Ajker Patrika

বাংলাদেশে স্পোর্টিং উইকেট যেন সোনার হরিণ

লাইছ ত্বোহা, ঢাকা
আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ১২: ৩৬
বাংলাদেশে স্পোর্টিং উইকেট যেন সোনার হরিণ

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ হিসেবে দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে স্পোর্টিং উইকেটে না খেলাটাকেই দায়ী করেছেন সাবেক ক্রিকেটাররা। স্পোর্টিং উইকেটে খেলে অভ্যস্ত হলেই তো দেশের বাইরে গিয়ে ভালো উইকেটে খেলতে হাঁসফাঁস করবে না! বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা লাভের প্রায় দুই যুগ হতে চলল, তবু লাল বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশ যেন হামাগুড়ি দেওয়া শিশু!

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের গত দুই চক্রের পয়েন্ট টেবিলে বাংলাদেশকে খুঁজে নিতে হয়েছিল নিচের দিক থেকে। ক্রিকেট পণ্ডিতদেরও ধারণা, মানসম্পন্ন উইকেটে না খেলার কারণেই দেশের বাইরে খেলতে গিয়ে ‘খাবি খাচ্ছি’ অবস্থা হয় দলের। দেশের ঘরোয়া ও নিচের লেভেলের (বয়সভিত্তিক, স্থানীয় ক্রিকেট) ক্রিকেটে স্পোর্টিং ও সবুজাভ উইকেট যেন সোনার হরিণ!

দিন কয়েক আগে শেষ হওয়া ২৫তম জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) প্রতিফলন সুস্পষ্ট। লিগের সেরা পাঁচ বোলারের মধ্যে কোনো পেসার নেই। শীর্ষ পাঁচ বোলার—নাঈম হাসান (৩৬ উইকেট), তাইজুল ইসলাম (২৬), নাজমুল ইসলাম অপু (২৫), তানভীর ইসলাম (২৫) ও হাসান মুরাদ (২৪)। মুরাদ, নাঈম ও তাইজুল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজের দলেও সুযোগ পেয়েছেন। তাসকিন আহমেদ, ইবাদত হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমানদের অনুপস্থিতে সেরা পেস আক্রমণ সাজাতেও হিমশিম খেতে হয়েছে হয়তো নির্বাচকদের। পেস আক্রমণ সাজাতে খালেদ আহমেদ ও শরীফুল ইসলামের সঙ্গে হাসান মাহমুদকে নিতে হয়েছে তাঁদের। কিন্তু ভরসা সেই স্পিন।

বিসিবির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কিউরেটরের মতে, শুধু এনসিএলের নয়, সমস্যাটা আরও নিচে। গতকাল তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উইকেটের ব্যাপারটা টুর্নামেন্ট কমিটি ও গ্রাউন্ডস কমিটি যেভাবে বলে, সেভাবে বানানো হয়। তবে আমি মনে করি, আমাদের পেস বোলিং সহায়ক উইকেটে খেলা ভালো, খেলা উচিতও। বিশেষ করে এটা নিচের লেভেল থেকে খেলা উচিত।’

এনসিএলের দল সিলেট বিভাগের কোচ রাজিন সালেহর মতে, এমন উইকেটে খেললে টেস্ট সংস্করণে এগোতে পারবে না বাংলাদেশ। সাবেক এই ক্রিকেটার বলেছেন, ‘সাধারণত আমাদের কয়েকটা উইকেটে খেলা হয়েছে। এখানে রাজশাহী ও বগুড়া ছাড়া পেস বোলিং সহায়ক উইকেট ছিল না। পেসারদের উইকেট পাওয়াটা কঠিন। বেশির ভাগ উইকেট ছিল স্পিন সহায়ক।’

সমস্যা নিরসনে ভারতের মতো বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটেও ঘাসের উইকেটে দেওয়া উচিত বলে মনে করেন রাজিন, ‘ভারত পরিবর্তন করেছে। তারা লোকাল ক্রিকেটও সব সময় ঘাসের উইকেটে খেলে। এ ধরনের উইকেটে খেলা হওয়া খুব জরুরি। এই উপলব্ধি যদি না হয়, তাহলে আমাদের পেস বোলরারা স্ট্রাগল করবে। কারণ, সহায়ক উইকেট আমরা পাচ্ছি না। আমি রিপোর্ট দিয়েছি। বলেছি, পরবর্তী বছর যেন তা-ই হয় (ঘাসের উইকেট)। এটা করলে আমাদের টেস্ট ক্রিকেটে এগোবে, না হলে আমরা স্ট্রাগল করব।’

তবে এনসিএলের উইকেট নিয়ে মোটামুটি সন্তুষ্ট বিসিবি। টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি বলেন, ‘উইকেট ভালো ছিল। বিশেষ করে কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে একটু সমস্যা হয়েছিল। উইকেট তো আমরা গ্রাউন্ডস কমিটিকে বলে দিই, তারা বানায়। বগুড়ায় সবুজ উইকেট ছিল। আমরা হয়তো যেরকম চাই, সেরকম শতভাগ হয় না। কয়েক মৌসুমেই উইকেট ভালো বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে সামনের বার আরও ভালো উইকেট বানানোর চেষ্টা করব আমরা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত