Ajker Patrika

কারখানার বাইরে তালা ভেতরে তেলে ভেজাল

বোদা (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২২, ১২: ৪১
Thumbnail image

ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায় পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার অসাধু ব্যবসায়ীরা তেলে ভেজাল করতে তৎপর হয়ে উঠেছেন। কারখানার বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে ভেতরে পাম ওয়েল তেল পরিশোধন করে সয়াবিন হিসেবে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রশাসনের নজরদারি নেই বলে স্থানীয়দের দাবি।

তেল কারাখানা বলে পরিচিত উপজেলার মাঝগ্রামের ফকিরপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, দূর থেকে দেখে মনে হবে জনশূন্য এলাকা। বিভিন্ন ঘরের বাইরে থেকে তালা লাগানো। কিন্তু ঘরের ভেতরে ঠিকই কাজকর্ম চলছে। শত শত নারী-পুরুষ কাজ করছেন ওই সব কারখানায়। আশপাশে সারি সারি করে দাঁড়িয়ে আছে নসিমন, করিমন ভ্যান, পিকআপসহ বিভিন্ন গাড়ি।

নাম প্রকাশে কয়েকজন কারখানা পরিচালক বলেন, ‘আমরা সয়াবিন পাব কোথায় পাম ওয়েল তেল পরিশোধন করে আমরা সয়াবিন হিসেবে বাজারজাত করি। অবৈধ বলা হলেও আমাদের ঠিকই প্রশাসনসহ বিভিন্নজনকে মানিয়ে চলতে হয়। প্রতি মাসে বড় মাসোয়ারা দিতে হয় অনেককে।’

প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় ভেজাল সয়াবিন তেলে বাজার সয়লাব। বিশেষ করে বোদা উপজেলার মাঝগ্রাম ও কুড়ালী পাড়াসহ বেশ কয়েকটি স্থানে গড়ে উঠেছে পাম ওয়েল থেকে ভেজাল সয়াবিন তেল তৈরির কারখানা। মানহীন এসব তেল বিক্রি করে অনেকে রাতারাতি লাখপতি হয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, দেশের নামীদামি ব্যান্ডের সয়াবিন তেল বাজার থেকে এখন উধাও। দু-একটি দোকানে দেখা মিললেও দাম আকাশচুম্বী। সাধারণ লোকজনের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। এ কারণে বিভিন্ন হাট বাজারে মানহীন এসব তেলে সয়লাব। চমক, নাইস, নিউ চান্দা, চান্দা, গৃহিণীসহ বিভিন্ন নামের তেলের বোতল উপজেলার বাজার ছেয়ে গেছে। প্রশাসনেরও ঠিকমতো নজরদারি নেই।

মানহীন এসব ভোজ্য তেলে নেই পরিমিত কোনো উপাদান। ওজনে নেই মিল, এক লিটারে থাকে ৮০০ হতে সাড়ে ৮০০ গ্রাম। ব্যান্ডের তেলের মতো এসব তেলের বোতলেও মূল্য সেঁটে দেওয়া হয়েছে। ক্রেতারা দুদিক থেকে ঠকছেন, একদিকে ওজনে অন্যদিকে তেলে।

নাইস, চমক, নিউ চাঁন্দা কারখানার পরিচালক আব্দুর রশিদ ও আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমাদের সয়াবিন তেলের লাইসেন্স দিবে কে? বাংলাদেশে সয়াবিনের যে কয়টি মিল রয়েছে তা আবার বড় বড় শিল্পপতিদের। আমরা আর কয় টাকার ব্যবসা করি। আমাদের সরিষার তেলের অনুমোদন দেন। কিন্তু আমরা পাম ওয়েল তেল পরিশোধন করে সয়াবিন করি।’

বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক জাহিদ হাসান আজকের পত্রিকাকে জানান, মানহীন এসব তেল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এসব তেল খেয়ে চর্মরোগসহ নানান রোগ দেখা যায়।

বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোলেমান আলী জানান, নিয়মিত বাজার ও ভেজালবিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। খুব শিগগিরই অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত