Ajker Patrika

অতীতের কাজা নামাজের বিধান

মুফতি মুহাম্মাদ শোয়াইব
আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০২২, ১৪: ২৮
অতীতের কাজা নামাজের বিধান

অতীত জীবনে কাজা হয়ে যাওয়া নামাজ আদায়ের প্রয়াসকে উমরি কাজা বলা হয়। উমরি কাজা আদায় করা নিয়ে অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি লক্ষ করা যায়। অনেকে উমরি কাজার পরিবর্তে নফল আদায়ের পরামর্শ দেন। তবে এ বিষয়ে সঠিক কথা হলো, উমরি কাজা কোরআন, হাদিস, সাহাবিদের আমল এবং আলেমদের ইজমা থেকে প্রমাণিত। তা আদায় করা আবশ্যক।

শরিয়তের মূলনীতি হলো, কোনো নামাজ একবার ওয়াজিব হওয়ার পরে চাই সেটি ইচ্ছাকৃত ছেড়ে দেওয়া হোক অথবা ভুলে অথবা ঘুমের কারণে, নামাজের পরিমাণ কম হোক বা বেশি, সে নামাজ পুনরায় কাজা করতে হবে। (বাহরুর রায়িক: ২ / ১৪১)

হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি নামাজের কথা ভুলে যায় কিংবা নামাজ না পড়ে ঘুমিয়ে থাকে, তার কাফফারা হলো, যখন নামাজের কথা স্মরণ হবে, তখন তা আদায় করা।’ (বুখারি: ৫৯৭৬) ওই হাদিসে ‘নাসিয়া’ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। আরবি ভাষায় শব্দটি ‘ভুলে যাওয়া’ অর্থে যেমন ব্যবহৃত হয়, তেমনি কোনো কাজ অবহেলা করে ছেড়ে দেওয়া অর্থেও ব্যবহৃত হয়। (আল-ইসতিযকার: ১ / ৩০০) অতএব কাজা আদায়ের বিধান শুধু ঘুম ও বিস্মৃতি এই দুই অবস্থায় সীমাবদ্ধ করা যাবে না; বরং অবহেলা করে ছেড়ে দিলেও কাজা জরুরি।

অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘যখন তোমাদের কেউ নামাজের সময় ঘুমিয়ে থাকে বা নামাজ থেকে গাফেল থাকে, তাহলে যখন তার বোধোদয় হবে, তখন সে যেন তা আদায় করে নেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, আমাকে স্মরণ হলে নামাজ আদায় করো।’ (মুসলিম: ৬৮৪ ও ৩১৬) এই হাদিসের দ্বিতীয় শব্দ ‘গাফেল থাকে’ লক্ষণীয়। এর অর্থ হচ্ছে অবহেলাবশত নামাজ ছেড়ে দেওয়া। সুতরাং অতীত জীবনে অবহেলাবশত ছুটে যাওয়া নামাজগুলো আদায় করতে হবে। এটিই উমরি কাজা।

চার মাজহাবের চার ইমামসহ প্রায় সব মুজতাহিদ এ বিষয়ে একমত যে ফরজ নামাজ নির্ধারিত সময়ে আদায় করতে না পারলে পরে হলেও তা আদায় করতে হবে। ইচ্ছাকৃত ছেড়ে দেওয়া কিংবা ওজরবশত ছেড়ে দেওয়া উভয় ক্ষেত্রেই একই বিধান। (আল-ইসতিযকার: ১ / ৩০২)

মুফতি মুহাম্মাদ শোয়াইব, ইসলামবিষয়ক গবেষক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত