Ajker Patrika

ফজিলতুন্নেসা

সম্পাদকীয়
ফজিলতুন্নেসা

ফজিলতুন্নেসা ছিলেন অসম্ভব মেধাবী। সেই মেধার পরিচয় তিনি শৈশবেই দিয়েছিলেন। তাঁর পিতা করোটিয়ার জমিদারবাড়িতে সামান্য বেতনে চাকরি করতেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব পরীক্ষায় তিনি ভালো ফলাফল করেন। পিতার সামর্থ্য না থাকার পরেও তিনি সে সময়ে ঢাকার একমাত্র সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ‘ইডেন স্কুলে’ ভর্তি করে দেন।

এরপর ছিল তাঁর শুধু সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা। এরপর ১৯২১ সালে ঢাকা বিভাগে প্রথম স্থান লাভ করে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। ইডেন কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। দুটিতেই সরকারি শিক্ষাবৃত্তি লাভ করেন। এরপর কলকাতার বেথুন কলেজে বিএ ভর্তি হন। সেখানেও তিনি ছিলেন একমাত্র মুসলিম ছাত্রী। সেখান থেকে ১৯২৫ সালে তিনি ডিসটিংশনসহ বিএ পাস করেন। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহশিক্ষার পরিবেশ ছিল না।

তারপরও তিনি অসীম সাহস আর উচ্চশিক্ষা অর্জনের প্রবল আকাঙ্ক্ষা নিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যান। ১৯২৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে এমএ পাস করেন। ১৯২৮ সালে কিছুদিন তিনি ঢাকার ইডেন স্কুলে শিক্ষকতা করেন। একই বছরের সেপ্টেম্বরে স্টেট স্কলারশিপ নিয়ে পিএইচডি করার জন্য তিনি ইংল্যান্ড গমন করেন।

বাংলাদেশের মুসলিম নারীদের মধ্যে তিনি হলেন প্রথম স্নাতক ডিগ্রিধারী। লন্ডন থেকে ফিরে কলকাতায় স্কুল ইন্সপেক্টর ছিলেন। এরপর বেথুন কলেজে গণিতের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। দেশভাগের পর ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন। এ জন্য তাঁকে বাংলাদেশের প্রথম মুসলিম নারী অধ্যক্ষ হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়।
নারীশিক্ষা ও নারীমুক্তি বিষয়ে সওগাতসহ বিভিন্ন পত্রিকায় তাঁর বিভিন্ন প্রবন্ধ, গল্প প্রকাশিত হয়েছে।

১৯৩০ সালের আগস্টে কলকাতার অ্যালবার্ট হলে অনুষ্ঠিত ‘বঙ্গীয় মুসলিম সমাজ-সেবক-সংঘে’র বার্ষিক অধিবেশনে সভাপতি হিসেবে তাঁর বক্তব্যটি নারী জাগরণের মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বেগম ফজিলাতুন্নেসার কাছে প্রেম নিবেদন করে কবি কাজী নজরুল ইসলাম প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন। 
এই বিদূষী নারী ১৯৭৭ সালের ২১ অক্টোবর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত