Ajker Patrika

ভাঙা সেতুতে ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল

মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, সুবর্ণচর (নোয়াখালী)
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২১, ১৩: ৩৭
ভাঙা সেতুতে ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে প্রায় দুই শ ফুট দীর্ঘ কাঠের ভাঙা সেতু। প্রায় দুই দশক ধরে সংস্কার না করায় সেতুটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে আছে। কিন্তু বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে এই সেতু দিয়েই যাতায়াত করে এলাকাবাসী।

উপজেলার চরজুবিলী ইউনিয়নের পাংকার বাজার জালাল সারেং মসজিদ সমাজ এলাকায় ভুলুয়া নদীর শাখা খালের ওপর এই কাঠের সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করে। চরজব্বার ইউনিয়নের পশ্চিম চরজব্বার, উত্তর ব্যাগ্যা, সমিতির বাজার, চরজুবিলীর মধ্য ব্যাগ্যা, একরাম নগরসহ পাঁচটি গ্রাম এই সেতুটির কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। কাঠের সেতুর স্থানে পাকা সেতু তৈরি হলে একরামনগর-পাংকার বাজার সড়কের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হতো এলাকাগুলো।

স্থানীয় লোকজন জানান, উপজেলার চরজব্বার-চরজুবিলী ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষ পাংকার বাজার হয়ে একরামনগর-আটকপালিয়া সড়ক দিয়ে জেলা সদর ও ঢাকা-চট্টগ্রামে যাতায়াত করে।

কাঠের সেতুর কারণে ওই সড়ক থেকে ভারী যানবাহন নিয়ে ওই এলাকাগুলোতে যাওয়া যায় না। এ ছাড়া বর্ষাকালে সেতুটি পানির তোড়ে ভেঙে যায়। আবার কখনো ডুবেও যায়। তখন শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় যাওয়াও সম্ভব হয় না।

উত্তর ব্যাগ্যার ৪ নম্বর ওয়ার্ড বাসিন্দা মো. মঞ্জুর আলম জানান, গত দুই দশক আগে লোকজনের চাঁদা, মুষ্টিচাল ও ধান সংগ্রহ করে প্রায় লাখ টাকা ব্যয়ে কাঠের এই সেতু নির্মাণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে এটি রক্ষণাবেক্ষণে স্থানীয়ভাবে দেখাশোনা করলেও জনপ্রতিনিধির সঙ্গে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মনোমালিন্যের কারণে এখন কেউই তদারকি করে না।

পাংকার বাজারের ব্যবসায়ী মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘১৫-২০ বছর ধরে আমরা সেতুর জন্য দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু এ নিয়ে জনপ্রতিনিধিরা উদাসীন।’

মধ্য ব্যাগ্যার কৃষক বজলুর রহমান বলেন, ভোট এলে সব দলের নেতাই প্রতিশ্রুতি দেন বাঁশের সাঁকো আর থাকবে না। কষ্ট করতে হবে না। খালের ওপর কালভার্ট হবে। কিন্তু দল পাল্টায়, বাঁশের সাঁকো আর ব্রিজ হয় না। ৫০ হাজার মানুষের কষ্ট-দুঃখও ঘোচে না।

৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খলিল উল্যাহ বলেন, একে একে সব দপ্তরে ধরনা দিয়েও সেতুটি করা গেল না। সেতু আর প্রশস্ত সড়ক না থাকায় গ্রামটিতে কোনো রিকশা বা রিকশা ভ্যান চলাচল করতে পারে না। এ কারণে উৎপাদিত পণ্যের পরিবহন আর রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার সময় চরম ভোগান্তির শিকার হয়ে থাকেন এখানকার বাসিন্দারা।

চরজুবিলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হানিফ চৌধুরী বলেন, সেতু না থাকায় ওই সড়কের সঙ্গে মানুষের সরাসরি কোনো যোগাযোগ নেই। বিষয়টি স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সুবর্ণচর উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহজালাল বলেন, ‘এই মুহূর্তে বড় কোনো কাজের বাজেট নেই। সেতুটি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে এটির সম্ভাব্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিবেদন দেব।’

সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলাপ করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত