Ajker Patrika

স্বাভাবিক প্রসবের দৃষ্টান্ত

এস এম রকি, খানসামা (দিনাজপুর)
আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২২, ১৫: ৩৭
Thumbnail image

স্বাভাবিক প্রসব করানোর প্রতি আগ্রহী করা হচ্ছে প্রসূতি নারীদের। দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও ধাত্রীদের সহযোগিতার কারণে এর প্রবণতা বাড়ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, স্বাভাবিক প্রসবের ভীতি দূর করতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে নিয়মিত প্রসূতি নারীদের খোঁজ নেওয়া হয় এবং বিনা মূল্যে দেওয়া হয় প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা। স্বাভাবিক প্রসবে প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুঝুঁকি কম থাকে। বাড়তি অর্থও ব্যয় হয় না।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে ৮৭৫টি। প্রসব-পূর্ববর্তী সেবা নিয়েছেন প্রায় ৩ হাজার ২০০ এবং প্রসব-পরবর্তী সেবা নিয়েছেন ৮০০ জন। ২০২১ সালে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে ১ হাজার ৩৮০টি, যা আগের যেকোনো বছরের তুলনায় বেশি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রসূতি নারীদের বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে ‘প্রসূতি কার্ড’। এরপর প্রসব না হওয়া পর্যন্ত বিনা মূল্যে দেওয়া হয় পরামর্শ ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা। এ ছাড়া হটলাইনের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পরামর্শ, বিনা মূল্যে ওষুধ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার কারণে প্রসূতিসেবায় নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। প্রসূতি কার্ডের মাধ্যমে সেবাদান ও স্বাভাবিক প্রসব বাড়াতে বিভিন্ন কৌশলে প্রচার চালাচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এ ছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরাও বিভিন্ন স্থানে গিয়ে কাউন্সেলিং করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাভাবিক প্রসব হওয়া সালমা বেগম বলেন, ‘ব্যথা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি হই। অন্য কোথাও ভর্তি হলে হয়তো অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রসব করানো হতো। আমরা তাঁর জন্য প্রস্তুতও ছিলাম। তবে এখানকার চিকিৎসক, নার্স ও ধাত্রীদের পরামর্শে আমি সাহস পাই এবং আমার প্রসব স্বাভাবিক হয়েছে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ধাত্রী রমা রায় বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নানা উদ্যোগের কারণে স্বাভাবিক প্রসবের সংখ্যা বাড়ছে এবং স্বাভাবিক প্রসবে প্রসূতিদেরও আগ্রহ বাড়ছে। কারণ, হাসপাতালে নিরাপদে স্বাভাবিক প্রসব করানো হলে প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুঝুঁকি থাকে না। তা ছাড়া এভাবে প্রসবে বাড়তি কোনো অর্থও ব্যয় হয় না।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও)  শামসু্দ্দোহা মুকুল বলেন, ‘আমাদের কাছে উপজেলার প্রসূতি নারীদের একটি ডেটাবেইস রয়েছে।

নিয়মিত তাঁদের খোঁজখবর নেওয়া হয় এবং প্রসব-পূর্ববর্তী ও পরবর্তী চিকিৎসা ও পরামর্শ দেওয়া হয়। তাই নিয়মিত স্বাভাবিক প্রসবের সংখ্যা বাড়ছে। স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় উপহারও দেওয়া হয়। এই কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ধন্যবাদ জানাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত