Ajker Patrika

সড়কে জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগ

শাহাদাত হোসেন সায়মন, গজারিয়া (মুন্সিগঞ্জ)
আপডেট : ২১ জুন ২০২২, ১২: ৫২
সড়কে জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগ

টানা বৃষ্টিতে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। সর্বশেষ গতকাল সোমবার বিকেলে দুই ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিতে ভবেরচর ইউনিয়নের আনারপুরা বাসস্ট্যান্ড থেকে মাথাভাঙ্গা সড়কের আনারপুরা সরকার বাড়ির সামনে প্রায় ২০০ মিটার সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তা কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। নালা না থাকায় ময়লা-আবর্জনা রাস্তায় উঠে আসছে। রাস্তায় হাঁটুপানি জমে থাকে। আনারপুরা ১ ওয়ার্ডের সরকার বাড়ি থেকে সিকদার বাড়ি পর্যন্ত ২০০ মিটার রাস্তাটির সংস্কারকাজ না হওয়ায় শত শত মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। রাস্তাটিতে নালা স্থাপন করে সংস্কারের দাবি স্থানীয়দের।

জানা যায়, ভারী বালুর গাড়ি চলাচলের কারণে পাকা রাস্তা কাঁচা রাস্তায় পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে উত্তরশাহপুর, মিরেরগাঁও, টেঙ্গারচর, বৈদ্যারগাঁও, মাথাভাঙ্গা, মিরপুর, উত্তর ফুলদী, রসুলপুরসহ ১০ গ্রামের মানুষকে চলাচল করতে হয় অসহনীয় ভোগান্তি নিয়ে। সড়কের বিভিন্ন অংশে দেখা দিয়েছে বড় বড় গর্ত। এগুলোতে পানি জমে রয়েছে। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। আশপাশের কয়েকটি কলকারখানার হাজার হাজার শ্রমিকের চলাচলের একমাত্র সড়ক এটি। তাঁদের বেশির ভাগ সময় হেঁটে চলাচল করতে হয়। এতে সঠিক সময়ে কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারছেন না শ্রমিকেরা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এলাকার কিছু অসাধু বালু ব্যবসায়ী ভারী ডাম্প ট্রাকে মাটি আনা-নেওয়া করেন। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তা ভেঙে গেছে।

আনারপুরা গ্রামের বাসিন্দা জামাল মিয়া বলেন, ‘এই সড়কে এখন আর গাড়ি চলাচল করতে পারে না। সড়ক ভেঙে গেছে ও বৃষ্টি হলে হাঁটুপানি হয়ে যায়। রাস্তায় এখন সব সময় জলাবদ্ধতা থাকে।’

মোস্তফা মিয়া নামে গ্রামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘সড়ক দিয়ে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করেন। বর্তমানে কী একটা অবস্থা, গাড়ি তো দূরের কথা হেঁটে চলাচল করা মুশকিল।’

এ ছাড়া রাস্তাটি দিয়ে গজারিয়া উপজেলা, গজারিয়া সরকারি কলেজে, ভাটেরচর বাজারে, ভাটেরচর দে এ মান্নান পাইলট উচ্চবিদ্যালয় ও আনারপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও হাজী কেরামত উল্লাহ উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ও ভাটেরচর মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থী যাতায়াত করে। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটিতে জলাবদ্ধ বৃষ্টির পানিতে থাকার কারণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ সময় পার হলেও গ্রামীণ এই অবহেলিত মরণফাঁদ রাস্তায়।

মোটরসাইকেল চালক আসলাম বলেন, ‘বলেন সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে দিনে কোনোরকম চলাচল করলেও রাতে সম্ভব না।’

কলেজ শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, ‘আমাদের প্রায় প্রতিনিয়ত এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। রাস্তাটির বেহাল দশা গত কয়েক মাস ধরে। অতি দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করা না হলে এখানে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটারও সম্ভাবনা রয়েছে। তাই জনস্বার্থে দ্রুত রাস্তাটি মেরামত করা প্রয়োজন।’

ভবেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহিদ মো. লিটন বলেন, বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তা মেরামত করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বড় বড় গর্ত ভরাট করে চলাচলের উপযোগী করা হবে।’

এলজিইডির গজারিয়া উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, কয়েক হাজার মানুষ এ রাস্তাটি ব্যবহার করেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সবকিছু ঠিক থাকলে এ অর্থবছরে রাস্তাটির নির্মাণকাজ শুরু করা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত