Ajker Patrika

বৃষ্টিতে যশোর শহরে জলাবদ্ধতা

জাহিদ হাসান, যশোর
Thumbnail image

দুই দিনের বৃষ্টিতে যশোর শহরের অধিকাংশ সড়কে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন রাস্তা পারাপারকারী ও স্থানীয়রা। তাঁদের ভাষ্য, সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে। অপরিকল্পিত নালা নির্মাণই জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ। তবে সংশ্লিষ্টদের দাবি, শহরবাসীর অসচেতনতার কারণে নালার পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এরপরও এটা নিয়ে তাদের পরিকল্পনা রয়েছে।

যশোর বিমানবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, যশোরে গত দুই দিনে (সোমবার ও মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৪টা পর্যন্ত) ৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১৫টি সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

খড়কি এলাকার শাহ আবদুল করিম সড়কে দেখা গেছে, সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের প্রধান ফটকের (দক্ষিণ গেট) পাশে খড়কি মোড়ে হাঁটুপানি। জুতা হাতে নিয়ে মানুষ ওই অংশ পারাপার হচ্ছে। পানি জমার কারণে সড়কের বিটুমিনের আস্তরণ উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। একই দৃশ্য শহরের কারবালা, স্টেডিয়াম পাড়া, সার্কিট হাউস পাড়া, রায় পাড়া, শংকরপুর, ঘোপ কবরস্থান পাড়া, বেজ পাড়া, তালতলা, নলডাঙ্গা রোড এলাকা, টিবি ক্লিনিক পাড়া, আশ্রম রোড এলাকা, বরফ কলের মোড়, লোন অফিস পাড়া, বড় বাজার এলাকার আবাসিক এলাকা, ষষ্ঠীতলা, এম এম কলেজ রোড, উপশহরের অধিকাংশ এলাকাসহ বিভিন্ন সংযোগ সড়কগুলোতে। এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিস অফিস, শিক্ষা বোর্ডের ভেতরে পানি।

খড়কি এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। রাস্তাটিও নিচু। নালা অপরিষ্কার থাকে। বৃষ্টি হলে শহরে কোথাও পানি জমুক আর না জমুক, এই এলাকায় পানি জমবেই। তুষার আবদুল্লাহ নামে এক কলেজশিক্ষার্থী জানান, পাশেই সরকারি এম এম কলেজ। এখানকার শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগ ছাত্রাবাস খড়কিতে। সড়ক ও এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে ছাত্রাবাসে উঠতে চান না শিক্ষার্থীরা।

পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, গত ৭ বছরে সিআরডিপি, ইউজিপআইআই-৩ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে শহরে ৪০ কিলোমিটার আরসিসি নালা নির্মাণ হয়েছে। এখনো অনেক নালা নির্মাণের কাজ চলছে। এ ছাড়া কাঁচাপাকা মিলিয়ে প্রায় ২৪৬ কিলোমিটার নালা রয়েছে।

যশোর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম শরীফ হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শহরের একটি অংশের পানি নিষ্কাশন হয় মুক্তেশ্বরী নদী দিয়ে। কিন্তু এটির মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খাল কেটে এর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। খালটি সংস্কার করতে হবে। শহরবাসীর অসচেতনতার কারণেও নালার পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরও বলেন, শহরের অন্য রাস্তা ও নালা সংস্কার ও নির্মাণের জন্য এমজিএসপি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অক্টোবরের মধ্যে ওই প্রকল্প পাস হবে বলে আশা করছি।

যশোর পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ২৮৭ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে বলে জানিয়েছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে বিটুমিনের কার্পেটিং ১৭৬, সিমেন্ট-বালুর ঢালাই ৩০, ইট বিছানো ৫১ ও মাটির কাঁচা সড়ক রয়েছে ৩০ কিলোমিটার। এ ছাড়া সড়কের সঙ্গে পয়োনিষ্কাশন নালা রয়েছে ২৫২ কিলোমিটার।

এদিকে, পৌর এলাকার প্রধান কয়েকটি সড়ক বাদে অন্তত ৮২টি সড়কের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক।  

যশোর পৌরসভার মেয়র হায়দার গণি খান পলাশ জানান, বেহাল ৮২টি সড়কের মধ্যে ১০টি সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে ৮ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। অন্য ৭২টি সড়ক সংস্কারসহ এর সঙ্গে নালা ও বাতি বসানোর জন্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয় প্রস্তাবনা দিয়ে মিউনিসিপ্যাল গভর্নেন্স সার্ভিসেস প্রজেক্ট (এমজিএসপি) শিরোনামে একটি প্রকল্প একনেকে ওঠার পর্যায়ে রয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত