Ajker Patrika

তেঁতুলিয়া নদীতে অবৈধ ঝাড়া হুমকির মুখে ইলিশ প্রজনন

আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২২, ১২: ৩২
তেঁতুলিয়া নদীতে অবৈধ ঝাড়া হুমকির মুখে ইলিশ প্রজনন

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কোল ঘেঁষে বয়ে গেছে তেঁতুলিয়া নদী। মা ইলিশের নির্বিঘ্নে প্রজননের জন্য মৎস্য বিভাগ প্রতি বছর ১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন এবং ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তেঁতুলিয়া নদীর চরভেদুরিয়া থেকে চররুস্তম পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার মাছের প্রজননের অভয়াশ্রম ঘোষণা করে। অথচ মাছ ধরার জন্য স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নদীতে ঝাড়া হিসেবে পরিচিত ফাঁদ পেতেছেন। এ কারণে হুমকির মুখে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এই ইলিশ প্রজননকেন্দ্র।

তেঁতুলিয়া নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ঘুরে দেখা গেছে, নদীর বুকজুড়ে পাতা রয়েছে অবৈধ ঝাড়া। বছরজুড়েই নদীর যেখানে সেখানে স্থানীয় প্রভাবশালীরা এ ফাঁদ পেতে মাছ শিকার করেন। নদীর ২০ থেকে ৩০ ফুট জায়গাজুড়ে গাছের খুঁটি ও বাঁশ পেতে এর মধ্যে ফেলে রাখা হয় বাঁশের কঞ্চিসহ গাছের ডালপালা ও মাছের খাবার। ধীরে ধীরে ওই ঝাড়ায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আশ্রয় নেয়। প্রায় ১৫ থেকে ৩০ দিন নদীর জোয়ার ভাটার অবস্থান বুঝে ওই ঝাড়ার চারপাশে জালের বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করা হয়।

চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের প্রবীণ জেলে বাদশা মাঝি বলেন, ‘তেঁতুলিয়া নদীতে এক সময়ে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ত। কিন্তু বেশ কয়েক বছর তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন পয়েন্টে স্থানীয়রা ঝাড়া পেতে মাছ শিকার করেন। ঝাড়ার কারণে ওই স্থানজুড়ে পলি মাটি জমে নদীতে নাব্যতার সৃষ্টি হয়ে গভীরতা কমে যাচ্ছে। এ কারণেই তেঁতুলিয়া নদীর কিছু পয়েন্টে ইলিশের বিচরণ কমে যাচ্ছে।’

উপজেলার প্রধান নদীবন্দর কালাইয়া ঘাটের ভাই ভাই মাছের আড়দের মালিক অমর দাস বলেন, ‘এই তেঁতুলিয়া নদীর মাছের ওপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে কালাইয়া বন্দর ঘাটে অর্ধশত মাছের আড়ত। আড়তগুলোতে এখন আর আগের মতো তেঁতুলিয়ার ইলিশ আসে না। কারণ এই নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ডুবোচরের সৃষ্টি হয়ে গভীর জলের ইলিশ মাছ বিচরণ কমে গেছে। ডুবোচরের অন্যতম কারণ হিসেবে তিনি নদীর বুকে ঝাড়া পেতে মাছ শিকারকে দায়ী করেন।’

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, এটা সত্যি যে তেঁতুলিয়া নদীতে আগের চেয়ে ইলিশের বিচরণ অনেক কমে গেছে। কারণ ইলিশ হলো গভীর পানির মাছ। তেঁতুলিয়ায় নাব্যতাসংকটের কারণে ইলিশের এই সংকট দেখা দিয়েছে। নদীতে যে পরিমাণ ঝাড়া পেতে মাছ শিকার করা হয়, নদীর নাব্যতাসংকটের এই একটি কারণ। দ্রুত সময়ের মধ্যে নদীতে যে ঝাড়া আছে তা অপসারণ করা হবে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদ উল্লাহ্ বলেন, অবৈধ এ ঝাউয়ের কারণে নদীতে নব্যতার সৃষ্টি হয়, তাই ইলিশের মতো গভীর পানির মাছের প্রজননের জন্য হুমকি। সাধারণ মানুষ এ বিষয়ে জানেন না যে খালে ও নদীতে এ ধরনের ঝাড়া পেতে মাছ শিকার অবৈধ। অবৈধ এ সব ঝাড়ার বিরুদ্ধে শিগগিরই অভিযানে নামব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত