Ajker Patrika

এবার ভাঙল দুই পাটাতন

এবার ভাঙল দুই পাটাতন

গাজীপুরের শ্রীপুরে কাওরাইদ-জৈনাবাজার সড়কের মাটিকাটা নদীতে নির্মিত চৌধুরীঘাট বেইলি সেতুর পাটাতন (স্লিপার) এর আগে ২০ বারের বেশি দেবে গেছে। এবার সেতুর প্রবেশমুখে দুটি পাটাতন খুলে নিচে পড়ে গেছে। এতে ভারী যানবাহনগুলো ১০ কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করছে।

গত মঙ্গলবার রাতে সেতুটির প্রথম পাটাতন ভেঙে পড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সর্বশেষ গত শুক্রবার দ্বিতীয় পাটাতন নিচে পড়ে যায়। উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশল বলেছেন, দ্রুতই সেতুটি সংস্কার করা হবে। ওই স্থানে নতুন সেতু নির্মাণ শিগগিরই শুরু হবে।

কাওরাইদ-জৈনাবাজার সড়কের উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের সোনাব গ্রামের চৌধুরীঘাট এলাকায় ১৯৯৫ সালে বেইলি সেতু নির্মাণ করে এলজিইডি। গত মঙ্গলবার রাতে সেতুর চারটি পাটাতনের একটি খুলে পড়ে যায়। এতে গতকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত তিনটি পাটাতন দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ছোট পরিবহন চলাচল করেছে। তবে ভারী যানবাহনগুলো ১০ কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করছে। গতকাল আরেকটি পাটাতন পড়ে যায়। এ ছাড়া অন্যগুলো নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর উত্তর পাশের প্রবেশমুখে পাশাপাশি দুটি পাটাতন ভেঙে নিচে পড়ে গেছে। পাশের দুটি পাটাতন দিয়ে অটোরিকশা, পিকআপ ভ্যান, মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। সেতুতে উঠতে একটি অটোরিকশা পাশে দাঁড় করিয়ে আরেকটি পারাপার করতে হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কাওরাইদ-জৈনাবাজার সড়কে শ্রীপুরসহ পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহের গফরগাঁও ও ভালুকা উপজেলার হাজারো শ্রমিক চলাচল করেন।

সেতু দিয়ে বড় গণপরিবহন চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তবু সময় বাঁচাতে অনেক পরিবহনকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়।

সোনাব গ্রামের বাসিন্দা মো. ফারুক মিয়া বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতের কোনো এক সময় বেইলি সেতুটি ভেঙে পড়ে, সকালের দিকে আমরা লাল নিশান টানিয়ে দিই।

মাঝেমধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুর পাটাতন খুলে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাঁড়িয়ে যান চলাচলের সতর্ক করতে হচ্ছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা সুলতান খান বলেন, ‘শুক্রবার সেতুর দ্বিতীয় পাটাতন ভেঙে পড়ে গেছে। পাশের কয়েকটি পাটাতনও নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো সময় সেগুলোও ভেঙে পড়ে চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এর আগে সেতুটি অনেকবার দেবে গেছে। তখন মেরামত করা হলেও স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।’

অটোরিকশাচালক মাসুদ মিয়া বলেন, ‘বেশ কয়েকবার বেইলি সেতুটি ভেঙে গেলেও স্থায়ী সমাধান করা হচ্ছে না। সেতুটি অচল হয়ে পড়লে ছোট যানবাহনকেও ১০ কিলোমিটার ঘুরে চলাচল করতে হবে। কিন্তু ওই সড়কের অবস্থাও তেমন ভালো নয়।’

উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজিজুল হক বলেন, ‘বেইলি সেতু দিয়ে শ্রীপুরসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি উপজেলার হাজারো মানুষ প্রতিদিন চলাচল করে। এর আগে ২০-২২ বার সেতুর পাটাতন ভেঙে পড়েছিল। এবার সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে গেছে। এই স্থানে নতুন সেতু নির্মাণের সব প্রক্রিয়া প্রায় শেষের পথে বলে জেনেছি। আপাতত চলাচলের জন্য দ্রুত সংস্কার করতে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

এদিকে গত মঙ্গলবার প্রথম পাটাতন দেবে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবারের মধ্যে নতুন পাটাতন দিয়ে সেতুটি সংস্কার করার কথা জানান উপজেলা প্রকৌশলী এ জেড এম রফিকুল আহসান। তবে গতকাল শুক্রবারও সেতুটি সংস্কার করা হয়নি, এর মধ্যে আরও একটি পাটাতন খসে পড়েছে।

গতকাল প্রকৌশলী রফিকুল আহসান বলেন, ‘টেকনিশিয়ানের অভাবে বেইলি সেতু সংস্কার করা যায়নি। তবে দ্রুতই সংস্কার করা হবে। সেই পর্যন্ত নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানানো হবে।’ দ্রুতই মাটিকাটা নদীতে একটি নতুন সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত