেশে বিনা ভাড়ার স্কুল বাস পরিষেবা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে।
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পরিবহন সাধারণ ট্রানজিট বাসের ওপর নির্ভরশীল। এই বাসগুলো স্কুলে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার না করলে অন্য কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশির ভাগ শিশু স্থানীয় নির্ধারিত গণপরিবহন পরিষেবা ব্যবহার করে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই যুক্তরাজ্যে ডেডিকেটেড স্কুল পরিবহন পরিষেবা স্থানীয় বাস কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে দেওয়া হয়।
লন্ডন
গ্রেটার লন্ডনে অনেক স্কুল শিশু সাধারণ বাস পরিষেবা ব্যবহার করে স্কুলে যাতায়াত করে। অয়েস্টার কার্ড সিস্টেম ব্যবহার করে তারা বিনা মূল্যে ভ্রমণ করতে পারে।
তবে ইদানীং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। ফলে ক্রমেই শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা করার দাবি জোরদার হচ্ছে। উত্তর আমেরিকার স্টাইলের ‘হলুদ’ স্কুল বাস ‘ফার্স্ট স্টুডেন্ট ইউকে’ এবং ‘মাই বাস’ পরিষেবা চালু করা হচ্ছে।
হাঁটার পক্ষেও ব্যাপক প্রচারাভিযান চলছে। দাতব্য সংস্থা ‘লিভিং স্ট্রিটস’ এবং ‘ট্রাভেলওয়াইজ’ এই ক্যাম্পেইন জনপ্রিয় করার পেছনে মুখ্য ভূমিকা রাখছে।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে ‘স্কুল বাস’ তৈরি করা হয়। প্রায় সব সময় বিনা ভাড়ায় শিক্ষার্থীদের এসব বাসে পরিবহন করা হয়। অভিভাবকদেরও এর জন্য কোনো ফি দিতে হয় না। নিকটতম স্থানীয় স্কুল ছাড়া সব স্কুলে শিক্ষার্থীরাই এই সুবিধা পায়।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর বিশেষ স্কুল বাসগুলোতে প্রায় ১ হাজার কোটি শিক্ষার্থী ভ্রমণ করে। স্কুল বাসগুলো কিছু স্কুল প্রশাসন কেনে অথবা ইজারা নেয়। কিছু প্রশাসন আবার ঠিকাদারদের মাধ্যমে এই পরিষেবা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের শহরাঞ্চলে সাধারণ পাবলিক ট্রানজিট বাসের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। নিউইয়র্ক সিটি গ্রেড লেভেল এবং স্কুল থেকে দূরত্বের ওপর ভিত্তি করে ছাত্রদের ‘হলুদ’ স্কুল বাস পরিষেবা দেয়। তবে যেখানে ডেডিকেটেড স্কুল বাস পরিষেবা নেই সেখানে গ্রেড ৭-১২ এবং আরও কম বয়সী শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য পাবলিক নিউইয়র্ক সিটি ট্রানজিট বাস সিস্টেমের ওপর নির্ভর করে কর্তৃপক্ষ। এই উদ্দেশ্যে স্কুল প্রশাসন বিনা মূল্যে বা অর্ধেক মূল্যে ট্রানজিট পাস দেয়।
কিছু পাবলিক ট্রানজিট পরিষেবা স্থানীয় স্কুলগুলোতে পরিষেবা দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা রুটগুলো ব্যবহার করে। এ ধরনের রুট নির্ধারিত সময়ে শুধু স্কুল পরিবহনের জন্যই ব্যবহার করা হয়। অবশ্য ১৬ বছরের বেশি বয়সী অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিজেই গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়।

গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস নিয়ে ক্যাঁচাল নতুন নয়। এর প্রধান কারণ এ নিয়ে দেশে কোনো আইন নেই। এ ছাড়া সারা বছর যানজটে মানুষের এত কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পরও গণপরিবহন কখনো শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে। আবার শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গণপরিবহনের বদলে আলাদা পরিবহন ব্যবস্থাও আছে যুক্তরাজ্যের মতো কিছু দেশে। এ ক্ষেত্রে সরকারই এই পরিবহনের ব্যবস্থা করে, অথবা স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে পরিবহন রাখে অথবা স্থানীয় কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্পনসর করে।
ইদানীংকালে অবশ্য শিক্ষার্থীদের হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেমন, ব্রিটেনে শিক্ষার্থীকে তার বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় এবং হেঁটে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হয়।
শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহন ব্যবস্থাটি দেশ ভেদে বিভিন্ন রকমের। যেমন:
সাধারণ গণপরিবহন
পাবলিক ট্রান্সপোর্ট (সরকারি পরিবহন) ব্যবহার করা কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য খুবই সাধারণ মাধ্যম। অস্ট্রেলিয়ার মতো কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ রুট এবং সময়সূচি রয়েছে। এ সময়টা একচেটিয়াভাবে রুটগুলো শুধু শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে। তবে এখনো পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পরিষেবা নিতে হয় তাদের। কখনো অভিভাবক বা শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনের টিকিট কেনার সময় টাকা ফেরত পান।
স্কুল বাস
দেশ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পরিবহনে বিশেষভাবে ডিজাইন করা স্কুল বাস ব্যবহার করা হয়। কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কাউন্টিতে বিশেষভাবে নির্মিত এবং সজ্জিত স্কুল বাস ব্যবহার করে। হলুদ রং করা বা বিভিন্ন ধরনের সতর্কবার্তা এবং সুরক্ষা ডিভাইস দিয়ে সজ্জিত থাকে এসব বাস। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে স্কুল বাসগুলো উত্তর আমেরিকার দেশগুলোর মতো অতটা বিশেষ নয়। এগুলো প্রায় সাধারণ বাসের মতোই হয়।
ব্যক্তিগত গাড়ি
অনেক দেশে পরিবারের প্রাইভেট কারে করে শিক্ষার্থীরা আসা-যাওয়া করে। অভিভাবকেরাই এ কাজটি করেন। তবে গণপরিবহন বা স্কুল বাসের তুলনায় এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি থাকে। কিছু দেশে শিক্ষার্থীরা গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়। বেশির ভাগ দেশে গাড়ি চালানোর ন্যূনতম বয়স ১৭ বা ১৮। অবশ্য কসোভোতে ১৪ বছর বয়সেই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়।
হাঁটা
‘ওয়াক টু স্কুল’ ক্যাম্পেইন ইদানীং জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের দল বেঁধে স্কুলে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়। এর জন্য আলাদা রুট বা লেন থাকতে পারে।
সাইক্লিং
ইউরোপের অনেক দেশে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়া বেশ জনপ্রিয়। স্কুলগুলোতে বিশাল বাইক শেড দেখলেই সেটি বোঝা যায়। বাইসাইকেল বা প্যাডেল স্কুটারের মতো মানবচালিত যানবাহনে শিক্ষার্থীরা বড়দের তত্ত্বাবধানে দল বেঁধে যাতায়াত করে থাকে।
শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কিছু জরিপ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সড়ক নিরাপত্তা পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে ১৯৯৪ সালের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে,
বাসে যাতায়াত করলে-
পারিবারিক গাড়িতে যাতায়াতের চেয়ে গুরুতর আঘাত বা মৃত্যুর আশঙ্কা সাত গুণ কম; হাঁটার চেয়ে একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ৩১ গুণ কম; সাইকেল চালানোর তুলনায় ২২৮ গুণ কম ঝুঁকি থাকে।
ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের (যুক্তরাষ্ট্র) কর্মকর্তারা বলছেন, সিট বেল্ট না লাগানো থাকলেও স্কুল বাসগুলো অন্যান্য গাড়ির চেয়ে বেশি নিরাপদ।
বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা-
আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হয় হেঁটে স্কুলে যায়, নয়তো অভিভাবকের সঙ্গে অথবা নিয়মিত পাবলিক ট্রানজিটে যাতায়াত করে। অনেকে প্রতিটি শহরে সরকার নির্ধারিত বেসরকারি বাসে যাতায়াত করে। এসব বাস সাধারণত সাদা বা কমলা রঙের হয়। অভিভাবকেরা ওই বেসরকারি ভ্যান মালিককে মাসিক একটা ফি দেন। ভ্যানগুলোর সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পর্ক নেই। সাধারণত একই রুটে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের বহন করে তারা।
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ায় শহরতলির বাইরের বা গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী শিক্ষার্থীরা সাধারণত পাবলিক বাস এবং ট্রেন বা বেসরকারি বাস কোম্পানির বিশেষ রুটে যাতায়াত করে। শহরের অভ্যন্তরীণ এলাকার স্কুলছাত্ররা সরকারি মালিকানাধীন রুটের বাসে যাতায়াত করে। ছাত্ররা হয় একটি পাবলিক রুটের বাসে, অথবা একটি ‘স্কুল স্পেশাল’ পরিষেবাতে নেয়। কিছু বেসরকারি স্কুলের নিজস্ব বাস আছে। সাধারণত কোনো স্পনসর না পেলে স্কুল থেকেই এই সেবা দেওয়া হয়।
নিউ সাউথ ওয়েলসে স্কুল বাস পরিবহনকে ট্রেনের পরেই স্থল পরিবহনের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ বলে ধরা হয়। কিন্ডারগার্টেন-২ গ্রেডের শিক্ষার্থীরা যেখানেই থাকুক না কেন বিনা মূল্যে যাতায়াতের সুবিধা পায়। এরপর ৩-৬ বছরের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার দূরে থাকে। উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ২ কিলোমিটার দূরে থাকে।
কানাডা
কানাডার শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের মতোই। এখানেও তাদের জন্য রয়েছে হলুদ স্কুল বাস। কানাডীয় স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী পরিবহন পরিষেবার জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত করে। এর জন্য অভিভাবকদের কোনো পয়সা দিতে হয় না। এখানে স্কুলবাসগুলো দেখতে একই রকম এবং সাধারণত একই কোম্পানির তৈরি।
ফিনল্যান্ড
ফিনল্যান্ডে যে সমস্ত শিক্ষার্থী নিকটতম স্কুল থেকে ৫ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে থাকে বা কোনো প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তারা বিনা ভাড়ায় বাস বা ট্যাক্সিতে যাতায়াত করতে পারে। এসব বাস এবং ট্যাক্সিগুলো সাধারণ পরিবহন হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। সাধারণত স্থানীয় কোম্পানি এই পরিবহন পরিচালনা করে। যে বাসগুলো শুধু স্কুল বাসের জন্য সংরক্ষিত সেগুলোর সামনে এবং পেছনে ‘Koulukyyti/Skolskjuts’ চিহ্ন দেওয়া থাকে। শিক্ষার্থী পরিবহনে নিয়োজিত ট্যাক্সিগুলোর ছাদে একটি ত্রিভুজাকার চিহ্ন থাকে। এসব বাসের গতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
জার্মানি
কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া জার্মানিতে কোনো বিশেষ স্কুল বাস নেই। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সময়সূচি প্রায়শই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রয়োজনের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়। কিছু জার্মান রাজ্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট টিকিটের জন্য অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা রেখেছে।
হংকং
হংকংয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে স্কুলে আনা নেওয়ার জন্য পরিবহন আছে। প্রতিটি পরিবহনে একজন আয়া থাকেন। সরকার-নিয়ন্ত্রিত যানবাহন এই পরিবহনগুলো নির্দিষ্ট রুটে চলে।
নেদারল্যান্ডস
নেদারল্যান্ডসে, বৃহৎ পরিসরে ছাত্র পরিবহনের কোনো সংগঠিত রূপ নেই। শিশুকালে অভিভাবক আর হাইস্কুলে নিজেই বাইক চালিয়ে স্কুলে যায়। তবে কলেজে পড়ার সময় বিনা ভাড়ায় গণপরিবহনে যাতায়াত করতে পারে।
নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডে ঠিকাদার বা সাধারণ বাস কোম্পানির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিবহন ব্যবস্থা করা হয়। স্কুল পরিষেবার জন্য বাস কোম্পানিগুলোতে সাধারণত পুরোনো ট্রানজিট বাস বা কোচের বহর থাকে। সেগুলো বিভিন্ন সংকেত দিয়ে চিহ্নিত করা থাকে। গতি সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার।
এ দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (৫-১২ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (১৩ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাস করলে পরিবহন পরিষেবা দেওয়া হয় না। এ দেশে বিনা ভাড়ার স্কুল বাস পরিষেবা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে।
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পরিবহন সাধারণ ট্রানজিট বাসের ওপর নির্ভরশীল। এই বাসগুলো স্কুলে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার না করলে অন্য কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশির ভাগ শিশু স্থানীয় নির্ধারিত গণপরিবহন পরিষেবা ব্যবহার করে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই যুক্তরাজ্যে ডেডিকেটেড স্কুল পরিবহন পরিষেবা স্থানীয় বাস কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে দেওয়া হয়।
লন্ডন
গ্রেটার লন্ডনে অনেক স্কুল শিশু সাধারণ বাস পরিষেবা ব্যবহার করে স্কুলে যাতায়াত করে। অয়েস্টার কার্ড সিস্টেম ব্যবহার করে তারা বিনা মূল্যে ভ্রমণ করতে পারে।
তবে ইদানীং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। ফলে ক্রমেই শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা করার দাবি জোরদার হচ্ছে। উত্তর আমেরিকার স্টাইলের ‘হলুদ’ স্কুল বাস ‘ফার্স্ট স্টুডেন্ট ইউকে’ এবং ‘মাই বাস’ পরিষেবা চালু করা হচ্ছে।
হাঁটার পক্ষেও ব্যাপক প্রচারাভিযান চলছে। দাতব্য সংস্থা ‘লিভিং স্ট্রিটস’ এবং ‘ট্রাভেলওয়াইজ’ এই ক্যাম্পেইন জনপ্রিয় করার পেছনে মুখ্য ভূমিকা রাখছে।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে ‘স্কুল বাস’ তৈরি করা হয়। প্রায় সব সময় বিনা ভাড়ায় শিক্ষার্থীদের এসব বাসে পরিবহন করা হয়। অভিভাবকদেরও এর জন্য কোনো ফি দিতে হয় না। নিকটতম স্থানীয় স্কুল ছাড়া সব স্কুলে শিক্ষার্থীরাই এই সুবিধা পায়।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর বিশেষ স্কুল বাসগুলোতে প্রায় ১ হাজার কোটি শিক্ষার্থী ভ্রমণ করে। স্কুল বাসগুলো কিছু স্কুল প্রশাসন কেনে অথবা ইজারা নেয়। কিছু প্রশাসন আবার ঠিকাদারদের মাধ্যমে এই পরিষেবা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের শহরাঞ্চলে সাধারণ পাবলিক ট্রানজিট বাসের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। নিউইয়র্ক সিটি গ্রেড লেভেল এবং স্কুল থেকে দূরত্বের ওপর ভিত্তি করে ছাত্রদের ‘হলুদ’ স্কুল বাস পরিষেবা দেয়। তবে যেখানে ডেডিকেটেড স্কুল বাস পরিষেবা নেই সেখানে গ্রেড ৭-১২ এবং আরও কম বয়সী শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য পাবলিক নিউইয়র্ক সিটি ট্রানজিট বাস সিস্টেমের ওপর নির্ভর করে কর্তৃপক্ষ। এই উদ্দেশ্যে স্কুল প্রশাসন বিনা মূল্যে বা অর্ধেক মূল্যে ট্রানজিট পাস দেয়।
কিছু পাবলিক ট্রানজিট পরিষেবা স্থানীয় স্কুলগুলোতে পরিষেবা দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা রুটগুলো ব্যবহার করে। এ ধরনের রুট নির্ধারিত সময়ে শুধু স্কুল পরিবহনের জন্যই ব্যবহার করা হয়। অবশ্য ১৬ বছরের বেশি বয়সী অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিজেই গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়।

গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস নিয়ে ক্যাঁচাল নতুন নয়। এর প্রধান কারণ এ নিয়ে দেশে কোনো আইন নেই। এ ছাড়া সারা বছর যানজটে মানুষের এত কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পরও গণপরিবহন কখনো শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে। আবার শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গণপরিবহনের বদলে আলাদা পরিবহন ব্যবস্থাও আছে যুক্তরাজ্যের মতো কিছু দেশে। এ ক্ষেত্রে সরকারই এই পরিবহনের ব্যবস্থা করে, অথবা স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে পরিবহন রাখে অথবা স্থানীয় কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্পনসর করে।
ইদানীংকালে অবশ্য শিক্ষার্থীদের হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেমন, ব্রিটেনে শিক্ষার্থীকে তার বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় এবং হেঁটে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হয়।
শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহন ব্যবস্থাটি দেশ ভেদে বিভিন্ন রকমের। যেমন:
সাধারণ গণপরিবহন
পাবলিক ট্রান্সপোর্ট (সরকারি পরিবহন) ব্যবহার করা কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য খুবই সাধারণ মাধ্যম। অস্ট্রেলিয়ার মতো কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ রুট এবং সময়সূচি রয়েছে। এ সময়টা একচেটিয়াভাবে রুটগুলো শুধু শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে। তবে এখনো পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পরিষেবা নিতে হয় তাদের। কখনো অভিভাবক বা শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনের টিকিট কেনার সময় টাকা ফেরত পান।
স্কুল বাস
দেশ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পরিবহনে বিশেষভাবে ডিজাইন করা স্কুল বাস ব্যবহার করা হয়। কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কাউন্টিতে বিশেষভাবে নির্মিত এবং সজ্জিত স্কুল বাস ব্যবহার করে। হলুদ রং করা বা বিভিন্ন ধরনের সতর্কবার্তা এবং সুরক্ষা ডিভাইস দিয়ে সজ্জিত থাকে এসব বাস। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে স্কুল বাসগুলো উত্তর আমেরিকার দেশগুলোর মতো অতটা বিশেষ নয়। এগুলো প্রায় সাধারণ বাসের মতোই হয়।
ব্যক্তিগত গাড়ি
অনেক দেশে পরিবারের প্রাইভেট কারে করে শিক্ষার্থীরা আসা-যাওয়া করে। অভিভাবকেরাই এ কাজটি করেন। তবে গণপরিবহন বা স্কুল বাসের তুলনায় এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি থাকে। কিছু দেশে শিক্ষার্থীরা গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়। বেশির ভাগ দেশে গাড়ি চালানোর ন্যূনতম বয়স ১৭ বা ১৮। অবশ্য কসোভোতে ১৪ বছর বয়সেই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়।
হাঁটা
‘ওয়াক টু স্কুল’ ক্যাম্পেইন ইদানীং জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের দল বেঁধে স্কুলে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়। এর জন্য আলাদা রুট বা লেন থাকতে পারে।
সাইক্লিং
ইউরোপের অনেক দেশে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়া বেশ জনপ্রিয়। স্কুলগুলোতে বিশাল বাইক শেড দেখলেই সেটি বোঝা যায়। বাইসাইকেল বা প্যাডেল স্কুটারের মতো মানবচালিত যানবাহনে শিক্ষার্থীরা বড়দের তত্ত্বাবধানে দল বেঁধে যাতায়াত করে থাকে।
শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কিছু জরিপ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সড়ক নিরাপত্তা পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে ১৯৯৪ সালের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে,
বাসে যাতায়াত করলে-
পারিবারিক গাড়িতে যাতায়াতের চেয়ে গুরুতর আঘাত বা মৃত্যুর আশঙ্কা সাত গুণ কম; হাঁটার চেয়ে একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ৩১ গুণ কম; সাইকেল চালানোর তুলনায় ২২৮ গুণ কম ঝুঁকি থাকে।
ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের (যুক্তরাষ্ট্র) কর্মকর্তারা বলছেন, সিট বেল্ট না লাগানো থাকলেও স্কুল বাসগুলো অন্যান্য গাড়ির চেয়ে বেশি নিরাপদ।
বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা-
আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হয় হেঁটে স্কুলে যায়, নয়তো অভিভাবকের সঙ্গে অথবা নিয়মিত পাবলিক ট্রানজিটে যাতায়াত করে। অনেকে প্রতিটি শহরে সরকার নির্ধারিত বেসরকারি বাসে যাতায়াত করে। এসব বাস সাধারণত সাদা বা কমলা রঙের হয়। অভিভাবকেরা ওই বেসরকারি ভ্যান মালিককে মাসিক একটা ফি দেন। ভ্যানগুলোর সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পর্ক নেই। সাধারণত একই রুটে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের বহন করে তারা।
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ায় শহরতলির বাইরের বা গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী শিক্ষার্থীরা সাধারণত পাবলিক বাস এবং ট্রেন বা বেসরকারি বাস কোম্পানির বিশেষ রুটে যাতায়াত করে। শহরের অভ্যন্তরীণ এলাকার স্কুলছাত্ররা সরকারি মালিকানাধীন রুটের বাসে যাতায়াত করে। ছাত্ররা হয় একটি পাবলিক রুটের বাসে, অথবা একটি ‘স্কুল স্পেশাল’ পরিষেবাতে নেয়। কিছু বেসরকারি স্কুলের নিজস্ব বাস আছে। সাধারণত কোনো স্পনসর না পেলে স্কুল থেকেই এই সেবা দেওয়া হয়।
নিউ সাউথ ওয়েলসে স্কুল বাস পরিবহনকে ট্রেনের পরেই স্থল পরিবহনের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ বলে ধরা হয়। কিন্ডারগার্টেন-২ গ্রেডের শিক্ষার্থীরা যেখানেই থাকুক না কেন বিনা মূল্যে যাতায়াতের সুবিধা পায়। এরপর ৩-৬ বছরের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার দূরে থাকে। উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ২ কিলোমিটার দূরে থাকে।
কানাডা
কানাডার শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের মতোই। এখানেও তাদের জন্য রয়েছে হলুদ স্কুল বাস। কানাডীয় স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী পরিবহন পরিষেবার জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত করে। এর জন্য অভিভাবকদের কোনো পয়সা দিতে হয় না। এখানে স্কুলবাসগুলো দেখতে একই রকম এবং সাধারণত একই কোম্পানির তৈরি।
ফিনল্যান্ড
ফিনল্যান্ডে যে সমস্ত শিক্ষার্থী নিকটতম স্কুল থেকে ৫ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে থাকে বা কোনো প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তারা বিনা ভাড়ায় বাস বা ট্যাক্সিতে যাতায়াত করতে পারে। এসব বাস এবং ট্যাক্সিগুলো সাধারণ পরিবহন হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। সাধারণত স্থানীয় কোম্পানি এই পরিবহন পরিচালনা করে। যে বাসগুলো শুধু স্কুল বাসের জন্য সংরক্ষিত সেগুলোর সামনে এবং পেছনে ‘Koulukyyti/Skolskjuts’ চিহ্ন দেওয়া থাকে। শিক্ষার্থী পরিবহনে নিয়োজিত ট্যাক্সিগুলোর ছাদে একটি ত্রিভুজাকার চিহ্ন থাকে। এসব বাসের গতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
জার্মানি
কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া জার্মানিতে কোনো বিশেষ স্কুল বাস নেই। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সময়সূচি প্রায়শই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রয়োজনের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়। কিছু জার্মান রাজ্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট টিকিটের জন্য অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা রেখেছে।
হংকং
হংকংয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে স্কুলে আনা নেওয়ার জন্য পরিবহন আছে। প্রতিটি পরিবহনে একজন আয়া থাকেন। সরকার-নিয়ন্ত্রিত যানবাহন এই পরিবহনগুলো নির্দিষ্ট রুটে চলে।
নেদারল্যান্ডস
নেদারল্যান্ডসে, বৃহৎ পরিসরে ছাত্র পরিবহনের কোনো সংগঠিত রূপ নেই। শিশুকালে অভিভাবক আর হাইস্কুলে নিজেই বাইক চালিয়ে স্কুলে যায়। তবে কলেজে পড়ার সময় বিনা ভাড়ায় গণপরিবহনে যাতায়াত করতে পারে।
নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডে ঠিকাদার বা সাধারণ বাস কোম্পানির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিবহন ব্যবস্থা করা হয়। স্কুল পরিষেবার জন্য বাস কোম্পানিগুলোতে সাধারণত পুরোনো ট্রানজিট বাস বা কোচের বহর থাকে। সেগুলো বিভিন্ন সংকেত দিয়ে চিহ্নিত করা থাকে। গতি সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার।
এ দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (৫-১২ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (১৩ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাস করলে পরিবহন পরিষেবা দেওয়া হয় না। এ দেশে বিনা ভাড়ার স্কুল বাস পরিষেবা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে।
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পরিবহন সাধারণ ট্রানজিট বাসের ওপর নির্ভরশীল। এই বাসগুলো স্কুলে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার না করলে অন্য কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশির ভাগ শিশু স্থানীয় নির্ধারিত গণপরিবহন পরিষেবা ব্যবহার করে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই যুক্তরাজ্যে ডেডিকেটেড স্কুল পরিবহন পরিষেবা স্থানীয় বাস কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে দেওয়া হয়।
লন্ডন
গ্রেটার লন্ডনে অনেক স্কুল শিশু সাধারণ বাস পরিষেবা ব্যবহার করে স্কুলে যাতায়াত করে। অয়েস্টার কার্ড সিস্টেম ব্যবহার করে তারা বিনা মূল্যে ভ্রমণ করতে পারে।
তবে ইদানীং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। ফলে ক্রমেই শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা করার দাবি জোরদার হচ্ছে। উত্তর আমেরিকার স্টাইলের ‘হলুদ’ স্কুল বাস ‘ফার্স্ট স্টুডেন্ট ইউকে’ এবং ‘মাই বাস’ পরিষেবা চালু করা হচ্ছে।
হাঁটার পক্ষেও ব্যাপক প্রচারাভিযান চলছে। দাতব্য সংস্থা ‘লিভিং স্ট্রিটস’ এবং ‘ট্রাভেলওয়াইজ’ এই ক্যাম্পেইন জনপ্রিয় করার পেছনে মুখ্য ভূমিকা রাখছে।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে ‘স্কুল বাস’ তৈরি করা হয়। প্রায় সব সময় বিনা ভাড়ায় শিক্ষার্থীদের এসব বাসে পরিবহন করা হয়। অভিভাবকদেরও এর জন্য কোনো ফি দিতে হয় না। নিকটতম স্থানীয় স্কুল ছাড়া সব স্কুলে শিক্ষার্থীরাই এই সুবিধা পায়।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর বিশেষ স্কুল বাসগুলোতে প্রায় ১ হাজার কোটি শিক্ষার্থী ভ্রমণ করে। স্কুল বাসগুলো কিছু স্কুল প্রশাসন কেনে অথবা ইজারা নেয়। কিছু প্রশাসন আবার ঠিকাদারদের মাধ্যমে এই পরিষেবা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের শহরাঞ্চলে সাধারণ পাবলিক ট্রানজিট বাসের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। নিউইয়র্ক সিটি গ্রেড লেভেল এবং স্কুল থেকে দূরত্বের ওপর ভিত্তি করে ছাত্রদের ‘হলুদ’ স্কুল বাস পরিষেবা দেয়। তবে যেখানে ডেডিকেটেড স্কুল বাস পরিষেবা নেই সেখানে গ্রেড ৭-১২ এবং আরও কম বয়সী শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য পাবলিক নিউইয়র্ক সিটি ট্রানজিট বাস সিস্টেমের ওপর নির্ভর করে কর্তৃপক্ষ। এই উদ্দেশ্যে স্কুল প্রশাসন বিনা মূল্যে বা অর্ধেক মূল্যে ট্রানজিট পাস দেয়।
কিছু পাবলিক ট্রানজিট পরিষেবা স্থানীয় স্কুলগুলোতে পরিষেবা দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা রুটগুলো ব্যবহার করে। এ ধরনের রুট নির্ধারিত সময়ে শুধু স্কুল পরিবহনের জন্যই ব্যবহার করা হয়। অবশ্য ১৬ বছরের বেশি বয়সী অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিজেই গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়।

গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস নিয়ে ক্যাঁচাল নতুন নয়। এর প্রধান কারণ এ নিয়ে দেশে কোনো আইন নেই। এ ছাড়া সারা বছর যানজটে মানুষের এত কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পরও গণপরিবহন কখনো শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে। আবার শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গণপরিবহনের বদলে আলাদা পরিবহন ব্যবস্থাও আছে যুক্তরাজ্যের মতো কিছু দেশে। এ ক্ষেত্রে সরকারই এই পরিবহনের ব্যবস্থা করে, অথবা স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে পরিবহন রাখে অথবা স্থানীয় কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্পনসর করে।
ইদানীংকালে অবশ্য শিক্ষার্থীদের হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেমন, ব্রিটেনে শিক্ষার্থীকে তার বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় এবং হেঁটে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হয়।
শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহন ব্যবস্থাটি দেশ ভেদে বিভিন্ন রকমের। যেমন:
সাধারণ গণপরিবহন
পাবলিক ট্রান্সপোর্ট (সরকারি পরিবহন) ব্যবহার করা কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য খুবই সাধারণ মাধ্যম। অস্ট্রেলিয়ার মতো কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ রুট এবং সময়সূচি রয়েছে। এ সময়টা একচেটিয়াভাবে রুটগুলো শুধু শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে। তবে এখনো পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পরিষেবা নিতে হয় তাদের। কখনো অভিভাবক বা শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনের টিকিট কেনার সময় টাকা ফেরত পান।
স্কুল বাস
দেশ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পরিবহনে বিশেষভাবে ডিজাইন করা স্কুল বাস ব্যবহার করা হয়। কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কাউন্টিতে বিশেষভাবে নির্মিত এবং সজ্জিত স্কুল বাস ব্যবহার করে। হলুদ রং করা বা বিভিন্ন ধরনের সতর্কবার্তা এবং সুরক্ষা ডিভাইস দিয়ে সজ্জিত থাকে এসব বাস। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে স্কুল বাসগুলো উত্তর আমেরিকার দেশগুলোর মতো অতটা বিশেষ নয়। এগুলো প্রায় সাধারণ বাসের মতোই হয়।
ব্যক্তিগত গাড়ি
অনেক দেশে পরিবারের প্রাইভেট কারে করে শিক্ষার্থীরা আসা-যাওয়া করে। অভিভাবকেরাই এ কাজটি করেন। তবে গণপরিবহন বা স্কুল বাসের তুলনায় এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি থাকে। কিছু দেশে শিক্ষার্থীরা গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়। বেশির ভাগ দেশে গাড়ি চালানোর ন্যূনতম বয়স ১৭ বা ১৮। অবশ্য কসোভোতে ১৪ বছর বয়সেই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়।
হাঁটা
‘ওয়াক টু স্কুল’ ক্যাম্পেইন ইদানীং জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের দল বেঁধে স্কুলে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়। এর জন্য আলাদা রুট বা লেন থাকতে পারে।
সাইক্লিং
ইউরোপের অনেক দেশে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়া বেশ জনপ্রিয়। স্কুলগুলোতে বিশাল বাইক শেড দেখলেই সেটি বোঝা যায়। বাইসাইকেল বা প্যাডেল স্কুটারের মতো মানবচালিত যানবাহনে শিক্ষার্থীরা বড়দের তত্ত্বাবধানে দল বেঁধে যাতায়াত করে থাকে।
শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কিছু জরিপ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সড়ক নিরাপত্তা পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে ১৯৯৪ সালের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে,
বাসে যাতায়াত করলে-
পারিবারিক গাড়িতে যাতায়াতের চেয়ে গুরুতর আঘাত বা মৃত্যুর আশঙ্কা সাত গুণ কম; হাঁটার চেয়ে একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ৩১ গুণ কম; সাইকেল চালানোর তুলনায় ২২৮ গুণ কম ঝুঁকি থাকে।
ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের (যুক্তরাষ্ট্র) কর্মকর্তারা বলছেন, সিট বেল্ট না লাগানো থাকলেও স্কুল বাসগুলো অন্যান্য গাড়ির চেয়ে বেশি নিরাপদ।
বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা-
আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হয় হেঁটে স্কুলে যায়, নয়তো অভিভাবকের সঙ্গে অথবা নিয়মিত পাবলিক ট্রানজিটে যাতায়াত করে। অনেকে প্রতিটি শহরে সরকার নির্ধারিত বেসরকারি বাসে যাতায়াত করে। এসব বাস সাধারণত সাদা বা কমলা রঙের হয়। অভিভাবকেরা ওই বেসরকারি ভ্যান মালিককে মাসিক একটা ফি দেন। ভ্যানগুলোর সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পর্ক নেই। সাধারণত একই রুটে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের বহন করে তারা।
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ায় শহরতলির বাইরের বা গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী শিক্ষার্থীরা সাধারণত পাবলিক বাস এবং ট্রেন বা বেসরকারি বাস কোম্পানির বিশেষ রুটে যাতায়াত করে। শহরের অভ্যন্তরীণ এলাকার স্কুলছাত্ররা সরকারি মালিকানাধীন রুটের বাসে যাতায়াত করে। ছাত্ররা হয় একটি পাবলিক রুটের বাসে, অথবা একটি ‘স্কুল স্পেশাল’ পরিষেবাতে নেয়। কিছু বেসরকারি স্কুলের নিজস্ব বাস আছে। সাধারণত কোনো স্পনসর না পেলে স্কুল থেকেই এই সেবা দেওয়া হয়।
নিউ সাউথ ওয়েলসে স্কুল বাস পরিবহনকে ট্রেনের পরেই স্থল পরিবহনের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ বলে ধরা হয়। কিন্ডারগার্টেন-২ গ্রেডের শিক্ষার্থীরা যেখানেই থাকুক না কেন বিনা মূল্যে যাতায়াতের সুবিধা পায়। এরপর ৩-৬ বছরের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার দূরে থাকে। উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ২ কিলোমিটার দূরে থাকে।
কানাডা
কানাডার শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের মতোই। এখানেও তাদের জন্য রয়েছে হলুদ স্কুল বাস। কানাডীয় স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী পরিবহন পরিষেবার জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত করে। এর জন্য অভিভাবকদের কোনো পয়সা দিতে হয় না। এখানে স্কুলবাসগুলো দেখতে একই রকম এবং সাধারণত একই কোম্পানির তৈরি।
ফিনল্যান্ড
ফিনল্যান্ডে যে সমস্ত শিক্ষার্থী নিকটতম স্কুল থেকে ৫ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে থাকে বা কোনো প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তারা বিনা ভাড়ায় বাস বা ট্যাক্সিতে যাতায়াত করতে পারে। এসব বাস এবং ট্যাক্সিগুলো সাধারণ পরিবহন হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। সাধারণত স্থানীয় কোম্পানি এই পরিবহন পরিচালনা করে। যে বাসগুলো শুধু স্কুল বাসের জন্য সংরক্ষিত সেগুলোর সামনে এবং পেছনে ‘Koulukyyti/Skolskjuts’ চিহ্ন দেওয়া থাকে। শিক্ষার্থী পরিবহনে নিয়োজিত ট্যাক্সিগুলোর ছাদে একটি ত্রিভুজাকার চিহ্ন থাকে। এসব বাসের গতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
জার্মানি
কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া জার্মানিতে কোনো বিশেষ স্কুল বাস নেই। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সময়সূচি প্রায়শই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রয়োজনের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়। কিছু জার্মান রাজ্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট টিকিটের জন্য অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা রেখেছে।
হংকং
হংকংয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে স্কুলে আনা নেওয়ার জন্য পরিবহন আছে। প্রতিটি পরিবহনে একজন আয়া থাকেন। সরকার-নিয়ন্ত্রিত যানবাহন এই পরিবহনগুলো নির্দিষ্ট রুটে চলে।
নেদারল্যান্ডস
নেদারল্যান্ডসে, বৃহৎ পরিসরে ছাত্র পরিবহনের কোনো সংগঠিত রূপ নেই। শিশুকালে অভিভাবক আর হাইস্কুলে নিজেই বাইক চালিয়ে স্কুলে যায়। তবে কলেজে পড়ার সময় বিনা ভাড়ায় গণপরিবহনে যাতায়াত করতে পারে।
নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডে ঠিকাদার বা সাধারণ বাস কোম্পানির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিবহন ব্যবস্থা করা হয়। স্কুল পরিষেবার জন্য বাস কোম্পানিগুলোতে সাধারণত পুরোনো ট্রানজিট বাস বা কোচের বহর থাকে। সেগুলো বিভিন্ন সংকেত দিয়ে চিহ্নিত করা থাকে। গতি সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার।
এ দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (৫-১২ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (১৩ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাস করলে পরিবহন পরিষেবা দেওয়া হয় না। এ দেশে বিনা ভাড়ার স্কুল বাস পরিষেবা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে।
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পরিবহন সাধারণ ট্রানজিট বাসের ওপর নির্ভরশীল। এই বাসগুলো স্কুলে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার না করলে অন্য কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশির ভাগ শিশু স্থানীয় নির্ধারিত গণপরিবহন পরিষেবা ব্যবহার করে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই যুক্তরাজ্যে ডেডিকেটেড স্কুল পরিবহন পরিষেবা স্থানীয় বাস কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে দেওয়া হয়।
লন্ডন
গ্রেটার লন্ডনে অনেক স্কুল শিশু সাধারণ বাস পরিষেবা ব্যবহার করে স্কুলে যাতায়াত করে। অয়েস্টার কার্ড সিস্টেম ব্যবহার করে তারা বিনা মূল্যে ভ্রমণ করতে পারে।
তবে ইদানীং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। ফলে ক্রমেই শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা করার দাবি জোরদার হচ্ছে। উত্তর আমেরিকার স্টাইলের ‘হলুদ’ স্কুল বাস ‘ফার্স্ট স্টুডেন্ট ইউকে’ এবং ‘মাই বাস’ পরিষেবা চালু করা হচ্ছে।
হাঁটার পক্ষেও ব্যাপক প্রচারাভিযান চলছে। দাতব্য সংস্থা ‘লিভিং স্ট্রিটস’ এবং ‘ট্রাভেলওয়াইজ’ এই ক্যাম্পেইন জনপ্রিয় করার পেছনে মুখ্য ভূমিকা রাখছে।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে ‘স্কুল বাস’ তৈরি করা হয়। প্রায় সব সময় বিনা ভাড়ায় শিক্ষার্থীদের এসব বাসে পরিবহন করা হয়। অভিভাবকদেরও এর জন্য কোনো ফি দিতে হয় না। নিকটতম স্থানীয় স্কুল ছাড়া সব স্কুলে শিক্ষার্থীরাই এই সুবিধা পায়।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর বিশেষ স্কুল বাসগুলোতে প্রায় ১ হাজার কোটি শিক্ষার্থী ভ্রমণ করে। স্কুল বাসগুলো কিছু স্কুল প্রশাসন কেনে অথবা ইজারা নেয়। কিছু প্রশাসন আবার ঠিকাদারদের মাধ্যমে এই পরিষেবা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের শহরাঞ্চলে সাধারণ পাবলিক ট্রানজিট বাসের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। নিউইয়র্ক সিটি গ্রেড লেভেল এবং স্কুল থেকে দূরত্বের ওপর ভিত্তি করে ছাত্রদের ‘হলুদ’ স্কুল বাস পরিষেবা দেয়। তবে যেখানে ডেডিকেটেড স্কুল বাস পরিষেবা নেই সেখানে গ্রেড ৭-১২ এবং আরও কম বয়সী শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য পাবলিক নিউইয়র্ক সিটি ট্রানজিট বাস সিস্টেমের ওপর নির্ভর করে কর্তৃপক্ষ। এই উদ্দেশ্যে স্কুল প্রশাসন বিনা মূল্যে বা অর্ধেক মূল্যে ট্রানজিট পাস দেয়।
কিছু পাবলিক ট্রানজিট পরিষেবা স্থানীয় স্কুলগুলোতে পরিষেবা দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা রুটগুলো ব্যবহার করে। এ ধরনের রুট নির্ধারিত সময়ে শুধু স্কুল পরিবহনের জন্যই ব্যবহার করা হয়। অবশ্য ১৬ বছরের বেশি বয়সী অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিজেই গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়।

ভারতের উত্তর প্রদেশের আমেথির এক গ্রামে মজুরি চাওয়ায় এক দলিত কৃষি শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করেছে এক ধনী জমিদার ও তার সহযোগীরা। গতকাল রোববার এমন অভিযোগ তুলেছেন নিহতের পরিবার। নিহতের নাম হৌসিলা প্রসাদ। তবে ঘটনা অক্টোবরে দ্বিতীয় সপ্তাহের এবং ঘটেছে উত্তর প্রদেশের রামবারি মজারে সরাই মহেশা গ্রামে।
১৪ মিনিট আগে
চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের অবসানের ডাক দেওয়ার কয়েক দিন পর, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, ওয়াশিংটনও বেইজিংয়ের জন্য ‘হুমকি।’ মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট বলেন, চীন ‘সব সময় আমাদের নজরে রাখে।’ একই সঙ্গে তিনি মার্কিন পারমা
২৮ মিনিট আগে
উত্তর আফগানিস্তানে শক্তিশালী ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৭ জন নিহত ও ১৫০ জন আহত হয়েছেন। এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
৪২ মিনিট আগে
দীর্ঘ দুই দশকের অপেক্ষা, অগণিত বিলম্ব ও ব্যয়ের পর অবশেষে বিশ্বের বৃহত্তম প্রাচীন সভ্যতার জাদুঘর গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম খুলে দেওয়া হয়েছে। গিজার পিরামিড কমপ্লেক্সের পাশে অবস্থিত এই বিশাল স্থাপনা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারতের উত্তর প্রদেশের আমেথির এক গ্রামে মজুরি চাওয়ায় এক দলিত কৃষি শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করেছে এক ধনী জমিদার ও তার সহযোগীরা। গতকাল রোববার এমন অভিযোগ তুলেছেন নিহতের পরিবার। নিহতের নাম হৌসিলা প্রসাদ। তবে ঘটনা অক্টোবরে দ্বিতীয় সপ্তাহের এবং ঘটেছে উত্তর প্রদেশের রামবারি মজারে সরাই মহেশা গ্রামে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বলা হয়েছে, হৌসিলা প্রসাদের মৃত্যু ঘটল এমন এক সময়, যখন এর আগে পাশের রায়বেরেলিতে গত ১ অক্টোবর রাতে এক দলিতকে ‘ড্রোন চোর’ সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। আমেথি ও রায়বেরেলি—দুটোই নেহরু-গান্ধী পরিবারের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
এই ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত উচ্চবর্ণের জমিদার শুভম সিংকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে নিহতের পরিবারের অভিযোগ, হামলায় ৪ জন জড়িত থাকলেও পুলিশের এজাহারে কেবল একজনের নাম আছে। তাদের আরও অভিযোগ, শুভমের বিরুদ্ধে ‘ইচ্ছাকৃত খুনের’ মামলা না দিয়ে শুধু ‘অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ডের’ ধারা ব্যবহার করেছে পুলিশ।
নিহতের স্ত্রী কীর্তি জানান, ৪০ বছর বয়সী হৌসিলা প্রসাদকে ‘শুভম সিং এবং তাঁর তিন আত্মীয় ও বন্ধুরা জোর করে তাদের জমিতে কাজ করতে নিয়ে গিয়েছিল।’ কীর্তি বলেন, তাঁর স্বামী এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ৩৫০ রুপি মজুরিতে কাজ করেছিলেন। কিন্তু কাজ শেষে টাকা দেওয়া হয়নি।
কীর্তি আরও বলেন, ‘২৬ অক্টোবর তিনি বকেয়া টাকা চাইতে গেলে ওরা লোহার রড দিয়ে তাঁকে মারধর করে। অজ্ঞান হয়ে পড়লে তারা জিপে করে বাড়ির সামনে এনে ফেলে চলে যায়।’ মাথায় গুরুতর আঘাতসহ নানা জখম নিয়ে হৌসিলা এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ঘুরতে থাকেন। পরে তাঁকে লক্ষ্ণৌয়ের কিং জর্জ মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে নেওয়া হয়। সেখানে রোববার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
উত্তর প্রদেশ পুলিশের সার্কেল অফিসার দিনেশ কুমার মিশ্র জানান, শুভম সিংকে ‘অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ডের’ অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।
নিহতের এক আত্মীয় মনীশ প্রসাদ বলেন, ‘আমরা মরদেহ নিয়ে মহাসড়কে অবস্থান ধর্মঘট করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের হুমকি দেয় এবং দ্রুত দাহ সম্পন্ন করতে বাধ্য করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে পুলিশ ঘটনাটিকে ছোটখাটো মারামারি বলে চালিয়ে দেয়। পরে কেবল একজনের নামে অবহেলাজনিত হত্যার মামলা করে। অথচ গোটা গ্রাম জানে, অন্তত চারজন মিলে হৌসিলা প্রসাদকে মেরেছিল।’
ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তিন দিন পর পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তখন অভিযোগ ‘অবহেলাজনিত হত্যা’ থেকে বাড়িয়ে ‘ইচ্ছাকৃত খুন’-এ রূপ দেওয়া হয়, বিশেষ করে খবরটি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর।
উত্তর প্রদেশের অন্য জায়গা থেকেও দলিতদের ওপর হামলার খবর পাওয়া গেছে। লক্ষ্ণৌয়ের কাকরি এলাকার শীতলা মাতা মন্দিরে ৬৫ বছর বয়সী রামপালকে নিজের মূত্র চাটতে বাধ্য করা হয়। তিনি তখন প্রস্রাবনালির সংক্রমণে ভুগছিলেন। ঘটনাটি ঘটে ২০ অক্টোবর।

ভারতের উত্তর প্রদেশের আমেথির এক গ্রামে মজুরি চাওয়ায় এক দলিত কৃষি শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করেছে এক ধনী জমিদার ও তার সহযোগীরা। গতকাল রোববার এমন অভিযোগ তুলেছেন নিহতের পরিবার। নিহতের নাম হৌসিলা প্রসাদ। তবে ঘটনা অক্টোবরে দ্বিতীয় সপ্তাহের এবং ঘটেছে উত্তর প্রদেশের রামবারি মজারে সরাই মহেশা গ্রামে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বলা হয়েছে, হৌসিলা প্রসাদের মৃত্যু ঘটল এমন এক সময়, যখন এর আগে পাশের রায়বেরেলিতে গত ১ অক্টোবর রাতে এক দলিতকে ‘ড্রোন চোর’ সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। আমেথি ও রায়বেরেলি—দুটোই নেহরু-গান্ধী পরিবারের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
এই ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত উচ্চবর্ণের জমিদার শুভম সিংকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে নিহতের পরিবারের অভিযোগ, হামলায় ৪ জন জড়িত থাকলেও পুলিশের এজাহারে কেবল একজনের নাম আছে। তাদের আরও অভিযোগ, শুভমের বিরুদ্ধে ‘ইচ্ছাকৃত খুনের’ মামলা না দিয়ে শুধু ‘অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ডের’ ধারা ব্যবহার করেছে পুলিশ।
নিহতের স্ত্রী কীর্তি জানান, ৪০ বছর বয়সী হৌসিলা প্রসাদকে ‘শুভম সিং এবং তাঁর তিন আত্মীয় ও বন্ধুরা জোর করে তাদের জমিতে কাজ করতে নিয়ে গিয়েছিল।’ কীর্তি বলেন, তাঁর স্বামী এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ৩৫০ রুপি মজুরিতে কাজ করেছিলেন। কিন্তু কাজ শেষে টাকা দেওয়া হয়নি।
কীর্তি আরও বলেন, ‘২৬ অক্টোবর তিনি বকেয়া টাকা চাইতে গেলে ওরা লোহার রড দিয়ে তাঁকে মারধর করে। অজ্ঞান হয়ে পড়লে তারা জিপে করে বাড়ির সামনে এনে ফেলে চলে যায়।’ মাথায় গুরুতর আঘাতসহ নানা জখম নিয়ে হৌসিলা এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ঘুরতে থাকেন। পরে তাঁকে লক্ষ্ণৌয়ের কিং জর্জ মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে নেওয়া হয়। সেখানে রোববার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
উত্তর প্রদেশ পুলিশের সার্কেল অফিসার দিনেশ কুমার মিশ্র জানান, শুভম সিংকে ‘অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ডের’ অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।
নিহতের এক আত্মীয় মনীশ প্রসাদ বলেন, ‘আমরা মরদেহ নিয়ে মহাসড়কে অবস্থান ধর্মঘট করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের হুমকি দেয় এবং দ্রুত দাহ সম্পন্ন করতে বাধ্য করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে পুলিশ ঘটনাটিকে ছোটখাটো মারামারি বলে চালিয়ে দেয়। পরে কেবল একজনের নামে অবহেলাজনিত হত্যার মামলা করে। অথচ গোটা গ্রাম জানে, অন্তত চারজন মিলে হৌসিলা প্রসাদকে মেরেছিল।’
ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তিন দিন পর পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তখন অভিযোগ ‘অবহেলাজনিত হত্যা’ থেকে বাড়িয়ে ‘ইচ্ছাকৃত খুন’-এ রূপ দেওয়া হয়, বিশেষ করে খবরটি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর।
উত্তর প্রদেশের অন্য জায়গা থেকেও দলিতদের ওপর হামলার খবর পাওয়া গেছে। লক্ষ্ণৌয়ের কাকরি এলাকার শীতলা মাতা মন্দিরে ৬৫ বছর বয়সী রামপালকে নিজের মূত্র চাটতে বাধ্য করা হয়। তিনি তখন প্রস্রাবনালির সংক্রমণে ভুগছিলেন। ঘটনাটি ঘটে ২০ অক্টোবর।

বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে।
০১ ডিসেম্বর ২০২১
চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের অবসানের ডাক দেওয়ার কয়েক দিন পর, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, ওয়াশিংটনও বেইজিংয়ের জন্য ‘হুমকি।’ মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট বলেন, চীন ‘সব সময় আমাদের নজরে রাখে।’ একই সঙ্গে তিনি মার্কিন পারমা
২৮ মিনিট আগে
উত্তর আফগানিস্তানে শক্তিশালী ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৭ জন নিহত ও ১৫০ জন আহত হয়েছেন। এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
৪২ মিনিট আগে
দীর্ঘ দুই দশকের অপেক্ষা, অগণিত বিলম্ব ও ব্যয়ের পর অবশেষে বিশ্বের বৃহত্তম প্রাচীন সভ্যতার জাদুঘর গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম খুলে দেওয়া হয়েছে। গিজার পিরামিড কমপ্লেক্সের পাশে অবস্থিত এই বিশাল স্থাপনা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের অবসানের ডাক দেওয়ার কয়েক দিন পর, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, ওয়াশিংটনও বেইজিংয়ের জন্য ‘হুমকি।’ মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট বলেন, চীন ‘সব সময় আমাদের নজরে রাখে।’ একই সঙ্গে তিনি মার্কিন পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে বড়াই করে বলেছেন, তাঁর দেশের কাছে থাকা অস্ত্র দিয়ে দুনিয়াকে ১৫০ উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব।
ট্রাম্পের এই মন্তব্য এল এমন এক সময়ে, যখন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অভিযোগ করছে যে, চীন যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থার কিছু অংশে অনুপ্রবেশ করেছে। এ ছাড়া, মার্কিন মেধাস্বত্ব ও নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করার অভিযোগও রয়েছে চীনের বিরুদ্ধে।
সিবিএস নিউজের উপস্থাপকের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরাও তাদের জন্য হুমকি। তুমি যে বিষয়গুলো বলছ, আমরা সেগুলোর অনেকটাই তাদের সঙ্গে করি। এটা খুব প্রতিযোগিতামূলক এক বিশ্ব—বিশেষ করে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেমন তাদের দিকে নজর রাখি, তারাও আমাদের দিকে রাখে। তবে আমি মনে করি, আমরা এখন বেশ ভালোভাবে চলছি। আমি বিশ্বাস করি, আমরা একসঙ্গে কাজ করলে আরও বড়, ভালো ও শক্তিশালী হতে পারব; শুধু তাদের পরাস্ত করার চেষ্টা করলেই হবে না।’
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, চীন দ্রুতগতিতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র আছে। রাশিয়া দ্বিতীয় স্থানে। চীন অনেক পিছিয়ে, তবে পাঁচ বছরের মধ্যে তারা সমান অবস্থায় পৌঁছে যাবে। তারা দ্রুতগতিতে তৈরি করছে, আর আমি মনে করি, আমাদের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কিছু করা উচিত।’
ট্রাম্প জানান, তিনি পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ বিষয়টি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের কাছে এমন অস্ত্র আছে, যা দিয়ে পৃথিবীকে ১৫০ বার ধ্বংস করা সম্ভব। রাশিয়ারও অনেক পারমাণবিক অস্ত্র আছে, আর চীনেরও কিছু আছে—বরং অনেকটাই আছে।’
নিজের দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশের পক্ষে সাফাই দিতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘চীন ও রাশিয়াও তাদের অস্ত্র পরীক্ষা করছে, শুধু তোমরা সেটা জানো না।’ রিপাবলিকান এই নেতা দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিপরীতে ‘খুব ভালো করছে’, তবে স্বীকার করেন যে বেইজিংয়ের হাতে বিরল খনিজ সম্পদের এক ধরনের ‘ক্ষমতা’ আছে, যা ওয়াশিংটনের ওপর প্রভাব ফেলছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা চীনের বিরুদ্ধে খুব ভালো করছিলাম। হঠাৎ তারা বুঝলো, আমাদেরও প্রতিরোধ করতে হবে। তখন তারা তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করল। তাদের যে ক্ষমতা, সেটা হলো রেয়ার আর্থ বা বিরল খনিজ। তারা ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে এগুলো জমাচ্ছে এবং যত্ন করে সংরক্ষণ করছে।’ এই খনিজ পদার্থগুলো যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত জরুরি—কম্পিউটার থেকে শুরু করে অস্ত্র তৈরির জন্য পর্যন্ত।
ট্রাম্প বলেন, ‘তারা এটা আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে, আর আমরা তাদের বিরুদ্ধে অন্য জিনিস ব্যবহার করেছি। যেমন বিমান যন্ত্রাংশ। এটা খুব বড় ব্যাপার। তাদের শত শত বোয়িং বিমান আছে। আমরা তাদের যন্ত্রাংশ দেওয়া বন্ধ করেছিলাম। আমরা দুই পক্ষই হয়তো একটু অযৌক্তিক আচরণ করেছিলাম, তবে শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অস্ত্র ছিল শুল্ক।’

চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের অবসানের ডাক দেওয়ার কয়েক দিন পর, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, ওয়াশিংটনও বেইজিংয়ের জন্য ‘হুমকি।’ মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট বলেন, চীন ‘সব সময় আমাদের নজরে রাখে।’ একই সঙ্গে তিনি মার্কিন পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে বড়াই করে বলেছেন, তাঁর দেশের কাছে থাকা অস্ত্র দিয়ে দুনিয়াকে ১৫০ উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব।
ট্রাম্পের এই মন্তব্য এল এমন এক সময়ে, যখন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অভিযোগ করছে যে, চীন যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থার কিছু অংশে অনুপ্রবেশ করেছে। এ ছাড়া, মার্কিন মেধাস্বত্ব ও নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করার অভিযোগও রয়েছে চীনের বিরুদ্ধে।
সিবিএস নিউজের উপস্থাপকের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরাও তাদের জন্য হুমকি। তুমি যে বিষয়গুলো বলছ, আমরা সেগুলোর অনেকটাই তাদের সঙ্গে করি। এটা খুব প্রতিযোগিতামূলক এক বিশ্ব—বিশেষ করে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেমন তাদের দিকে নজর রাখি, তারাও আমাদের দিকে রাখে। তবে আমি মনে করি, আমরা এখন বেশ ভালোভাবে চলছি। আমি বিশ্বাস করি, আমরা একসঙ্গে কাজ করলে আরও বড়, ভালো ও শক্তিশালী হতে পারব; শুধু তাদের পরাস্ত করার চেষ্টা করলেই হবে না।’
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, চীন দ্রুতগতিতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র আছে। রাশিয়া দ্বিতীয় স্থানে। চীন অনেক পিছিয়ে, তবে পাঁচ বছরের মধ্যে তারা সমান অবস্থায় পৌঁছে যাবে। তারা দ্রুতগতিতে তৈরি করছে, আর আমি মনে করি, আমাদের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কিছু করা উচিত।’
ট্রাম্প জানান, তিনি পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ বিষয়টি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের কাছে এমন অস্ত্র আছে, যা দিয়ে পৃথিবীকে ১৫০ বার ধ্বংস করা সম্ভব। রাশিয়ারও অনেক পারমাণবিক অস্ত্র আছে, আর চীনেরও কিছু আছে—বরং অনেকটাই আছে।’
নিজের দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশের পক্ষে সাফাই দিতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘চীন ও রাশিয়াও তাদের অস্ত্র পরীক্ষা করছে, শুধু তোমরা সেটা জানো না।’ রিপাবলিকান এই নেতা দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিপরীতে ‘খুব ভালো করছে’, তবে স্বীকার করেন যে বেইজিংয়ের হাতে বিরল খনিজ সম্পদের এক ধরনের ‘ক্ষমতা’ আছে, যা ওয়াশিংটনের ওপর প্রভাব ফেলছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা চীনের বিরুদ্ধে খুব ভালো করছিলাম। হঠাৎ তারা বুঝলো, আমাদেরও প্রতিরোধ করতে হবে। তখন তারা তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করল। তাদের যে ক্ষমতা, সেটা হলো রেয়ার আর্থ বা বিরল খনিজ। তারা ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে এগুলো জমাচ্ছে এবং যত্ন করে সংরক্ষণ করছে।’ এই খনিজ পদার্থগুলো যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত জরুরি—কম্পিউটার থেকে শুরু করে অস্ত্র তৈরির জন্য পর্যন্ত।
ট্রাম্প বলেন, ‘তারা এটা আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে, আর আমরা তাদের বিরুদ্ধে অন্য জিনিস ব্যবহার করেছি। যেমন বিমান যন্ত্রাংশ। এটা খুব বড় ব্যাপার। তাদের শত শত বোয়িং বিমান আছে। আমরা তাদের যন্ত্রাংশ দেওয়া বন্ধ করেছিলাম। আমরা দুই পক্ষই হয়তো একটু অযৌক্তিক আচরণ করেছিলাম, তবে শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অস্ত্র ছিল শুল্ক।’

বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে।
০১ ডিসেম্বর ২০২১
ভারতের উত্তর প্রদেশের আমেথির এক গ্রামে মজুরি চাওয়ায় এক দলিত কৃষি শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করেছে এক ধনী জমিদার ও তার সহযোগীরা। গতকাল রোববার এমন অভিযোগ তুলেছেন নিহতের পরিবার। নিহতের নাম হৌসিলা প্রসাদ। তবে ঘটনা অক্টোবরে দ্বিতীয় সপ্তাহের এবং ঘটেছে উত্তর প্রদেশের রামবারি মজারে সরাই মহেশা গ্রামে।
১৪ মিনিট আগে
উত্তর আফগানিস্তানে শক্তিশালী ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৭ জন নিহত ও ১৫০ জন আহত হয়েছেন। এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
৪২ মিনিট আগে
দীর্ঘ দুই দশকের অপেক্ষা, অগণিত বিলম্ব ও ব্যয়ের পর অবশেষে বিশ্বের বৃহত্তম প্রাচীন সভ্যতার জাদুঘর গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম খুলে দেওয়া হয়েছে। গিজার পিরামিড কমপ্লেক্সের পাশে অবস্থিত এই বিশাল স্থাপনা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

উত্তর আফগানিস্তানে শক্তিশালী ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৭ জন নিহত ও ১৫০ জন আহত হয়েছেন। এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, গতকাল রোববার স্থানীয় সময় দিবাগত রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে, ভূমি থেকে ২৮ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
সামানগান প্রদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র সামিম জোয়ান্দা রয়টার্সকে বলেন, ‘সোমবার সকাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ১৫০ জন আহত হয়েছেন এবং সাতজন মারা গেছেন। আহত সবাইকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি জানান, এই হিসাব সোমবার সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে পাওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তৈরি।
ইউএসজিএস তাদের স্বয়ংক্রিয় সতর্কতা ব্যবস্থা পেজারে ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’ জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, ‘বড় ধরনের প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।’ পূর্বের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, এই মাত্রার সতর্কতা সাধারণত আঞ্চলিক বা জাতীয় পর্যায়ের প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন করে বলে জানানো হয়।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে। বলখ প্রদেশের মুখপাত্র হাজি যায়েদ বলেন, ভূমিকম্পে মাজার-ই-শরিফের পবিত্র মাজারের একটি অংশ ধসে পড়েছে। তিনি বিখ্যাত নীল মসজিদটির কথা উল্লেখ করেন।
প্রায় ৫ লাখ ২৩ হাজার মানুষের এই শহরে রাতে ভূমিকম্পের পর অনেকেই আতঙ্কে ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। এএফপির এক প্রতিবেদক জানান, মানুষ ভয়ে আশপাশের ভবন থেকে বেরিয়ে আসে, কেউ কেউ খোলা মাঠে আশ্রয় নেয়।
তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এটি তাদের জন্য আরেকটি বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়। ২০২১ সালে ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে দেশটি তিনটি বড় ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত হয়েছে। অথচ বিদেশি সাহায্য, যা একসময় আফগান অর্থনীতির প্রধান ভরসা ছিল, এখন অনেক কমে গেছে।
চলতি বছরের ৩১ আগস্ট দেশটির পূর্বাঞ্চলে ৬ ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। এটি সাম্প্রতিক আফগান ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প। এর আগে, ২০২৩ সালে পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাতে, ইরান সীমান্তের কাছে, এবং ২০২২ সালে পূর্বাঞ্চলীয় নানগারহার প্রদেশে বড় দুটি ভূমিকম্পে শত শত মানুষ মারা যায় ও হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়।
দেশটিতে ভূমিকম্প একটি সাধারণ ঘটনা। বিশেষত হিন্দুকুশ পর্বতমালা অঞ্চলে, যেখানে ইউরেশীয় ও ভারতীয় টেকটোনিক ফলকের মিলনস্থল। দীর্ঘ যুদ্ধের পর আফগানিস্তান এখন নানা সংকটে জর্জরিত। চরম দারিদ্র্য, তীব্র খরা এবং পাকিস্তান ও ইরান থেকে ফেরত পাঠানো লাখ লাখ আফগান নাগরিকের চাপে দেশটির অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়েছে।
বেশির ভাগ আফগান বাড়িঘর দুর্বলভাবে নির্মিত। দুর্বল অবকাঠামোর কারণে ভূমিকম্পের পর উদ্ধারকাজও ব্যাহত হয়। ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ কেন্দ্রের ভূকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপ্টির তথ্য অনুযায়ী, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে ৭ মাত্রার বেশি শক্তির অন্তত ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

উত্তর আফগানিস্তানে শক্তিশালী ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৭ জন নিহত ও ১৫০ জন আহত হয়েছেন। এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, গতকাল রোববার স্থানীয় সময় দিবাগত রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে, ভূমি থেকে ২৮ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
সামানগান প্রদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র সামিম জোয়ান্দা রয়টার্সকে বলেন, ‘সোমবার সকাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ১৫০ জন আহত হয়েছেন এবং সাতজন মারা গেছেন। আহত সবাইকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি জানান, এই হিসাব সোমবার সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে পাওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তৈরি।
ইউএসজিএস তাদের স্বয়ংক্রিয় সতর্কতা ব্যবস্থা পেজারে ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’ জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, ‘বড় ধরনের প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।’ পূর্বের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, এই মাত্রার সতর্কতা সাধারণত আঞ্চলিক বা জাতীয় পর্যায়ের প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন করে বলে জানানো হয়।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে। বলখ প্রদেশের মুখপাত্র হাজি যায়েদ বলেন, ভূমিকম্পে মাজার-ই-শরিফের পবিত্র মাজারের একটি অংশ ধসে পড়েছে। তিনি বিখ্যাত নীল মসজিদটির কথা উল্লেখ করেন।
প্রায় ৫ লাখ ২৩ হাজার মানুষের এই শহরে রাতে ভূমিকম্পের পর অনেকেই আতঙ্কে ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। এএফপির এক প্রতিবেদক জানান, মানুষ ভয়ে আশপাশের ভবন থেকে বেরিয়ে আসে, কেউ কেউ খোলা মাঠে আশ্রয় নেয়।
তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এটি তাদের জন্য আরেকটি বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়। ২০২১ সালে ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে দেশটি তিনটি বড় ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত হয়েছে। অথচ বিদেশি সাহায্য, যা একসময় আফগান অর্থনীতির প্রধান ভরসা ছিল, এখন অনেক কমে গেছে।
চলতি বছরের ৩১ আগস্ট দেশটির পূর্বাঞ্চলে ৬ ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। এটি সাম্প্রতিক আফগান ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প। এর আগে, ২০২৩ সালে পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাতে, ইরান সীমান্তের কাছে, এবং ২০২২ সালে পূর্বাঞ্চলীয় নানগারহার প্রদেশে বড় দুটি ভূমিকম্পে শত শত মানুষ মারা যায় ও হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়।
দেশটিতে ভূমিকম্প একটি সাধারণ ঘটনা। বিশেষত হিন্দুকুশ পর্বতমালা অঞ্চলে, যেখানে ইউরেশীয় ও ভারতীয় টেকটোনিক ফলকের মিলনস্থল। দীর্ঘ যুদ্ধের পর আফগানিস্তান এখন নানা সংকটে জর্জরিত। চরম দারিদ্র্য, তীব্র খরা এবং পাকিস্তান ও ইরান থেকে ফেরত পাঠানো লাখ লাখ আফগান নাগরিকের চাপে দেশটির অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়েছে।
বেশির ভাগ আফগান বাড়িঘর দুর্বলভাবে নির্মিত। দুর্বল অবকাঠামোর কারণে ভূমিকম্পের পর উদ্ধারকাজও ব্যাহত হয়। ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ কেন্দ্রের ভূকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপ্টির তথ্য অনুযায়ী, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে ৭ মাত্রার বেশি শক্তির অন্তত ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে।
০১ ডিসেম্বর ২০২১
ভারতের উত্তর প্রদেশের আমেথির এক গ্রামে মজুরি চাওয়ায় এক দলিত কৃষি শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করেছে এক ধনী জমিদার ও তার সহযোগীরা। গতকাল রোববার এমন অভিযোগ তুলেছেন নিহতের পরিবার। নিহতের নাম হৌসিলা প্রসাদ। তবে ঘটনা অক্টোবরে দ্বিতীয় সপ্তাহের এবং ঘটেছে উত্তর প্রদেশের রামবারি মজারে সরাই মহেশা গ্রামে।
১৪ মিনিট আগে
চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের অবসানের ডাক দেওয়ার কয়েক দিন পর, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, ওয়াশিংটনও বেইজিংয়ের জন্য ‘হুমকি।’ মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট বলেন, চীন ‘সব সময় আমাদের নজরে রাখে।’ একই সঙ্গে তিনি মার্কিন পারমা
২৮ মিনিট আগে
দীর্ঘ দুই দশকের অপেক্ষা, অগণিত বিলম্ব ও ব্যয়ের পর অবশেষে বিশ্বের বৃহত্তম প্রাচীন সভ্যতার জাদুঘর গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম খুলে দেওয়া হয়েছে। গিজার পিরামিড কমপ্লেক্সের পাশে অবস্থিত এই বিশাল স্থাপনা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দীর্ঘ দুই দশকের অপেক্ষা, অগণিত বিলম্ব ও ব্যয়ের পর অবশেষে বিশ্বের বৃহত্তম প্রাচীন সভ্যতার জাদুঘর গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম খুলে দেওয়া হয়েছে। গিজার পিরামিড কমপ্লেক্সের পাশে অবস্থিত এই বিশাল স্থাপনা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। শনিবার (১ নভেম্বর) এই জাদুঘরের উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সরকারি ছুটি পালিত হয়েছে।
গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম সম্পর্কে রোববার (২ নভেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, এটির জন্য ২০০২ সালে মিসর সরকার বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক নকশা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। ওই প্রতিযোগিতায় ১ হাজার ৫৫৬টি প্রস্তাব জমা পড়ে। পরে সবাইকে অবাক করে বিজয়ী হয় ডাবলিনভিত্তিক একটি ছোট আর্কিটেকচার ফার্ম—হেনেগান পেং আর্কিটেক্টস। ওই ফার্মের সহ-প্রতিষ্ঠাতা রোয়েশিন হেনেগান তখন ভাবতেও পারেননি যে, তাঁর চার সদস্যের ছোট প্রতিষ্ঠান এমন ঐতিহাসিক দায়িত্ব পেতে পারে। তবে এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে শেষ পর্যন্ত সময় লেগেছে ২২ বছর।
মিউজিয়ামটির নির্মাণ পরিকল্পনা প্রথম ঘোষণা করা হয়েছিল ১৯৯২ সালে। এরপর পেরিয়েছে আরব বসন্তের বিপ্লব, সামরিক অভ্যুত্থান এবং কোভিড-১৯ মহামারির মতো নানা ধাক্কা। তবু টিকে থেকেছে প্রকল্পটি। ২০২৫ সালে এসে অবশেষে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হলো মিসরের এই গর্ব।
এই জাদুঘরকে বলা হচ্ছে ‘প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতার দীর্ঘায়ু ও মহিমার প্রতীক’। ২ লাখ ৫৮ হাজার বর্গফুটজুড়ে বিস্তৃত স্থাপনাটিতে রয়েছে প্রায় এক লাখ নিদর্শন। এর মধ্যে প্রাচীন প্যাপিরাস, টেক্সটাইল, পাত্র, সারকোফাগাস, এমনকি সংরক্ষিত মানব মমিও রয়েছে। সময়ক্রম অনুযায়ী গ্যালারিগুলো সাজানো হয়েছে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে কপটিক যুগ পর্যন্ত—অর্থাৎ খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ সাল থেকে খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দী পর্যন্ত। সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হলো তুতেনখামেন গ্যালারি, যেখানে তরুণ রাজা তুতেনখামেনের সমাধি থেকে পাওয়া ৫ হাজার নিদর্শন প্রদর্শিত হচ্ছে।
প্রবেশপথে দাঁড়িয়ে আছে ৩৬ ফুট উঁচু দ্বিতীয় রামেসিসের মূর্তি, আর বাইরে রয়েছে ৮৭ টন ওজনের এক বিশাল স্তম্ভ। ছাদের ঢাল এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যাতে প্রাকৃতিক আলো পর্যাপ্তভাবে প্রবেশ করতে পারে। নির্মাতা হেনেগান বলেন, ‘প্রাকৃতিক আলোতে এই জাদুঘর যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে।’
মিউজিয়ামের মূল অংশটিতে ছয়তলা একটি প্রশস্ত সিঁড়ি দর্শনার্থীদের নিয়ে যায় সময়ের বিপরীতে সাজানো পাথরের ভাস্কর্যের প্রদর্শনীতে। এর চূড়ায় পৌঁছে দর্শনার্থীরা পাবেন এক অনবদ্য দৃশ্য—গিজার মহাপিরামিড কমপ্লেক্সের সরাসরি দৃশ্যপট।
ভবনটির ছাদের ঢাল পিরামিডের সর্বোচ্চ বিন্দুর সমান্তরাল, যেন এটি কখনোই পিরামিডকে ছাপিয়ে না যায়। জাদুঘরের নকশায় ব্যবহৃত জ্যামিতিক রেখা ও স্থান বিন্যাস এমনভাবে সাজানো যে ভবনটি মরুভূমির প্রান্তে একটি নতুন সীমারেখা তৈরি করেছে, অথচ পিরামিডের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখেছে।
দুই দশকের পরিশ্রমে দাঁড়ানো এই স্থাপনা সম্পর্কে হেনেগান বলেন, ‘একটি দীর্ঘ যাত্রার সার্থক পরিণতি। এত সূক্ষ্ম ও ঐতিহাসিক নিদর্শন স্থানান্তরিত করতে সময় লাগবেই। একটু বেশি সময় লাগলেও যদি তা নিখুঁতভাবে করা যায়—তবে সেটাই সবচেয়ে মূল্যবান।’

দীর্ঘ দুই দশকের অপেক্ষা, অগণিত বিলম্ব ও ব্যয়ের পর অবশেষে বিশ্বের বৃহত্তম প্রাচীন সভ্যতার জাদুঘর গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম খুলে দেওয়া হয়েছে। গিজার পিরামিড কমপ্লেক্সের পাশে অবস্থিত এই বিশাল স্থাপনা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। শনিবার (১ নভেম্বর) এই জাদুঘরের উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সরকারি ছুটি পালিত হয়েছে।
গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম সম্পর্কে রোববার (২ নভেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, এটির জন্য ২০০২ সালে মিসর সরকার বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক নকশা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। ওই প্রতিযোগিতায় ১ হাজার ৫৫৬টি প্রস্তাব জমা পড়ে। পরে সবাইকে অবাক করে বিজয়ী হয় ডাবলিনভিত্তিক একটি ছোট আর্কিটেকচার ফার্ম—হেনেগান পেং আর্কিটেক্টস। ওই ফার্মের সহ-প্রতিষ্ঠাতা রোয়েশিন হেনেগান তখন ভাবতেও পারেননি যে, তাঁর চার সদস্যের ছোট প্রতিষ্ঠান এমন ঐতিহাসিক দায়িত্ব পেতে পারে। তবে এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে শেষ পর্যন্ত সময় লেগেছে ২২ বছর।
মিউজিয়ামটির নির্মাণ পরিকল্পনা প্রথম ঘোষণা করা হয়েছিল ১৯৯২ সালে। এরপর পেরিয়েছে আরব বসন্তের বিপ্লব, সামরিক অভ্যুত্থান এবং কোভিড-১৯ মহামারির মতো নানা ধাক্কা। তবু টিকে থেকেছে প্রকল্পটি। ২০২৫ সালে এসে অবশেষে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হলো মিসরের এই গর্ব।
এই জাদুঘরকে বলা হচ্ছে ‘প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতার দীর্ঘায়ু ও মহিমার প্রতীক’। ২ লাখ ৫৮ হাজার বর্গফুটজুড়ে বিস্তৃত স্থাপনাটিতে রয়েছে প্রায় এক লাখ নিদর্শন। এর মধ্যে প্রাচীন প্যাপিরাস, টেক্সটাইল, পাত্র, সারকোফাগাস, এমনকি সংরক্ষিত মানব মমিও রয়েছে। সময়ক্রম অনুযায়ী গ্যালারিগুলো সাজানো হয়েছে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে কপটিক যুগ পর্যন্ত—অর্থাৎ খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ সাল থেকে খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দী পর্যন্ত। সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হলো তুতেনখামেন গ্যালারি, যেখানে তরুণ রাজা তুতেনখামেনের সমাধি থেকে পাওয়া ৫ হাজার নিদর্শন প্রদর্শিত হচ্ছে।
প্রবেশপথে দাঁড়িয়ে আছে ৩৬ ফুট উঁচু দ্বিতীয় রামেসিসের মূর্তি, আর বাইরে রয়েছে ৮৭ টন ওজনের এক বিশাল স্তম্ভ। ছাদের ঢাল এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যাতে প্রাকৃতিক আলো পর্যাপ্তভাবে প্রবেশ করতে পারে। নির্মাতা হেনেগান বলেন, ‘প্রাকৃতিক আলোতে এই জাদুঘর যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে।’
মিউজিয়ামের মূল অংশটিতে ছয়তলা একটি প্রশস্ত সিঁড়ি দর্শনার্থীদের নিয়ে যায় সময়ের বিপরীতে সাজানো পাথরের ভাস্কর্যের প্রদর্শনীতে। এর চূড়ায় পৌঁছে দর্শনার্থীরা পাবেন এক অনবদ্য দৃশ্য—গিজার মহাপিরামিড কমপ্লেক্সের সরাসরি দৃশ্যপট।
ভবনটির ছাদের ঢাল পিরামিডের সর্বোচ্চ বিন্দুর সমান্তরাল, যেন এটি কখনোই পিরামিডকে ছাপিয়ে না যায়। জাদুঘরের নকশায় ব্যবহৃত জ্যামিতিক রেখা ও স্থান বিন্যাস এমনভাবে সাজানো যে ভবনটি মরুভূমির প্রান্তে একটি নতুন সীমারেখা তৈরি করেছে, অথচ পিরামিডের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখেছে।
দুই দশকের পরিশ্রমে দাঁড়ানো এই স্থাপনা সম্পর্কে হেনেগান বলেন, ‘একটি দীর্ঘ যাত্রার সার্থক পরিণতি। এত সূক্ষ্ম ও ঐতিহাসিক নিদর্শন স্থানান্তরিত করতে সময় লাগবেই। একটু বেশি সময় লাগলেও যদি তা নিখুঁতভাবে করা যায়—তবে সেটাই সবচেয়ে মূল্যবান।’

বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে।
০১ ডিসেম্বর ২০২১
ভারতের উত্তর প্রদেশের আমেথির এক গ্রামে মজুরি চাওয়ায় এক দলিত কৃষি শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করেছে এক ধনী জমিদার ও তার সহযোগীরা। গতকাল রোববার এমন অভিযোগ তুলেছেন নিহতের পরিবার। নিহতের নাম হৌসিলা প্রসাদ। তবে ঘটনা অক্টোবরে দ্বিতীয় সপ্তাহের এবং ঘটেছে উত্তর প্রদেশের রামবারি মজারে সরাই মহেশা গ্রামে।
১৪ মিনিট আগে
চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের অবসানের ডাক দেওয়ার কয়েক দিন পর, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, ওয়াশিংটনও বেইজিংয়ের জন্য ‘হুমকি।’ মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট বলেন, চীন ‘সব সময় আমাদের নজরে রাখে।’ একই সঙ্গে তিনি মার্কিন পারমা
২৮ মিনিট আগে
উত্তর আফগানিস্তানে শক্তিশালী ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৭ জন নিহত ও ১৫০ জন আহত হয়েছেন। এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
৪২ মিনিট আগে