আজকের পত্রিকা ডেস্ক
প্রিয়জনকে হারানোর মতো মানসিক ধাক্কা বা বড় কোনো দুঃসংবাদ পাওয়ার পর অনেকেই বুক ধড়ফড়ানি ও শ্বাসকষ্টে ভোগেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এটি ‘ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম’ বা টাকোৎসুবো কার্ডিওমায়োপ্যাথি নামে পরিচিত। সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, এই ধরনের পরিস্থিতির শিকার হয়ে পুরুষদের মৃত্যুহার নারীদের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি!
২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় দুই লাখ রোগীর ওপর চালানো এই গবেষণা সম্প্রতি ‘জার্নাল অব দ্য আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এ প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ব্রোকেন হার্ট বা ভাঙা হৃদয় সিনড্রোমে আক্রান্ত পুরুষদের মধ্যে প্রায় ১১ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে। আর একই পরিস্থিতির শিকার হয়ে নারীদের মাত্র ৫ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে।
চিকিৎসকদের মতে, শারীরিক বা মানসিক চরম চাপই এই সিনড্রোমের প্রধান কারণ। এমন পরিস্থিতিতে শরীরে অতিরিক্ত অ্যাড্রেনালিন জাতীয় স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ হয়, যা হৃৎপিণ্ডের স্বাভাবিক সংকোচনকে ব্যাহত করে। এমন হলে অধিকাংশ রোগী সেরে ওঠেন ঠিকই, তবে কিছু ক্ষেত্রে তা মারাত্মক রূপ নেয়। এমনকি অনেকের হৃদ্যন্ত্র বিকলও হয়ে যেতে পারে।
পুরুষদের ঝুঁকি বেশি কেন?
গবেষণা দলের সদস্য না হলেও এনওয়াইইউ ল্যাঙ্গোন হেলথের কার্ডিওলজিস্ট ড. হারমনি রেনল্ডস বলেন, ‘এটা বারবার দেখা গেছে—পুরুষদের এই সিনড্রোম কম হয়, কিন্তু হলে বিপজ্জনক রূপ নেয়।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন—নারী-পুরুষের মধ্যে এই পার্থক্য থেকে ধারণা করা যায়, যে ধরনের স্ট্রেস ট্রিগার হিসেবে কাজ করে তা লিঙ্গভেদে ভিন্ন হতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রে সাধারণত শারীরিক স্ট্রেস যেমন অপারেশন, স্ট্রোক ইত্যাদি থেকে এটি সৃষ্টি হয়। আর নারীদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায় মানসিক চাপ যেমন—কাজ হারানো, প্রিয়জনকে হারানো ইত্যাদি থেকে।
জন হপকিন্স মেডিসিনের কার্ডিওলজিস্ট ড. ইলান উইটস্টেইন বলেন, ‘মানসিক চাপ থেকে উদ্ভূত ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোমে আক্রান্ত নারীরা তুলনামূলকভাবে ভালোভাবে সেরে ওঠেন। কিন্তু পুরুষদের ক্ষেত্রে যেহেতু এটি আরও গুরুতর স্ট্রেসে ট্রিগার হয়, তাই মৃত্যুঝুঁকিও বেশি।’
গবেষণার প্রধান লেখক ড. মোহাম্মদ মোভাহেদ বলেন, ‘পুরুষেরা সাধারণত মানসিক চাপ সামাল দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সামাজিক সহায়তা পান না। ফলে স্ট্রেস দীর্ঘস্থায়ী হলে হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি হতে থাকে, যা সেরে ওঠাকে কঠিন করে তোলে।’
রহস্য এখনো পুরোপুরি উন্মোচিত নয়
যদিও এই রোগ সম্পর্কে চিকিৎসা বিজ্ঞানে অনেক কিছুই জানা গেছে। তারপরও এখনো অনেক প্রশ্নের উত্তর বাকি রয়েছে। অনেক সময় খুব ছোট মানসিক চাপ, এমনকি হালকা অসুস্থতাও এই সিনড্রোমের কারণ হতে পারে।
উইটস্টেইনের মতে, কেউ কেউ সহজাতভাবে বেশি সংবেদনশীল হতে পারেন। উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরল থাকলে ঝুঁকি বাড়তে পারে। মেনোপজ-পরবর্তী নারীরাও বেশি ঝুঁকিতে থাকেন—সম্ভবত শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে যাওয়ার কারণে।
চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ এখনো দুরূহ
চিকিৎসকেরা বলছেন, এই সিনড্রোম নির্দিষ্টভাবে প্রতিরোধ করা বা একক কোনো ওষুধ দিয়ে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। মাঝে মাঝে বিটা ব্লকারের মতো হৃদ্রোগে ব্যবহৃত ওষুধ দেওয়া হয়, তবে ফলাফল মিশ্র। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে মেডিটেশন বা কাউন্সেলিং সহায়ক হতে পারে।
সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো—বুক ধড়ফড়ানি বা শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে তা অবহেলা না করে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া। কারণ এটি সাধারণ হার্ট অ্যাটাকের মতো উপসর্গ তৈরি করে এবং পরীক্ষা ছাড়া পার্থক্য করা কঠিন।
ড. রেনল্ডস বলেন, ‘নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়—বুকে ব্যথা মানেই স্ট্রেস। হাসপাতালেই নিশ্চিত হওয়া যায়, এটি কোন ধরনের হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা।’
এই গবেষণা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—মানসিক চাপ শুধু মনের ওপর নয়, শরীরের ওপরও সরাসরি প্রভাব ফেলে। হৃদয়ের ভেতরের সেই না দেখা ব্যথা কখনো কখনো বাস্তব হৃদ্যন্ত্রের ক্ষতিও ডেকে আনতে পারে।
প্রিয়জনকে হারানোর মতো মানসিক ধাক্কা বা বড় কোনো দুঃসংবাদ পাওয়ার পর অনেকেই বুক ধড়ফড়ানি ও শ্বাসকষ্টে ভোগেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এটি ‘ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম’ বা টাকোৎসুবো কার্ডিওমায়োপ্যাথি নামে পরিচিত। সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, এই ধরনের পরিস্থিতির শিকার হয়ে পুরুষদের মৃত্যুহার নারীদের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি!
২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় দুই লাখ রোগীর ওপর চালানো এই গবেষণা সম্প্রতি ‘জার্নাল অব দ্য আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এ প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ব্রোকেন হার্ট বা ভাঙা হৃদয় সিনড্রোমে আক্রান্ত পুরুষদের মধ্যে প্রায় ১১ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে। আর একই পরিস্থিতির শিকার হয়ে নারীদের মাত্র ৫ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে।
চিকিৎসকদের মতে, শারীরিক বা মানসিক চরম চাপই এই সিনড্রোমের প্রধান কারণ। এমন পরিস্থিতিতে শরীরে অতিরিক্ত অ্যাড্রেনালিন জাতীয় স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ হয়, যা হৃৎপিণ্ডের স্বাভাবিক সংকোচনকে ব্যাহত করে। এমন হলে অধিকাংশ রোগী সেরে ওঠেন ঠিকই, তবে কিছু ক্ষেত্রে তা মারাত্মক রূপ নেয়। এমনকি অনেকের হৃদ্যন্ত্র বিকলও হয়ে যেতে পারে।
পুরুষদের ঝুঁকি বেশি কেন?
গবেষণা দলের সদস্য না হলেও এনওয়াইইউ ল্যাঙ্গোন হেলথের কার্ডিওলজিস্ট ড. হারমনি রেনল্ডস বলেন, ‘এটা বারবার দেখা গেছে—পুরুষদের এই সিনড্রোম কম হয়, কিন্তু হলে বিপজ্জনক রূপ নেয়।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন—নারী-পুরুষের মধ্যে এই পার্থক্য থেকে ধারণা করা যায়, যে ধরনের স্ট্রেস ট্রিগার হিসেবে কাজ করে তা লিঙ্গভেদে ভিন্ন হতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রে সাধারণত শারীরিক স্ট্রেস যেমন অপারেশন, স্ট্রোক ইত্যাদি থেকে এটি সৃষ্টি হয়। আর নারীদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায় মানসিক চাপ যেমন—কাজ হারানো, প্রিয়জনকে হারানো ইত্যাদি থেকে।
জন হপকিন্স মেডিসিনের কার্ডিওলজিস্ট ড. ইলান উইটস্টেইন বলেন, ‘মানসিক চাপ থেকে উদ্ভূত ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোমে আক্রান্ত নারীরা তুলনামূলকভাবে ভালোভাবে সেরে ওঠেন। কিন্তু পুরুষদের ক্ষেত্রে যেহেতু এটি আরও গুরুতর স্ট্রেসে ট্রিগার হয়, তাই মৃত্যুঝুঁকিও বেশি।’
গবেষণার প্রধান লেখক ড. মোহাম্মদ মোভাহেদ বলেন, ‘পুরুষেরা সাধারণত মানসিক চাপ সামাল দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সামাজিক সহায়তা পান না। ফলে স্ট্রেস দীর্ঘস্থায়ী হলে হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি হতে থাকে, যা সেরে ওঠাকে কঠিন করে তোলে।’
রহস্য এখনো পুরোপুরি উন্মোচিত নয়
যদিও এই রোগ সম্পর্কে চিকিৎসা বিজ্ঞানে অনেক কিছুই জানা গেছে। তারপরও এখনো অনেক প্রশ্নের উত্তর বাকি রয়েছে। অনেক সময় খুব ছোট মানসিক চাপ, এমনকি হালকা অসুস্থতাও এই সিনড্রোমের কারণ হতে পারে।
উইটস্টেইনের মতে, কেউ কেউ সহজাতভাবে বেশি সংবেদনশীল হতে পারেন। উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরল থাকলে ঝুঁকি বাড়তে পারে। মেনোপজ-পরবর্তী নারীরাও বেশি ঝুঁকিতে থাকেন—সম্ভবত শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে যাওয়ার কারণে।
চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ এখনো দুরূহ
চিকিৎসকেরা বলছেন, এই সিনড্রোম নির্দিষ্টভাবে প্রতিরোধ করা বা একক কোনো ওষুধ দিয়ে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। মাঝে মাঝে বিটা ব্লকারের মতো হৃদ্রোগে ব্যবহৃত ওষুধ দেওয়া হয়, তবে ফলাফল মিশ্র। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে মেডিটেশন বা কাউন্সেলিং সহায়ক হতে পারে।
সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো—বুক ধড়ফড়ানি বা শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে তা অবহেলা না করে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া। কারণ এটি সাধারণ হার্ট অ্যাটাকের মতো উপসর্গ তৈরি করে এবং পরীক্ষা ছাড়া পার্থক্য করা কঠিন।
ড. রেনল্ডস বলেন, ‘নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়—বুকে ব্যথা মানেই স্ট্রেস। হাসপাতালেই নিশ্চিত হওয়া যায়, এটি কোন ধরনের হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা।’
এই গবেষণা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—মানসিক চাপ শুধু মনের ওপর নয়, শরীরের ওপরও সরাসরি প্রভাব ফেলে। হৃদয়ের ভেতরের সেই না দেখা ব্যথা কখনো কখনো বাস্তব হৃদ্যন্ত্রের ক্ষতিও ডেকে আনতে পারে।
একটি রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ৫০টিরও বেশি ধরনের ক্যানসার শনাক্ত করা সম্ভব বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, এই রক্ত পরীক্ষা ক্যানসার শনাক্ত করার গতিও বাড়িয়ে দেয়।
১ দিন আগেজাতিসংঘের সংজ্ঞা অনুযায়ী ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের তরুণ বলা হয়। বাংলাদেশে তরুণের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। বর্তমানে এই তরুণদের মধ্যেও বিভিন্ন রকমের নন-কমিউনিকেবল রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যাচ্ছে। তার মধ্যে ডায়াবেটিস অন্যতম। আগে মনে করা হতো, ডায়াবেটিস বয়স্ক মানুষের রোগ।
২ দিন আগেহিমালয়ের ‘হিমলুং’ পর্বত শিখরে অভিযান শুরু করতে যাচ্ছেন দেশের নারী পর্বতারোহী নুরুননাহার নিম্মি। ৩০ দিনের এই অভিযানে শনিবার (আজ) নেপালের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন তিনি। শুক্রবার (গতকাল) রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযাত্রী নুরুননাহার নিম্মির হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দেওয়া হয়।
২ দিন আগেনারীর ক্যানসারের মধ্যে স্তন ক্যানসারই বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি নির্ণয় হওয়া রোগ। ২০২২ সালে আনুমানিক ২ দশমিক ৩ মিলিয়ন নারী এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং আরও ৬ লাখ ৭০ হাজার নারী মারা গেছেন। যেখানে উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে এই রোগে ৫ বছর বেঁচে থাকার হার ৯০ শতাংশের বেশি, সেখানে ভারতে এই সংখ্যা ৬৬ শতাংশ...
২ দিন আগে