Ajker Patrika

মূল্যস্ফীতি কমানোর মুদ্রানীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
মূল্যস্ফীতি কমানোর মুদ্রানীতি

দেশের ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকটকালেও ওভারনাইট রেপো সুদহার (নীতি সুদহার) ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৬ শতাংশ নির্ধারণ করে মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রেপোর মাধ্যমে সাধারণত এক দিনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার বা জমা রাখা হয়। এতে বাণিজ্যিক ব্যাংকের জন্য টাকা ধার নেওয়ার সুদের পরিমাণ বেড়ে গেল। আর মুদ্রানীতিতে রিভার্স রেপোর সুদহার ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। এই সুদের হার আজ সোমবার থেকে কার্যকর করা হবে।

গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য (জানুয়ারি-জুন) নতুন মুদ্রানীতি ‘মনিটারি পলিসি স্টেটমেন্ট (এমপিএস)’ প্রকাশ করা হয়েছে। আব্দুর রউফ তালুকদার গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি প্রথম মুদ্রানীতি। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছের, এ কে এম সাজেদুর রহমান খান, বিএফআইইউয়ের প্রধান মাসুদ বিশ্বাস, প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. হাবিবুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ড. মো. এজাজুল ইসলাম, মুখপাত্র মো. মেজবাউল হকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মুদ্রানীতিতে বলা হয়েছে, বেসরকারি খাতের জন্য ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা আগের ১৪ দশমিক ১ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকবে। আর সরকারি ঋণের সীমা ৩৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ করা হয়েছে। যদিও গত জুনে ২০২২-২৩ অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ জোগানোর ব্যবস্থা রাখা হয়। সরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ৩৯ দশমিক ৪ শতাংশ, যা আগের বছর ছিল ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশ। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ১ শতাংশ, যা তার আগের অর্থবছরে ছিল ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ।

এদিকে ব্যাংকের আমানতের ওপর বেঁধে দেওয়া সুদহার তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে ভোক্তা ঋণের (ব্যক্তিগত ঋণ, গাড়ি ঋণ, আবাসন ঋণ, শিক্ষা ঋণ প্রভৃতি) সুদহার ৩ শতাংশ বাড়িয়ে ১২ শতাংশ করা হয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকের সব ধরনের ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে বেঁধে রাখা হয়েছে। তবে শিল্প ঋণসহ অন্যান্য ঋণের ক্ষেত্রে সুদহার বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। পাশাপাশি ২০২২-২৩ অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করেছে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ, আগের মুদ্রানীতিতে যা ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ ছিল। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। আর জিডিপিতে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে।

গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল সংকটকালীন আমদানি কমিয়ে আনা। এটা যেন রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের সমান হয়। টার্গেট পূরণে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা পদক্ষেপ নিয়েছিল। আমরা ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিং হয়েছে কি না, সেটা দেখেছি। এ কাজগুলোতে স্বচ্ছতা আনা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে অর্থ পাচারও আমরা নিয়ন্ত্রণে এনেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত