Ajker Patrika

প্রতিটি বাড়িই যেন ক্ষুদ্র পোশাক কারখানা

রেজা মাহমুদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
প্রতিটি বাড়িই যেন ক্ষুদ্র পোশাক কারখানা

নীলফামারীর সৈয়দপুরে গড়ে উঠেছে দুই শতাধিক ক্ষুদ্র পোশাক কারখানা। এগুলো দেখে মনে হয়, প্রতিটি বাড়িই যেন একেকটি কারখানা। যেখানে ঝুট কাপড় থেকে পোশাক তৈরি করা হচ্ছে। এগুলো স্থানীয় বাজারে সরবরাহের পাশাপাশি রপ্তানি করা হয় ভারত, ভুটান ও নেপালে।

মালিকদের সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তান আমল থেকেই সৈয়দপুরে ঝুট কাপড় থেকে নানা ধরনের পোশাক তৈরি হয়ে আসছে। তবে ২০০২ সালে রপ্তানিমুখী ক্ষুদ্র গার্মেন্টস মালিক সমিতি নামের সংগঠন গড়ে ওঠার পর এর পরিধি বাড়তে থাকে।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন, শহরের মুন্সীপাড়া, নয়াটোলা, হাতিখানা, মিস্ত্রিপাড়া, নতুন বাবুপাড়া, পুরাতন বাবুপাড়া, গোলাহাট, রাবেয়া মোড়, ঘোড়াঘাট, বাঁশবাড়ী, নিয়ামতপুরসহ আটকে পড়া পাকিস্তানিদের এলাকায় ঘরে ঘরে গড়ে উঠেছে ক্ষুদ্র পোশাক কারখানা। প্রতিটি কারখানায় দুটি থেকে সর্বোচ্চ ৪৫টি মেশিন আছে। এতে তৈরি হচ্ছে ট্রাউজার, শর্টস, জ্যাকেট, টি-শার্ট, জিনসের প্যান্টসহ নানা পোশাক।

মুন্সীপাড়ার গোলাম রাব্বানী জানান, দুটি সেলাই মেশিন নিয়ে নিজের ঘরেই ঝুট কাপড় থেকে পোশাক তৈরি শুরু করেছিলেন। এখন তাঁর মেশিন আছে ২৫টি। মাসে আয় হয় ৩৫ হাজার টাকার মতো।

ব্যবসায়ীরা পোশাক তৈরি করতে ঢাকার মিরপুর, কালীগঞ্জ, সাভার, গাজীপুর, টঙ্গী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার পোশাক কারখানা থেকে ঝুট কাপড় কিনে আনেন; পাশাপাশি সুতা, বোতাম, ইলাস্টিক, স্টিকার ও পুরোনো সেলাই মেশিনও সংগ্রহ করেন।

ঝুট কাপড় ও উপকরণগুলো কেনা হয় কেজি হিসেবে। এগুলোর মধ্যে প্রতি কেজি ব্লেজারের ঝুট ৫০ থেকে ১৫০, জ্যাকেটের ঝুট ১০০ থেকে ১৫০, গ্যাবার্ডিনের ঝুট ৮০ থেকে ১৫০, জিনসের ঝুট ৭০ থেকে ১৫০ টাকায় কিনতে হয়।

এই শিল্পে অর্থায়ন এবং মালিক ও কারিগরদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিচ্ছে এসএমই ফাউন্ডেশন। তবে মালিকেরা জানান, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এসব কারখানাকে সরকার যদি নির্দিষ্ট জায়গা দিয়ে একটি পল্লি করে দেয়, তাহলে এ শিল্পের আরও সম্প্রসারণ ঘটত এবং রপ্তানি আয় বাড়ত।

রপ্তানিমুখী ক্ষুদ্র গার্মেন্টস মালিক সমিতির সভাপতি আখতার হোসেন খান জানান, করোনায় সেভাবে রপ্তানি আদেশ না পাওয়ায় সৈয়দপুর শহরের দুই শতাধিক ক্ষুদ্র কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি এসব কারখানা আবার চালু হতে শুরু করেছে। কারণ, ক্রয়াদেশ আসছে। শীত সামনে রেখে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে কারখানাগুলো।

আখতার হোসেন বলেন, ‘ঝুট কাপড় চার-পাঁচ হাত ঘুরে আমাদের কাছে আসে। সরাসরি গার্মেন্টস থেকে কিনতে পারলে আরও কমে কিনতে পারতাম। গত বছরও বাচ্চাদের জ্যাকেট তৈরি করা যেত ১০০ টাকায়, এখন খরচ হয় ১৫০ টাকা। বড়দের জ্যাকেট তৈরিতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা খরচ পড়ে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত