মুহাম্মদ জাভেদ হাকিম
ভ্রমণের নেশা একবার যার মনন-মস্তিষ্কে জেঁকে বসবে, তাকে আর ফেরায় কে? জাগতিক সব দায়দায়িত্ব পালনের ফাঁকফোকরেই বেরিয়ে পড়বে, নয়নাভিরাম প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভে। এই লাভ টাকার অঙ্কের অনেক ঊর্ধ্বে। সে রকম লাভের লোভেই প্রকৃতির মধ্যে ডুবে থাকা বিদ্যাপীঠ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাওয়া। প্রতিবছর এ সময়টায় ক্যাম্পাসের ভেতরে থাকা জলাশয়গুলোতে পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে। গত বছরের চেয়ে এ বছর পাখির বিচরণ অনেক বেশি। ১০-১২টি জলাশয়ের মধ্যে ৪-৫টিতে পাখি দেখা যায় বেশি।
দর্শনার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পার্কিংয়ের দুই ধারের জলাশয়ে সম্ভবত সবচেয়ে কাছাকাছি ও বেশি পাখি দেখে মুগ্ধ হবেন। সেই সুদূর সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল ও চীন থেকে আসা পরিযায়ী পাখির কিচিরমিচির আওয়াজে সারাক্ষণ মুখরিত থাকে চারপাশ। ক্যাম্পাসজুড়ে পাখি আর প্রকৃতি মিলেমিশে একাকার। এসব জলাশয়ে হাঁস প্রজাতির সরালি, পচার্ড, ফ্লাই ফেচার, গার্গেনি, ছোট জিরিয়া, মুরগ্যাধি, কোম্বডাক, পাতারি এবং অন্যান্য প্রজাতির মধ্যে মানিকজোড়, কলাই, ছোট নগ, জলনাগতা, খঞ্জনা, চিতাটুপি জলপিপি ও লালগুড়গুটি অন্যতম। এ ছাড়া সচরাচর জলময়ূরী, ডুবুরি, খোঁপা ডুবুরি, ছোট পানকৌড়ি ও বড় পানকৌড়ি পাখির দেখা মেলে এখানে।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিবছর জানুয়ারির প্রথম ও দ্বিতীয় শুক্রবার কর্তৃপক্ষ পাখিমেলার আয়োজন করে থাকে। তখন পাখিপ্রেমীরা ২০-২৫ প্রজাতির পরিযায়ী পাখি সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলের আবাসিক ছাত্র আবু রাইহান রিয়াদের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা গেল, ক্যাম্পাস এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরিযায়ী পাখির নিরাপত্তার বিষয়ে বরাবরের মতোই যথেষ্ট সচেতন। ফলে এবার নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে থেকে এসব জলাশয় পরিযায়ী পাখির আগমনে মুখরিত হয়েছে। এই শীতে যাঁরা বাইক্কাবিল কিংবা টাঙ্গুয়ার হাওরে যেতে পারবেন না, তাঁরা অনায়াসে পাখি দেখার শখ মিটিয়ে আসতে পারেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাস ঘুরে। পাখি দেখা শেষে ঢুঁ মারতে পারেন ক্যাম্পাসের ভেতর বোটানিক্যাল গার্ডেনে। বিরল প্রজাতির বাঁশঝাড় দেখতে পাবেন সেখানে। গার্ডেনের ভেতর হ্রদের সৌন্দর্যটাও অসাধারণ। এই শুষ্ক সময়েও লেকের টলটলে পানিতে মুখচ্ছবি ভেসে উঠবে।
ক্যাম্পাস ঘুরে চলে যেতে পারেন সাভার বাজার রোড হয়ে নামাবাজার ব্রিজের অপর প্রান্ত রূপনগর। ভ্যানে চড়ে যেতে পারেন কাজিয়ালকুণ্ড গ্রামে দিগন্তবিস্তৃত সরিষা ফুলের খেত দেখতে। পথের দুধারে দৃষ্টিনন্দন বনায়ন। বংশী নদীর অপরূপ সৌন্দর্য আপনাকে করবে বিমুগ্ধ। ঢাকার পাশে
অথচ কোলাহলমুক্ত আবহমান বাংলার গ্রামীণ পরিবেশ–সব মিলিয়ে সুন্দর একটি দিন কাটিয়ে আসতে পারে।
সরষেখেত দেখার জন্য সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টার মধ্যে গেলে সূর্যের আলোয় সরষে ফুল দেখতে বেশ লাগবে। এরপর কাজিয়ালকুণ্ড খেয়াঘাট থেকে ট্রলারে বংশী নদী পার হয়ে চলে যেতে পারবেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বেলা ৩টার পর থেকে ক্যাম্পাসের জলাশয়ে পাখি দেখার সুবর্ণ সময়।
লেখক: চিফ অর্গানাইজার, দে-ছুট ভ্রমণ সংঘ
জীবনধারা সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
ভ্রমণের নেশা একবার যার মনন-মস্তিষ্কে জেঁকে বসবে, তাকে আর ফেরায় কে? জাগতিক সব দায়দায়িত্ব পালনের ফাঁকফোকরেই বেরিয়ে পড়বে, নয়নাভিরাম প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভে। এই লাভ টাকার অঙ্কের অনেক ঊর্ধ্বে। সে রকম লাভের লোভেই প্রকৃতির মধ্যে ডুবে থাকা বিদ্যাপীঠ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাওয়া। প্রতিবছর এ সময়টায় ক্যাম্পাসের ভেতরে থাকা জলাশয়গুলোতে পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে। গত বছরের চেয়ে এ বছর পাখির বিচরণ অনেক বেশি। ১০-১২টি জলাশয়ের মধ্যে ৪-৫টিতে পাখি দেখা যায় বেশি।
দর্শনার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পার্কিংয়ের দুই ধারের জলাশয়ে সম্ভবত সবচেয়ে কাছাকাছি ও বেশি পাখি দেখে মুগ্ধ হবেন। সেই সুদূর সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল ও চীন থেকে আসা পরিযায়ী পাখির কিচিরমিচির আওয়াজে সারাক্ষণ মুখরিত থাকে চারপাশ। ক্যাম্পাসজুড়ে পাখি আর প্রকৃতি মিলেমিশে একাকার। এসব জলাশয়ে হাঁস প্রজাতির সরালি, পচার্ড, ফ্লাই ফেচার, গার্গেনি, ছোট জিরিয়া, মুরগ্যাধি, কোম্বডাক, পাতারি এবং অন্যান্য প্রজাতির মধ্যে মানিকজোড়, কলাই, ছোট নগ, জলনাগতা, খঞ্জনা, চিতাটুপি জলপিপি ও লালগুড়গুটি অন্যতম। এ ছাড়া সচরাচর জলময়ূরী, ডুবুরি, খোঁপা ডুবুরি, ছোট পানকৌড়ি ও বড় পানকৌড়ি পাখির দেখা মেলে এখানে।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিবছর জানুয়ারির প্রথম ও দ্বিতীয় শুক্রবার কর্তৃপক্ষ পাখিমেলার আয়োজন করে থাকে। তখন পাখিপ্রেমীরা ২০-২৫ প্রজাতির পরিযায়ী পাখি সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলের আবাসিক ছাত্র আবু রাইহান রিয়াদের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা গেল, ক্যাম্পাস এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরিযায়ী পাখির নিরাপত্তার বিষয়ে বরাবরের মতোই যথেষ্ট সচেতন। ফলে এবার নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে থেকে এসব জলাশয় পরিযায়ী পাখির আগমনে মুখরিত হয়েছে। এই শীতে যাঁরা বাইক্কাবিল কিংবা টাঙ্গুয়ার হাওরে যেতে পারবেন না, তাঁরা অনায়াসে পাখি দেখার শখ মিটিয়ে আসতে পারেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাস ঘুরে। পাখি দেখা শেষে ঢুঁ মারতে পারেন ক্যাম্পাসের ভেতর বোটানিক্যাল গার্ডেনে। বিরল প্রজাতির বাঁশঝাড় দেখতে পাবেন সেখানে। গার্ডেনের ভেতর হ্রদের সৌন্দর্যটাও অসাধারণ। এই শুষ্ক সময়েও লেকের টলটলে পানিতে মুখচ্ছবি ভেসে উঠবে।
ক্যাম্পাস ঘুরে চলে যেতে পারেন সাভার বাজার রোড হয়ে নামাবাজার ব্রিজের অপর প্রান্ত রূপনগর। ভ্যানে চড়ে যেতে পারেন কাজিয়ালকুণ্ড গ্রামে দিগন্তবিস্তৃত সরিষা ফুলের খেত দেখতে। পথের দুধারে দৃষ্টিনন্দন বনায়ন। বংশী নদীর অপরূপ সৌন্দর্য আপনাকে করবে বিমুগ্ধ। ঢাকার পাশে
অথচ কোলাহলমুক্ত আবহমান বাংলার গ্রামীণ পরিবেশ–সব মিলিয়ে সুন্দর একটি দিন কাটিয়ে আসতে পারে।
সরষেখেত দেখার জন্য সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টার মধ্যে গেলে সূর্যের আলোয় সরষে ফুল দেখতে বেশ লাগবে। এরপর কাজিয়ালকুণ্ড খেয়াঘাট থেকে ট্রলারে বংশী নদী পার হয়ে চলে যেতে পারবেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বেলা ৩টার পর থেকে ক্যাম্পাসের জলাশয়ে পাখি দেখার সুবর্ণ সময়।
লেখক: চিফ অর্গানাইজার, দে-ছুট ভ্রমণ সংঘ
জীবনধারা সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
৬ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫