Ajker Patrika

দুর্বলতার কারণ হরমোন

ডা. মো. মাজহারুল হক তানিম
দুর্বলতার কারণ হরমোন

হরমোন হচ্ছে শরীর থেকে নিঃসৃত একধরনের রস। এটি শরীরের এক জায়গা থেকে উৎপন্ন হয়ে পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন কাজ করে। আমাদের শরীরে অনেক ধরনের হরমোন আছে। যেমন থাইরয়েড হরমোন, কর্টিসল হরমোন, টেস্টোস্টেরন হরমোন ইত্যাদি। কর্টিসল হরমোন আমাদের এড্রিনাল গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হওয়া একটি হরমোন। 

কর্টিসল হরমোনের কাজ

  • মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তায় এই হরমোনের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। তাই একে স্ট্রেস হরমোন বলে।
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকা আছে।
  • শরীরের কোনো সংক্রমণ বা প্রদাহ হলে এই হরমোন তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।
  • শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে এই হরমোন।

এ হরমোন কম থাকার লক্ষণ

  • সব সময় দুর্বল লাগা
  • মাথা ঘোরা
  • রক্তচাপ কমে যাওয়া
  • বমি বমি ভাব
  • ডায়াবেটিস কমে যাওয়া
  • ওজন কমে যাওয়া
  • শরীরের বিভিন্ন অংশ কালো হয়ে যাওয়া

কর্টিসল একটি স্টেরয়েডজাতীয় হরমোন। যাদের এ হরমোনের পরিমাণ কমে যায়, তাদের ওষুধ হিসেবে এটি দেওয়া হয়। তবে ওষুধ হিসেবে কর্টিসল অতিরিক্ত গ্রহণ করার ফলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

যা হতে পারে

  • শরীর ফুলে যেতে পারে
  • শরীরে লাল লাল ফাটা দাগ দেখা দিতে পারে
  • ব্লাড প্রেশার বেড়ে যেতে পারে
  • হাড় ক্ষয় বা অস্টিওপোরোসিস হতে পারে

মডেল: ইকরা ও বাদল। কর্টিসল হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের উপায়
কাজের চাপ, পড়াশোনার চাপ, পারিপার্শ্বিক বা পারিবারিক চাপ আমাদের মধ্যে একধরনের মানসিক সমস্যা তৈরি করে। মানসিক অশান্তিতে এই হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। কর্টিসল হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের উপায় হলো

  • যথাসম্ভব চাপমুক্ত থাকা।
  • শরীরচর্চা বা মেডিটেশন করা। এগুলো মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে।
  • অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকা। শখের কাজগুলো বা নতুন কিছু করার চেষ্টা করা।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন

  • সব সময় দুর্বল লাগলে
  • ব্লাড প্রেশার কম থাকলে
  • রক্তে লবণের মাত্রা কমে গেলে
  • মাথা ঘোরালে বা বমি বমি ভাব হলে। 

পরীক্ষা ও চিকিৎসা
চিকিৎসক আপনার শরীরের লক্ষণ অনুযায়ী রক্তে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা পরীক্ষা করতে দেবেন। রক্তে লবণের পরিমাণ ও ব্লাড সুগারের অবস্থা জানতে পরীক্ষা করতে দেবেন, প্রেশার মেপে দেখবেন। পরীক্ষার রিপোর্টে যদি আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে হরমোনের ঘাটতি থাকে, তাহলে তা বাড়ানোর জন্য হরমোনের ওষুধ দেবেন। প্রয়োজনে জ্বর বা বমি অবস্থায় এই ওষুধের ডোজ বাড়াতে হতে পারে, সেটাও বলে দেবেন।

যদি স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধের ফলে শরীর ফুলে যায় এবং লাল লাল ফাটা দাগ দেখতে পাওয়া যায়, তাহলে হরমোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

ডা. মো. মাজহারুল হক তানিম,হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত