Ajker Patrika

পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের দাবি কৃষকদের

মিজান মাহী, দুর্গাপুর
আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২২, ১২: ৩৮
পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের দাবি কৃষকদের

বছরজুড়েই বাজারে পেঁয়াজের দাম ছিল চড়া। তাই কৃষকেরা লাভের আশায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে এবার পেঁয়াজ রোপণ করেছিলেন। সেই পেঁয়াজ এখন বাজারে উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু নতুন পেঁয়াজ বাজারজাত করার আগ মুহূর্তে ভারত থেকে আমদানির ফলে কমছে দেশি পেঁয়াজের দাম। ফলে লাভের আশায় পেঁয়াজ চাষ করে লোকসানের মুখে পড়ছেন কৃষকেরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাইকারি বাজারগুলোতে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৮ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২২-২৫ টাকায়। হঠাৎ দাম পড়ে যাওয়ায় প্রতি কেজি পেঁয়াজে ৬ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত লোকসান গুনছেন কৃষকেরা।

কৃষকেরা বলছেন, প্রতি কেজি পেঁয়াজ উৎপাদনে ৩০ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু প্রতি কেজি পেঁয়াজের বাজারমূল্য ২২-২৫ টাকা। এই পরিস্থিতিতে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত না হলে পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ হারাবেন তাঁরা। আর ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের দাবিও জানিয়েছেন কৃষকেরা।

উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামের পেঁয়াজচাষি জুবায়ের তুহিন বলেন, ‘এ বছর বাজারে দাম ভালো ছিল পেঁয়াজের। তাই লাভের আশার ১ বিঘা ১৩ কাঠা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি। পেঁয়াজ ওঠানো শুরু করছি। ১ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করতে ৩৫-৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। এবার শুরুতে সারসংকট ও তেলের দাম বাড়ায় খরচ আরও বেশি হয়েছে। কিন্তু এখন বাজারে পেঁয়াজের দাম নেই। ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা মণ দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এ রকম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করলে কৃষকদের উৎপাদন খরচই উঠবে না।।’

পৌর এলাকার দেবীপুর গ্রামের কৃষক আজিজুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে আমদানি বন্ধ না হলে পেঁয়াজের দাম আরও কমে যাবে। এতে কৃষকের ঋণের বোঝা বাড়বে।

দুর্গাপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এবার সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ লাগানো হয়েছে, যা গতবারের চেয়ে ৫০০ হেক্টর বেশি। কৃষকেরা জমি থেকে পেঁয়াজ ওঠানো শুরু করেছেন। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই কৃষকেরা জমি থেকে পেঁয়াজ ওঠানো শেষ করবেন। তারপর এসব জমিতে কৃষকেরা পাট ও ভুট্টার আবাদ করবেন।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২১-২২ মৌসুমে প্রায় ১৭ হাজার ৮ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এবার প্রায় ১৮ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে পেঁয়াজ।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সবুজ আলী বলেন, চাষিরা জমি থেকে পেঁয়াজ ওঠাতে শুরু করেছেন। এখন দাম একটু কম। চলতি সপ্তাহেই দাম আরেকটু বাড়বে। তিনি আরও বলেন, ‘কৃষি বিভাগ সব সময় কৃষকদের প্রাধান্য দিয়ে থাকে। কৃষকেরা যেন ফসলের নায্যদাম পায়, এ জন্য ভরা মৌসুমে বাহির থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধে সুপারিশ করে। আর পেঁয়াজ আমদানি মন্ত্রণালয়ের বিষয়। আমাদের তেমন কিছু করার থাকে না। তবুও কৃষকদের দাবি ওপর মহলে জানানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত