Ajker Patrika

বাইডেনের ১০০ দিন

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৩: ২১
বাইডেনের ১০০ দিন

ঢাকা: মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন পার করলেন ১০০ দিন। যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো প্রেসিডেন্টের জন্য প্রথম ১০০ দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ের মধ্যে বোঝা যায় নতুন প্রশাসনের নীতি কী ধরনের হবে।

‘এ ফার্স্ট হান্ড্রেড ডে স্ট্যান্ডার্ড’ বা মানসম্মত প্রথম ১০০ দিনের পরিকল্পনা আসে ১৯৩৩ সালে প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডিলানো রুজভেল্টের মাথা থেকে। তারপর থেকে এটি নিয়মে পরিণত হয়েছে। এ কারণে অভ্যন্তরীণ তো বটেই, বহির্বিশ্বও নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রথম ১০০ দিনের দিকে তাকিয়ে ছিল।

দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই অভিবাসন এবং কোভিডের প্রভাবে অর্থনৈতিক বিপর্যয় সংক্রান্ত নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করতে হচ্ছে বাইডেনকে। এ অবস্থায় মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে প্রথমবার ভাষণ দিলেন তিনি। এদিন বক্তব্যের শুরুতেই দৃপ্তকণ্ঠে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র আবারও এগিয়ে যাচ্ছে।

সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে স্থানীয় সময় ২৮ এপ্রিল (বুধবার) কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বক্তব্য দেন বাইডেন। রাত ৯টা ৬ মিনিটে শুরু করে ১০টা ১১ মিনিটে বক্তৃতা শেষ করেন। প্রথা অনুযায়ী তিনি বক্তৃতা দেওয়ার আগে-পরে আইনপ্রণেতাদের দিকে এগিয়ে যান। মাস্ক পরে আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে কিছুটা সময় কুশলবিনিময় করেন। বাইডেনের এ বক্তব্যে উত্থাপিত কিছু দাবি ফ্যাক্টচেক করেছে আজকের পত্রিকা।

বাইডেনের দাবি:  ১০০ দিনে ২২০ মিলিয়ন কোভিড টিকাদান

শুরুতে ১০০ মিলিয়ন কোভিড ভ্যাকসিন বিতরণের লক্ষ্য থাকলেও মার্চের শেষ দিকে বাইডেন এই লক্ষ্যকে দ্বিগুণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি জানি, এটা একটা উচ্চাকাঙ্ক্ষা, অন্য কোনো দেশ এর ধারেকাছেও নেই’।  

সূত্র: আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডাটা

ফ্যাক্টচেক

ইউএস সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোলের (সিডিসি) দেওয়া তথ্যমতে যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত ২৩৫ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন বিতরণ করেছে । এর মধ্যে ১৬ মিলিয়ন ট্রাম্প প্রশাসনের সময় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জনসংখ্যা ও ভ্যাকসিনের অনুপাতে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষ দেশ নয়। এ অনুপাতে সবচেয়ে এগিয়ে ইসরায়েল, এরপর যুক্তরাজ্য এবং তৃতীয় অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র।

বাইডেনের দাবি: নথিপত্রহীন অভিবাসন শীতকালে বাড়ে

মার্কিন অভিবাসন বিভাগ এখন থেকে আর ‘অবৈধ অভিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার করবে না। নেতিবাচক এই শব্দের পরিবর্তে এখন ‘নথিপত্রহীন অভিবাসী’ বলা হবে। সীমান্ত কর্তৃপক্ষকে বাইডেন প্রশাসন থেকে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মেক্সিকোর সাথে দক্ষিণ সীমান্তে নথিপত্রহীন অভিবাসন বেড়ে যাওয়ায় বাইডেন সরকার এরই মধ্যে সমালোচিত। এর আগেও মার্চ মাসে এক সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন, ‘প্রতি বছরই শীতকালে, বিশেষ করে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে এটি বেড়ে যায়।‘

ফ্যাক্টচেক

মার্কিন অভিবাসন বিভাগ বা সীমান্ত কর্তৃপক্ষের মাসিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে ২০২১ সালের জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে যথাক্রমে ৭৮ হাজার ৪৪২ এবং ১ লাখ ৪৪১ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী দেখা গেছে। ২০২০ সালে যা ছিল মাত্র ৩৬ হাজার। বাইডেনের ওই দাবির পর মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৭২ হাজার ৩৩১ অভিবাসনপ্রত্যাশী রেকর্ড করা হয়। ২০১৯–এর শীতে এই সংখ্যা দেড় লাখের কাছাকাছি গেলেও ২০১৮ সালে ৫০ হাজারেরও কম ছিল। 

নথিপত্রবিহীন অভিবাসন রুখতে তৎপর মার্কিন সেনারা বাইডেনের দাবি: বৈশ্বিক জলবায়ুতে কার্বন গ্যাস নিঃসরণে যুক্তরাষ্ট্রের অবদান ১৫ শতাংশেরও কম।

কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়, চীনের পর যুক্তরাষ্ট্রই বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণকারী দেশ। ২০৩০ সালের মধ্যে তাদের ৮০০ বিলিয়ন ডলার আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিলে দিতে হবে, তবেই তা ন্যায্য পাওনা হবে।

গত ২২ এপ্রিল আন্তর্জাতিক এক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে চলতি দশকেই। এসময় তিনি ২০৩০ সালের মধ্যে নিজের দেশের কার্বন নিঃসরণের হার ২০০৫ সালের তুলনায় ৫০–৫২ শতাংশ কমানোর প্রতিশ্রুতি দেন।

সূত্র: আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডাটাফ্যাক্টচেক

এটা সত্যি, কার্বন নিঃসরণে যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় অবস্থানে এবং তা ১৫ শতাংশেরও কম। গত দুই দশকে চীনের অর্থনৈতিক উত্থান কার্বন নিঃসরণে তাদের শীর্ষস্থানে আসীন করেছে। কিন্তু মোট জনসংখ্যা অনুপাতে অবদান হিসাব করলে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের কার্বন নিঃসরণ চীন এবং বৈশ্বিক গড়ের চাইতে অনেক বেশি। এই তালিকায় আরও আছে যথাক্রমে ইন্দোনেশিয়া, ভারত ও পাকিস্তান।

সূত্র: আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডাটাবাইডেনের দাবি: যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমেই বেড়ে চলেছে হিস্পানিক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা। জনসংখ্যা বৃদ্ধি হার এ গোষ্ঠীর মধ্যেই সর্বোচ্চ।

সূত্র: পিউ রিসার্চ সেন্টার, ইউএস সেনসাস ব্যুরো ফ্যাক্টচেক

হিস্পানিক আমেরিকানরা গত দুই দশকে দ্রুত বর্ধমান জনসংখ্যার দিক দিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। পরিসংখ্যানে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধমান জনগোষ্ঠী এশীয় আমেরিকান।

সূত্র: বিবিসি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা factcheck@ajkerpatrika.com
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নয়াদিল্লিতে নতুন হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহ, ৩ মাস সময় নিল ভারত

খেজুরে অতি মুনাফা, হতাশ ক্রেতা

চাপে পড়ে ৫টি বাস রিকুইজিশন দিয়েছেন পিরোজপুরের ডিসি, সরকারের হস্তক্ষেপ নেই: প্রেস সচিব

কলাবাগানে সাবেক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের মরদেহ উদ্ধার

রাতে স্বামীর জন্মদিন উদ্‌যাপন, সকালে নদীতে মিলল নববধূর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত