Ajker Patrika

ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ নিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে এবি ব্যাংক

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 
আপডেট : ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১৬: ০০
ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ নিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে এবি ব্যাংক

ঝুঁকি বিবেচনায় লাল তালিকাভুক্ত এবি ব্যাংক পিএলসিতে ঘটেছে গুরুতর অনিয়ম ও ব্যাপক লুটপাট। আগ্রাসী ঋণ বিতরণ করে তা আদায়ে খাবি খাচ্ছে ব্যাংকটি। খেলাপি ঋণ হয়ে পড়েছে লাগামছাড়া। এতে ব্যাংকের সম্পদের ঝুঁকি অনেক বেড়েছে। এবি ব্যাংকের সমন্বিত মূলধন দেখানো হয়েছে ৩৭ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা। ব্যাংকিং নীতিমালার ব্যাসেল-৩ অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ (রিস্ক ওয়েটেড অ্যাসেট) দাঁড়িয়েছে ৫৭ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান আজকের পত্রিকা'কে বলেন, এবি ব্যাংকের অনিয়মের শেষ নেই। ব্যাংকটিতে ঋণ নীতিমালার ব্যাপক অনাচার ঘটেছে। আগ্রাসী ঋণ দিয়ে তা আদায় করতে পারছে না। ঋণের জামানত ঠিকঠাক নেই। আর ঋণের বিপরীতে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদে হাবুডুবু খাচ্ছে। মোট ঋণকে ছাড়িয়ে গেছে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ। ঝুঁকি বিবেচনায় নতুন ঋণ প্রদানে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন ব্যাংকটির অগ্রগতি নিয়ে আশার কিছু নেই। আর কোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হবে কি না তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে ৷ বিষয়টি পরে পরিষ্কার করা হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চলতি বছরের হালনাগাদ পরিদর্শন প্রতিবেদন বলছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরভিত্তিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এবি ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক অনিয়ম উঠে এসেছে। ব্যাংকটি বিশেষ বিবেচনায় ১১ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা মেয়াদোত্তীর্ণ নিয়মিত দেখিয়েছে, যা আইনে ব্যাংকের ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ হিসেবে দেখানো প্রয়োজন ছিল। আর ঝুলে থাকা মামলায় আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ (রিস্ক ওয়েটেড) ১ হাজার ৮১৪ কোটি টাকাও খেলাপি হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়নি। এই দুই খাতে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পত্তি ১৩ হাজার ৫৮৪ কোটি খেলাপি সত্ত্বেও নিয়মিত দেখানো গুরুতর অনিয়ম হিসেবে দেখছেন পরিদর্শকেরা। এমন ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের বিপরীতে ২০ শতাংশের কম প্রভিশন সংরক্ষণ করায় দেড় গুণ জরিমানাসহ ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ দাঁড়ায় ২০ হাজার ৩৭৭ কোটি টাকা, যা ব্যাংকটির বকেয়া ঋণ বিবেচনায় (স্পেশাল হিসেবে ও খেলাপি) একক ও সমন্বিত ঋণ হিসেবে ৩৭ হাজার ৯৯ কোটি টাকার সঙ্গে যোগ হয়। পরিশেষে ব্যাংকটির একক ও সমন্বিত হিসেবে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৭ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা।

আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং নীতিমালার মানদণ্ড ব্যাসল-৩ গাইড লাইন অনুযায়ী, ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের (রিস্ক ওয়েটেড অ্যাসেট) নির্ধারিত ২০ শতাংশের কম প্রভিশন সংরক্ষণ করলে সে ক্ষেত্রে বকেয়ার জন্য ১৫০ শতাংশ হারে প্রভিশন হিসাব করতে হবে। এবি ব্যাংকের বকেয়া প্রভিশনের জন্য সম্পদের তুলনায় ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ বেশি হয়েছে।

এবি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও বিভিন্ন শাখা ঘুরে জানা গেছে, এবি ব্যাংক ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংক। ভালোভাবেই চলছিল ব্যাংকটি। কিন্তু ২০১৭ সালে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটানো হয়। এতে ব্যাংকটিতে একটা বড় ধাক্কা লাগে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু পরিস্থিতি যেন যেই লাউ সেই কদু। ঋণ বিতরণে ব্যাংকিং নীতি উপেক্ষার অনেক ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে বেক্সিমকো গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ, এশিয়ান সিটি, বিল্ডট্রেড গ্রুপ ও মাহিন গ্রুপের কাছে বিপুল পরিমাণ বকেয়া হয়ে পড়ে। এসব ঋণ আদায়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে এবি ব্যাংক। আর গত মার্চ শেষে ব্যাংকটির মোট বিতরণকৃত ৩৩ হাজার ৫৮২ কোটি টাকার মধ্যে খেলাপি দেখানো হয়েছে ৮ হাজার ৮৪০ কোটি বা ২৬ শতাংশ। প্রকৃত খেলাপি ৫০ শতাংশের বেশি বলে জানান খোদ ব্যাংকটির কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ব্যাংকে ঋণের নামে লুটপাট হয়েছে। কিছু ব্যাংক ফাঁকা হয়েছে। কিছু ব্যাংক ঝুঁকি বিবেচনায় লাল তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অনেক ব্যাংকের ঋণ বিতরণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাহলে এসব ব্যাংক কার্যত ব্যাংকিং করছে না। ঘুরে দাঁড়াবে সে রকমটা দেখা যাচ্ছে না। দুর্নীতি রন্ধ্রে রন্ধ্রে পৌঁছেছে। কারা অপকর্মে জড়িত, তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত এবিসহ ঝুঁকিতে থাকা সব ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ব্যাংকটির সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান এবি ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের রক্ষিতব্য সংস্থান (মার্জিন ঋণের বিপরীতে) ৪৭৫ কোটি টাকা, যার বিপরীতে সংরক্ষণ করা হয় মাত্র ৩৪ কোটি টাকা। সেখানে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৪১ কোটি টাকা। আর এবি সিকিউরিটিজ লিমিটেডোর প্রয়োজনীয় রক্ষিতব্য সংস্থান (মার্জিন ঋণের বিপরীতে) ৪৪ কোটি টাকা। যার বিপরীতে রক্ষিত সংস্থান পাওয়া গেছে মাত্র ২৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এখানে ঘাটতি রয়েছে প্রায় ১৯ কোটি টাকা। পাশাপাশি নিজস্ব বিনিয়োগ ও মার্জিন ঋণের বিপরীতে রক্ষিত সংস্থান ঘাটতি ৪৭০ কোটি টাকা। তবে সর্বমোট সংস্থান ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪৭৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের চলতি দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর খান বলেন, ‘দেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংকটি নির্দিষ্ট ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে বিগত সরকারের সময়ে কিছু নীতির ব্যাঘাত ঘটেছে। আমরা সবকিছু ভালো করার চেষ্টা করছি। গ্রাহকেরা টাকা পাচ্ছে। কোনো গ্রাহক চেক দিয়ে টাকা পায়নি সে রকম একটি নজিরও নেই। আমানত বাড়ছে।’ ব্যাংকটির বিপুল সম্পদ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘কবে এ পরিস্থিতির উন্নতি হবে তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।’

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জানা গেছে, ঝুঁকির শীর্ষে থাকায় বিগত সরকারের সময় লাল তালিকাভুক্ত ছিল এবি ব্যাংক। এরপর দিন দিন অবস্থার আরও অবনতি ঘটে। আর ঋণের নামে ব্যাংক খালির ঘটনায় ঋণ বিতরণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে ১৬ হাজার কোটি টাকার খেলাপি গোপন করেছিল ব্যাংকটি। প্রভিশন ঘাটতি ছিল। বারবার দিতে হয়েছে জরিমানা। সবশেষে বেড়েছে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ, যা নিয়ে রীতিমতো বিপাকে পড়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, সরকারের উচিত ব্যাংকের ওপর নিরপেক্ষ অডিট (নিরীক্ষা) করা। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া উচিত না। তাহলে কারা ব্যাংক খালি করল, তাদের নাম বের হয়ে আসবে। তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। চিহ্নিত বড় খেলাপিদের সম্পদ ক্রোক করতে হবে। আর যেসব ব্যাংক তা করবে না, তাদের বিরুদ্ধে হার্ড লাইনে (কঠোর অবস্থান) যেতে হবে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

পূর্বাঞ্চলে ট্রেনের ভাড়া বাড়ল সর্বোচ্চ ২১৪ টাকা

ইতালির লিওনার্দো এসপিএ থেকে জঙ্গি বিমান কিনছে বাংলাদেশ

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন এনায়েত হোসেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও কর্মীদের সাফল্য উদ্‌যাপনে আবুল খায়ের স্টিলের ‘একেএস-একসাথে আগামীর পথে’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইস্পাত উৎপাদনক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের স্টিল (একেএস) ৬ ডিসেম্বর তাদের সব কর্মীকে নিয়ে ‘একেএস-একসাথে আগামীর পথে’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। দিনব্যাপী এই উৎসবমুখর ও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে দেশের প্রতিটি স্থান থেকে আবুল খায়ের স্টিলের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। নামাজ ও খাবারের বিরতির পর একেএসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সবার উদ্দেশে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেন। বক্তব্যে কোম্পানির সাম্প্রতিক অর্জন ও মাইলফলকগুলো তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী রড একেএস টিএমটি বি৭০০ সি-আরের সফল উৎপাদন। বিশ্বের দ্রুততম রোলিং মিল স্থাপন। একেএস এবং কাউ ব্র্যান্ড কালার কোটেড স্টিলের মর্যাদাপূর্ণ সুপারব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন।

এই আলোচনায় প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং কর্মীদের সম্মিলিত সাফল্যের প্রতিচ্ছবিও উঠে আসে।

সন্ধ্যায় আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র‍্যাফেল ড্র পর্বটি উদ্‌যাপনকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কিংবদন্তি শিল্পী জেমসের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা ও লেজার শো উপস্থিত সবাইকে মাতিয়ে রাখে।

সমাপনী ভাষণে একেএস পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান হয়। এরপর নৈশভোজ ও ডিজে সেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

পূর্বাঞ্চলে ট্রেনের ভাড়া বাড়ল সর্বোচ্চ ২১৪ টাকা

ইতালির লিওনার্দো এসপিএ থেকে জঙ্গি বিমান কিনছে বাংলাদেশ

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন এনায়েত হোসেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পরিষদের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার (৮ ডসিম্বের) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম জুবায়দুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।

সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, এফসিএ, এফসিএস, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন, শরী’আহ সুপারভাইজরি কাউন্সলিরে সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মো. হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

পূর্বাঞ্চলে ট্রেনের ভাড়া বাড়ল সর্বোচ্চ ২১৪ টাকা

ইতালির লিওনার্দো এসপিএ থেকে জঙ্গি বিমান কিনছে বাংলাদেশ

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন এনায়েত হোসেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্যাংকের নিট মুনাফা ছাড়া উৎসাহ বোনাস বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

কর ও সঞ্চিতি সংরক্ষণের পর নিট মুনাফা অর্জন না করলে কোনো ব্যাংকই আর উৎসাহ বোনাস দিতে পারবে না। পাশাপাশি মূলধন সংরক্ষণ ঘাটতি, প্রভিশন ঘাটতি বা পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকেই বোনাস দেওয়ার পথও পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে সব ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।

সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংকিং খাতের বর্তমান পরিস্থিতিতে আনরিয়েলাইজড বা নগদায়ন না করা আয়ের ভিত্তিতে বোনাস দেওয়া আর্থিক শৃঙ্খলা ও সুশাসনের পরিপন্থী। তাই এখন থেকে শুধু নির্ধারিত নিট মুনাফা অর্জন করতে পারলেই উৎসাহ বোনাস দেওয়ার অনুমতি পাবে ব্যাংকগুলো।

আরও বলা হয়, পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকে কোনো ধরনের উৎসাহ বোনাস দেওয়া যাবে না। রেগুলেটরি মূলধন বা প্রভিশনের ঘাটতি থাকলে বোনাস দেওয়া নিষিদ্ধ। প্রভিশন সংরক্ষণে বাড়তি সময় পাওয়া ব্যাংকগুলোও সেই সময়কাল মুনাফা হিসাবের ক্ষেত্রে দেখাতে পারবে না। বোনাস প্রদানে ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন কর্মসূচির উন্নতি ও খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারে দৃশ্যমান সাফল্য বিবেচনায় নিতে হবে।

এদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের ক্ষেত্রে সরকারের বিদ্যমান নির্দেশিকা কার্যকর থাকবে, যেখানে নিট মুনাফা ছাড়া বোনাস না দেওয়ার কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। তবে কোনো ব্যাংক নির্দিষ্ট সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে বিশেষ বোনাসের জন্য আবেদন করতে পারবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

পূর্বাঞ্চলে ট্রেনের ভাড়া বাড়ল সর্বোচ্চ ২১৪ টাকা

ইতালির লিওনার্দো এসপিএ থেকে জঙ্গি বিমান কিনছে বাংলাদেশ

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন এনায়েত হোসেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এক ক্লিকেই ভ্যাট পরিশোধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০৩
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত

ভ্যাটব্যবস্থাকে পুরোপুরি ডিজিটাল ও সহজ করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক নতুন পর্যায়ে এগোচ্ছে। মাত্র একটি ক্লিকেই ভ্যাট পরিশোধের সুযোগ ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে এবং বড় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এটি ব্যবহারও শুরু করেছে।

এনবিআর জানিয়েছে, শিগগির এ পদ্ধতি সারা দেশে চালু করা হবে, যাতে সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভ্যাটের আওতায় আসে এবং নিবন্ধন ছাড়া আর কেউ ব্যবসা চালাতে না পারে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

মো. আবদুর রহমান বলেন, দেশের বড় একটি অংশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এখনো ভ্যাট নিবন্ধনের বাইরে রয়েছে। আগামী বছর এমন একটি মেকানিজম চালু করা হবে, যার মাধ্যমে ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া ব্যবসার সুযোগ থাকবে না। বর্তমানে নিবন্ধিত ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠান ৬ লাখ ৪৪ হাজার; লক্ষ্য আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে তা ৩০ থেকে ৪০ লাখে উন্নীত করা। শুধু চলতি মাসেই ১ লাখ নতুন প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, ভ্যাট দিবসের প্রতিপাদ্য—‘সময়মতো নিবন্ধন নিব, সঠিকভাবে ভ্যাট দিব’—ধরে আগামীকাল বুধবার সারা দেশে ভ্যাট দিবস পালিত হবে। ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর চলবে ভ্যাট সপ্তাহ। তবে নীতিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায় এ বছরও স্থগিত থাকছে ভ্যাট পুরস্কার।

রিটার্ন জমাদানেও বড় পরিবর্তন আসছে বলে জানান মো. আবদুর রহমান খান। গত অর্থবছরে ১৭ লাখ ই-রিটার্ন জমা পড়লেও চলতি অর্থবছরে তা ৪০ লাখে পৌঁছানোর আশা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে জমা পড়েছে ২২ লাখ রিটার্ন। ভ্যাট আদায়েও গতি এসেছে—গত অর্থবছরে মোট রাজস্বের ৩৮ শতাংশ এসেছে ভ্যাট থেকে আর চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসেই ভ্যাট আদায় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ২২ শতাংশ।

করদাতাদের ঝামেলা কমাতে ই-রিটার্নে ব্যবহৃত ব্যাংকসংক্রান্ত চারটি তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাইয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান আবদুর রহমান।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, করদাতারা মনে করেন, রাজস্ব কর্মকর্তারা এসব তথ্য দেখতে পারবেন—এটি ভুল ধারণা।

চলতি অর্থবছরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৫৫ হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে কেন—এ প্রশ্নের জবাবে আবদুর রহমান বলেন, রাজস্ব আদায় বাড়ানোর বাস্তব প্রয়োজন থেকেই এ লক্ষ্য নির্ধারণ। তবে কারও ওপর হয়রানি বা অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা হবে না; মূলত যাঁরা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেই কঠোরতা বাড়ানো হবে।

আমদানি করা মোবাইল ফোনে কর কমানোর সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এটি সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত; এককভাবে এনবিআর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের সদস্য (মূসক নীতি) মো. আজিজুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

পূর্বাঞ্চলে ট্রেনের ভাড়া বাড়ল সর্বোচ্চ ২১৪ টাকা

ইতালির লিওনার্দো এসপিএ থেকে জঙ্গি বিমান কিনছে বাংলাদেশ

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন এনায়েত হোসেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত