Ajker Patrika

কারা পাচ্ছে ১০ টাকার চাল?

আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ০৮
কারা পাচ্ছে ১০ টাকার চাল?

পটুয়াখালীর বাউফলে তালিকাভুক্ত সুবিধাভোগীরা সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজির চাল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। তাঁদের দাবি, সংশ্লিষ্ট ডিলার ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা মিলে তাঁদের নামে বরাদ্দকৃত চাল বছরের পর বছর আত্মসাৎ করে আসছেন। এ বিষয়ে গতকাল সোমবার ১০ জন ভুক্তভোগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ৫২৩ জন সুবিধাভোগী রয়েছেন। বছরে পাঁচ মাস (মার্চ, এপ্রিল, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর এবং নভেম্বর) ওই সব সুবিধাভোগীকে কার্ডপ্রতি ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ৪,৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চাল বিতরণ ডিলার হিসেবে আছেন মো. জুয়েল রানা নামে এক ব্যক্তি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, তালিকায় ১৪৪ নম্বরে আছেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভরিপাশা গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগম, ১৪৬ নম্বরে অসিম খানের স্ত্রী ইসরাত জাহান শরমি, ১৪৩ নম্বরে ফজলে করিমের ছেলে শহিদুল ইসলাম, ১২২ নম্বরে আবদুল লতিফ সরদারের স্ত্রী নিলুফা বেগম এবং ২২৪ নম্বরে খলিল সরদারের স্ত্রী লাভলি বেগম। তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও তাঁরা চাল পান না।

ভুক্তভোগী হোসনেয়ারা বেগম জানান, গত ৫ বছরে একবারও তিনি চাল পাননি। তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও ডিলার তাঁকে চাল দেন না। শুধু হোসনেয়ারাই না, তাঁর মতো অনেক অসহায় ব্যক্তি সরকারের এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। হাওয়া বেগম নামের এক গৃহিণী বলেন, ‘তালিকায় (১৪৭) ৩ বছর ধরে নাম ছিল। তবে কখনো চাল দেওয়া হয়নি। গত বছর নাম কেটে দেওয়া হয়।’ হাওয়া বেগমের প্রশ্ন, ওই তিন বছর তাঁর নামের চাল কে নিয়েছে? তাঁকে কেন দেওয়া হয়নি?

তালিকায় ১৩ নম্বরে আসমত আলী ভূঁইয়ার ছেলে মো. রাজ্জাক ভূঁইয়ার নাম রয়েছে। তিনিও চাল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন। ভরিপাশা গ্রামের নান্নু খান সুবিধাভোগী হিসেবে চাল পেলেও তাঁর স্ত্রী শাহনাজ বেগমের নাম রয়েছে সংশোধিত তালিকায়। মো. শাহ আলম ফকির ও তাঁর স্ত্রী মোসা. রুনু বেগমের নাম রয়েছে সুবিধাভোগীর তালিকায়। তাঁদের কেউই চাল পাচ্ছেন না।

এদিকে সংশোধিত তালিকার ১০ নম্বরে ৪, ৫, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মহিলা সদস্যা এলিনা আক্তারের শাশুড়ি রাশেদা বেগমের নাম রয়েছে। এ বিষয়ে এলিনা বলেন, ‘শুধু আমার শাশুড়ির নামটাই দেখলেন, অন্য কারও নামটা দেখলেন না। এ রকম প্রায় মেম্বরদের আত্মীয়-স্বজনদের নাম রয়েছে।’

এ বিষয়ে ডিলার মো. জুয়েল রানা বলেন, ‘আমি ২০১৯ সালের শেষে দিকে ডিলার নিয়োগ পাই। এর আগে ছিল মিলন রহমান রুবেল নামে একজন। জোড়া খুনের মামলার আসামি হওয়ায় তিনি পলাতক থাকেন। যা অনিয়ম হয়েছে, তাঁর সময়ে। আমার দ্বারা কোনো অনিয়ম হয়নি। যাঁদের কার্ড আছে, তাঁদেরই আমরা চাল দিচ্ছি।’

সংশ্লিষ্ট তদারকি কর্মকর্তা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী প্রোগ্রামার মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি ডিলাররা ভালো জানেন। প্রয়োজনে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’

ইউএনও মো. আল আমিন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত