Ajker Patrika

রেলের টিকিট যেন সোনার হরিণ

সিলেট প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২২, ১২: ০৫
Thumbnail image

সিলেট স্টেশনে রেলের টিকিট যেন সোনার হরিণ। সাধারণ যাত্রীদের টিকিট পেতে পোহাতে হয় সীমাহীন ভোগান্তি। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কাউন্টারে মেলে না টিকিট। মেলে কাউন্টারের সামনেই কালোবাজারিদের কাছে। সকাল আটটা থেকে কাউন্টার ও অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই সার্ভার থেকে হাওয়া হয়ে যায় সব টিকিট।

যাত্রীদের অভিযোগ, কাউন্টারে গিয়ে ট্রেনের টিকিট না মিললেও বাড়তি টাকা দিয়ে স্টেশনের বাইরে টিকিট পাওয়া যায়। দ্বিগুণ বা তার বেশি দাম দিলে কাউন্টারের সামনেই কালোবাজারিদের হাতে পাওয়া যায় সব শ্রেণির টিকিট। এমনকি সিলেটের টিকিট মেলে কুলাউড়া স্টেশনে। সেখান থেকে সিলেট-ঢাকা, সিলেট-চট্টগ্রাম রুটের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায়। কিন্তু কারা এসব টিকিট কালোবাজারে বিক্রি করে তা জানেন না খোদ স্টেশনের কর্তাব্যক্তিরা।

এদিকে টিকিটের কালোবাজারি রোধে দায়িত্বশীলদের নজরদারির অভাবে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এই চক্র। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট ও কুলাউড়া স্টেশনে এই চক্রটির সদস্য রয়েছেন। প্রভাবশালী এই চক্রের নিয়ন্ত্রণে সিলেটে ট্রেনের সব টিকিট। ফলে বাধ্য হয়েই যাত্রীদের স্টেশনের বাইরে থেকে বাড়তি টাকা দিয়ে টিকিট কিনতে হয়।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, ট্রেনের টিকিট চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের বুকিং সহকারী ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) সদস্যরাও। এর বাইরে টিকিট কালোবাজারিতে জড়িত রয়েছেন স্টেশনের ভেতরের দোকানদার, পত্রিকার হকার, সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক ও স্টেশনের বাইরের দুটি স্টেশনারি দোকানের মালিক।

স্টেশনে টিকিট কিনতে আসা আল আমিন বলেন, ‘কাউন্টারে গেলে টিকিট নেই বলে বিদায় করে দেওয়া হয়। পরে আরএনবির সদস্য একজনের সঙ্গে কথা বলে পাঁচটি টিকিট অতিরিক্ত দাম দিয়ে তাঁর কাছ থেকে কিনি।’

জানতে চাইলে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের বুকিং সহকারী মিটুন চক্রবর্তী বলেন, ‘আমি সিলেট স্টেশনে মাত্র কয়েক মাস আগে এসেছি। স্টেশনের বাইরে অনলাইন মিডিয়া ও মেসার্স ওয়ান মিডিয়া নামে দুটি দোকানে টিকিট পাওয়া যায়। কিন্তু সেখানে কীভাবে টিকিট মেলে তা আমার জানা নেই।’

এই বুকিং সহকারী আরও বলেন, প্রতিদিন সকালে স্টেশনে অনেক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকেরা এসে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট ক্রয় করেন। তাঁদের অনেকবার নিষেধ করা হলেও তাঁরা মানেন না। তা ছাড়া আরএনবি সদস্যদের টিকিট কাটতেও নিষেধ করা হয়েছে। তারপরও তাঁরা এসব কাজ করে থাকেন।

এদিকে কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে দায়িত্ব পালনকারী আনএনবি সদস্য এএসআই জানে আলম বলেন, ‘কুলাউড়া থেকে কীভাবে সিলেটের টিকিট নিয়ন্ত্রণ হয় সেটি আমার জানা নেই। আমি বছরখানেক হয়েছে এই স্টেশনে দায়িত্ব পালন করছি।’

এ ব্যাপারে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) সিআই এনায়েত করিম বলেন, ‘এ রকম কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পেলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব।’

এ বিষয়ে জানতে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক নুরুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত