আলমগীর আলম
নানা কারণে ঘুম নেই, মেজাজ খিটখিটে, অতিরিক্ত রাগ আর কোনো কিছুতেই প্রশান্তি নেই। এসব কারণে ইদানীং মানসিক সমস্যার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। মানসিক সমস্যা মানুষেরই হয়। বিশেষ করে যুবসমাজ এ সমস্যায় ভুগছে মারাত্মকভাবে। যে কারণেই হোক না কেন, মানসিক সমস্যা রোগী নিজে বুঝতে পারে না। তাকে বলাও যায় না। কারণ, এমন কিছু বললে রোগীর আরও বেশি রাগ বা ক্ষোভ তৈরি হয়।
মানসিক রোগ বা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। এগুলোর প্রকৃতি, তীব্রতা ও প্রভাব ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়।
মানসিক রোগের প্রকার
মানসিক রোগকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। এগুলোর মধ্যে কিছু সাধারণ ধরন হলো:
» উদ্বেগজনিত রোগ বা অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার
» সাধারণ উদ্বেগজনিত রোগ, প্যানিক ডিসঅর্ডার, সামাজিক উদ্বেগ রোগ বা সোশ্যাল অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার, ফোবিয়া, অবসেসিভকম্পালসিভ ডিসঅর্ডার বা ওসিডি, পোস্টট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার বা পিটিএসডি।
লক্ষণ: অতিরিক্ত চিন্তা, ভয়, ঘাম, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, ঘুমের সমস্যা।
মুড ডিসঅর্ডার
ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন, বাইপোলার ডিসঅর্ডার, ডিসথাইমিয়া।
লক্ষণ: দীর্ঘমেয়াদি দুঃখবোধ, উদাসীনতা, উৎসাহ হারানো, মেজাজের ওঠানামা।
সাইকোটিক ডিসঅর্ডার
সিজোফ্রেনিয়া, ডিলিউশনাল ডিসঅর্ডার।
লক্ষণ: হ্যালুসিনেশন, বিভ্রান্তি, বাস্তবতার সঙ্গে যোগাযোগ হারানো।
ব্যক্তিত্বের রোগ বা পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার
বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার, নার্সিসিস্টিক পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার, অ্যান্টিসোশ্যাল পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার।
লক্ষণ: সম্পর্কে অসুবিধা, আবেগ নিয়ন্ত্রণে সমস্যা, অস্বাভাবিক আচরণ।
খাওয়ার রোগ বা ইটিং ডিসঅর্ডার
অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা, বুলিমিয়া নার্ভোসা, বিনজ ইটিং ডিসঅর্ডার।
লক্ষণ: অস্বাভাবিক খাওয়ার অভ্যাস, শরীরের চেহারা নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা।
আসক্তি-সংক্রান্ত রোগ
মাদকাসক্তি, অ্যালকোহল-নির্ভরতা।
লক্ষণ: পদার্থের ওপর নির্ভরতা, জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিক অবহেলা।
নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার
অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার, অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার।
লক্ষণ: সামাজিক যোগাযোগে সমস্যা, মনোযোগের ঘাটতি, অতিরিক্ত সক্রিয়তা।
ডিমেনশিয়া ও অন্যান্য জ্ঞানগত রোগ
আলঝেইমার রোগ, ভাস্কুলার ডিমেনশিয়া।
লক্ষণ: স্মৃতিশক্তি হ্রাস, চিন্তাশক্তির সমস্যা।
মানসিক রোগ প্রতিরক্ষায় করণীয়
» সুস্থ জীবনযাপনের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করুন। প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা বা যোগব্যায়াম মানসিক চাপ কমায়।
» পুষ্টিকর, ভিটামিন, মিনারেল এবং ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার খান। এগুলো মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
» পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন। প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম মানসিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখে।
» মেডিটেশন বা গভীর শ্বাসপ্রশ্বাসের কৌশল রপ্ত করুন। এগুলো উদ্বেগ কমায়।
» গান শোনা বা শেখা, ভ্রমণ, পড়াশোনা করা বা বাগান করার মতো শখের যেকোনো কাজ করুন। এগুলো মানসিক শান্তি দেয়।
» কাজের চাপ কমাতে দৈনন্দিন রুটিন ঠিক করুন।
» পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান। এটি মানসিক প্রশান্তি দেবে।
» মানসিক রোগের প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে জানুন। এ জন্য প্রয়োজনে মনোবিজ্ঞানী বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া।
» মাদক এড়ানো, অ্যালকোহল ও ধূমপান এড়িয়ে চলুন। এগুলো মানসিক রোগসহ বিভিন্ন প্রকার স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
» ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক অনুশীলন করুন। মানসিক প্রশান্তি মিলবে।
» নিজের চিন্তা ও আবেগ লিখে ফেলুন। এটি মানসিক চাপ কমায়। সেই সঙ্গে প্রগ্রেসিভ মাসল রিল্যাক্সেশন বা গাইডেড ইমেজেরি বা শিথিল হওয়ার জন্য মেডিটেশন, নিজের প্রতি ভালোবাসা তৈরি করা এবং নেতিবাচক স্বকথোপকথন এড়িয়ে চলুন।
» নিজের জন্য রুটিন তৈরি করুন। সেগুলোর মধ্যে রাখুন নিয়মিত সময়ে খাওয়া, ঘুমানো এবং কাজ করা। ছোট ছোট অর্জনযোগ্য লক্ষ্য নির্ধারণ করুন, আত্মবিশ্বাস বাড়বে এতে।
মানসিক রোগকে শারীরিক রোগের মতোই গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এটি দুর্বলতা নয়। প্রত্যেকের সমস্যা ও সমাধান ভিন্ন। তাই চিকিৎসা ব্যক্তিগতভাবে নির্ধারিত হওয়া উচিত।
মানসিক রোগের ধরন অনেক এবং প্রতিটির চিকিৎসা ও প্রতিরক্ষার পদ্ধতি ভিন্ন। সঠিক সময়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ, সুস্থ জীবনযাপন এবং সামাজিক সহায়তার মাধ্যমে মানসিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। যদি আপনি বা আপনার কাছের কেউ মানসিক সমস্যায় ভোগেন, তবে দ্রুত একজন মনোবিজ্ঞানী বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
পরমর্শ দিয়েছেন: খাদ্যপথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র
নানা কারণে ঘুম নেই, মেজাজ খিটখিটে, অতিরিক্ত রাগ আর কোনো কিছুতেই প্রশান্তি নেই। এসব কারণে ইদানীং মানসিক সমস্যার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। মানসিক সমস্যা মানুষেরই হয়। বিশেষ করে যুবসমাজ এ সমস্যায় ভুগছে মারাত্মকভাবে। যে কারণেই হোক না কেন, মানসিক সমস্যা রোগী নিজে বুঝতে পারে না। তাকে বলাও যায় না। কারণ, এমন কিছু বললে রোগীর আরও বেশি রাগ বা ক্ষোভ তৈরি হয়।
মানসিক রোগ বা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। এগুলোর প্রকৃতি, তীব্রতা ও প্রভাব ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়।
মানসিক রোগের প্রকার
মানসিক রোগকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। এগুলোর মধ্যে কিছু সাধারণ ধরন হলো:
» উদ্বেগজনিত রোগ বা অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার
» সাধারণ উদ্বেগজনিত রোগ, প্যানিক ডিসঅর্ডার, সামাজিক উদ্বেগ রোগ বা সোশ্যাল অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার, ফোবিয়া, অবসেসিভকম্পালসিভ ডিসঅর্ডার বা ওসিডি, পোস্টট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার বা পিটিএসডি।
লক্ষণ: অতিরিক্ত চিন্তা, ভয়, ঘাম, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, ঘুমের সমস্যা।
মুড ডিসঅর্ডার
ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন, বাইপোলার ডিসঅর্ডার, ডিসথাইমিয়া।
লক্ষণ: দীর্ঘমেয়াদি দুঃখবোধ, উদাসীনতা, উৎসাহ হারানো, মেজাজের ওঠানামা।
সাইকোটিক ডিসঅর্ডার
সিজোফ্রেনিয়া, ডিলিউশনাল ডিসঅর্ডার।
লক্ষণ: হ্যালুসিনেশন, বিভ্রান্তি, বাস্তবতার সঙ্গে যোগাযোগ হারানো।
ব্যক্তিত্বের রোগ বা পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার
বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার, নার্সিসিস্টিক পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার, অ্যান্টিসোশ্যাল পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার।
লক্ষণ: সম্পর্কে অসুবিধা, আবেগ নিয়ন্ত্রণে সমস্যা, অস্বাভাবিক আচরণ।
খাওয়ার রোগ বা ইটিং ডিসঅর্ডার
অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা, বুলিমিয়া নার্ভোসা, বিনজ ইটিং ডিসঅর্ডার।
লক্ষণ: অস্বাভাবিক খাওয়ার অভ্যাস, শরীরের চেহারা নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা।
আসক্তি-সংক্রান্ত রোগ
মাদকাসক্তি, অ্যালকোহল-নির্ভরতা।
লক্ষণ: পদার্থের ওপর নির্ভরতা, জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিক অবহেলা।
নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার
অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার, অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার।
লক্ষণ: সামাজিক যোগাযোগে সমস্যা, মনোযোগের ঘাটতি, অতিরিক্ত সক্রিয়তা।
ডিমেনশিয়া ও অন্যান্য জ্ঞানগত রোগ
আলঝেইমার রোগ, ভাস্কুলার ডিমেনশিয়া।
লক্ষণ: স্মৃতিশক্তি হ্রাস, চিন্তাশক্তির সমস্যা।
মানসিক রোগ প্রতিরক্ষায় করণীয়
» সুস্থ জীবনযাপনের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করুন। প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা বা যোগব্যায়াম মানসিক চাপ কমায়।
» পুষ্টিকর, ভিটামিন, মিনারেল এবং ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার খান। এগুলো মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
» পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন। প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম মানসিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখে।
» মেডিটেশন বা গভীর শ্বাসপ্রশ্বাসের কৌশল রপ্ত করুন। এগুলো উদ্বেগ কমায়।
» গান শোনা বা শেখা, ভ্রমণ, পড়াশোনা করা বা বাগান করার মতো শখের যেকোনো কাজ করুন। এগুলো মানসিক শান্তি দেয়।
» কাজের চাপ কমাতে দৈনন্দিন রুটিন ঠিক করুন।
» পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান। এটি মানসিক প্রশান্তি দেবে।
» মানসিক রোগের প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে জানুন। এ জন্য প্রয়োজনে মনোবিজ্ঞানী বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া।
» মাদক এড়ানো, অ্যালকোহল ও ধূমপান এড়িয়ে চলুন। এগুলো মানসিক রোগসহ বিভিন্ন প্রকার স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
» ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক অনুশীলন করুন। মানসিক প্রশান্তি মিলবে।
» নিজের চিন্তা ও আবেগ লিখে ফেলুন। এটি মানসিক চাপ কমায়। সেই সঙ্গে প্রগ্রেসিভ মাসল রিল্যাক্সেশন বা গাইডেড ইমেজেরি বা শিথিল হওয়ার জন্য মেডিটেশন, নিজের প্রতি ভালোবাসা তৈরি করা এবং নেতিবাচক স্বকথোপকথন এড়িয়ে চলুন।
» নিজের জন্য রুটিন তৈরি করুন। সেগুলোর মধ্যে রাখুন নিয়মিত সময়ে খাওয়া, ঘুমানো এবং কাজ করা। ছোট ছোট অর্জনযোগ্য লক্ষ্য নির্ধারণ করুন, আত্মবিশ্বাস বাড়বে এতে।
মানসিক রোগকে শারীরিক রোগের মতোই গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এটি দুর্বলতা নয়। প্রত্যেকের সমস্যা ও সমাধান ভিন্ন। তাই চিকিৎসা ব্যক্তিগতভাবে নির্ধারিত হওয়া উচিত।
মানসিক রোগের ধরন অনেক এবং প্রতিটির চিকিৎসা ও প্রতিরক্ষার পদ্ধতি ভিন্ন। সঠিক সময়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ, সুস্থ জীবনযাপন এবং সামাজিক সহায়তার মাধ্যমে মানসিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। যদি আপনি বা আপনার কাছের কেউ মানসিক সমস্যায় ভোগেন, তবে দ্রুত একজন মনোবিজ্ঞানী বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
পরমর্শ দিয়েছেন: খাদ্যপথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র
অফিসে বারবার ঘুম পেলে তা কাজের ওপর বড় প্রভাব ফেলে। ডেডলাইন মিস করা, কাজ জমে যাওয়া, এমনকি চাকরিও ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ঘুমের সমস্যা থাকলে চিকিৎসা জরুরি। তবে কিছু বিষয় মেনে চললে কাজের সময় ঘুম পাওয়া থেকে রেহাই পেতে পারেন।
২১ ঘণ্টা আগেবাতরোগ সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের সমস্যা বলে বিবেচিত। কিন্তু শিশুরাও এতে আক্রান্ত হতে পারে। অনেক সময় অভিভাবকেরা ভাবেন, এই বয়সে এমন ব্যথা বা অস্বস্তি সাময়িক। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, অনেক শিশু দীর্ঘস্থায়ী বাতরোগে ভোগে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই রোগকে বলা হয় জুভেনাইল ইডিওপ্যাথিক আর্থ্রারাইটিস...
২১ ঘণ্টা আগেশরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে তাকে জ্বর বলা হয়। জ্বর আসলে কোনো রোগ নয়, রোগের উপসর্গ। ফলে জ্বর হওয়াকে শরীরের ভেতরের কোনো রোগের সতর্কবার্তা বলা যেতে পারে।
২১ ঘণ্টা আগেডিম প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলের অন্যতম উৎস। তবে এর উপকার পেতে হলে রান্নার পদ্ধতির দিকে নজর দেওয়া জরুরি। ভুল পদ্ধতিতে ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়।
২১ ঘণ্টা আগে