Ajker Patrika

লোডশেডিং আরও বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২২, ১২: ২৬
লোডশেডিং আরও বাড়ছে

অব্যাহত জ্বালানি-সংকটের কারণে দেশব্যাপী লোডশেডিং আরও বাড়ানোর চিন্তা করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এক ঘণ্টা লোডশেডিং করার পরও চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হচ্ছে। ফলে আগামী দিনে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং দেওয়া হতে পারে। সেভাবেই পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে।

সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী এলাকা ও জোনভিত্তিক দিনে এক ঘণ্টা করে বিদ্যুতের লোডশেডিং করা হবে বলা হলেও রাজধানী ঢাকাসহ উপজেলা পর্যায়ে মাঠের চিত্র ভিন্ন। বর্তমানে ঢাকার অনেক জায়গায় দিনে দুই ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। জেলা-উপজেলায় লোডশেডিং হচ্ছে পাঁচ থেকে আট ঘণ্টা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, জ্বালানি-সংকটের বর্তমান বাস্তবতায় দেশব্যাপী এক ঘণ্টা লোডশেডিং করার পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে। এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের তথ্য জানিয়ে দেওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, অনেক জায়গায় আরও লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এ কারণে লোডশেডিং ব্যবস্থাপনায় একটা বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। লোডশেডিংকে সরকার একটা ব্যবস্থাপনার মধ্যে নিয়ে আসতে চায়।

বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের যে শিডিউল করা আছে, তা মানা যাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে, কোনো কোনো এলাকায় দুই-তিন ঘণ্টাও লোডশেডিং হচ্ছে। এটাকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনার জন্য আমরা লোডশেডিংয়ের সময় বাড়াতে যাচ্ছি। এটি করার কারণ হচ্ছে, যাতে সব এলাকা সমানভাবে বিদ্যুৎ পায়।’

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে সরকারি গবেষণা সংস্থা পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘ঘোষণার চেয়ে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের তথ্য জনগণের কাছে না থাকার কারণে তারা ভোগান্তিতে পড়ছে। যেহেতু আমাদের এখন চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কম, তাই পরিকল্পনা করছি লোডশেডিংয়ের সময় বাড়াতে। লোডশেডিং এক ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে দুই ঘণ্টা হতে পারে।’

মোহাম্মদ হোসাইন আরও বলেন, ‘আমরা এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছি। আগামী সপ্তাহের মধ্যে লোডশেডিংয়ের নতুন সময়সীমা নির্ধারণ করা হবে। লোডশেডিংকে আমরা একটা শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে চাই।’

গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের শিডিউল বিপর্যয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক বলেন, ‘গ্রামে আমরা যে পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করি তার উল্লেখযোগ্য অংশ কলকারখানায় সরবরাহ করা হয়। এ কারণে গ্রামাঞ্চলের বসতবাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহ কম। তাই সেখানে লোডশেডিং একটু বেশি। তা ছাড়া অনেক সময় বিদ্যুৎ লাইন মেরামতের জন্যও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়।’

বিদ্যুৎ এক ঘণ্টা থাকলে দুই ঘণ্টা থাকে না, এ কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার মাহাতা গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ রিফাত হোসেন। যেদিন কম লোডশেডিং করা হয়, সেটাও ছয় থেকে আট ঘণ্টা জানিয়ে তিনি বলেন, তীব্র গরমের সঙ্গে যোগ হয়েছে এখন লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা। লোডশেডিংয়ের এখন সময় নেই। অনেক সময় মধ্যরাতেও বিদ্যুৎ চলে যায়।

গ্রাহকের এমন অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আনোয়ারা উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন বলেন, ‘আমার এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা হচ্ছে ১৭ মেগাওয়াট কিন্তু সরবরাহ করা হচ্ছে ১২ মেগাওয়াট। যে কারণে আমাকে প্রতিদিন কম করে হলেও ৫ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হয়।’

চলতি মাসের ১৮ তারিখে সরকার বিদ্যুৎ-জ্বালানি সাশ্রয়ে একগুচ্ছ পদক্ষেপ ঘোষণা করে। এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বন্ধ রাখা হয়েছে ডিজেল চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় শুরু করা হয় দেশব্যাপী লোডশেডিং।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত