Ajker Patrika

চবিতে নিয়োগ বোর্ড স্থগিত উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
চবিতে নিয়োগ বোর্ড স্থগিত উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে পূর্বঘোষিত দুই ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন তাঁরা। এদিকে বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে দুই সদস্য বসতে অস্বীকৃতি জানানোয় নিয়োগ বোর্ডটি স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও আইন ও বাংলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে গত রোববার আজকের পত্রিকায় ‘প্রয়োজন ছাড়াই নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে ৯ শিক্ষক’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

ওই দিনই নিয়োগ বোর্ড বাতিলের দাবিতে শতাধিক শিক্ষককে সঙ্গে নিয়ে উপাচার্যকে চিঠি দিতে যান শিক্ষক সমিতির নেতারা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে উপাচার্য তাঁর কক্ষ ছেড়ে চলে যান। এরপর উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেণু কুমার দের পদত্যাগ দাবিতে গতকাল অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন শিক্ষক সমিতির নেতারা। আজ মঙ্গলবারও দুই ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে সংগঠনটি। 

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হকের সঞ্চালনায় ও সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকীর সভাপতিত্বে গতকালের অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন হলুদ দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সেকান্দর চৌধুরী, আইন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক এ বি এম আবু নোমান, লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী এস এম খসরুল আলম কুদ্দুসী, জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. লায়লা খালেদা আঁখি, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. শফিউল আযম, সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এনামুল হক।

অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হক বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত একজন ব্যক্তি (উপাচার্য) যখন তাঁর কিছু প্রশাসনিক সহযোগীসহ তাঁদের বাছাইকৃত আবেদনকারীকে সঙ্গে নিয়ে গোপন স্থানে নিয়োগ বোর্ড বসাতে পারেন, তখন এ ধরনের ব্যক্তি এত বড় প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার হিসেবে থাকার সমস্ত নৈতিক অধিকার হারান।

শিক্ষক সমিতি ও শিক্ষক সমাজ তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, শুধু তিনি (উপাচার্য) নন, তাঁর অন্যতম সহযোগী হিসেবে উপ-পাচার্যকেও বিদায় নিতে হবে। তাহলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা সম্ভব।’

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা আইন ও বাংলা বিভাগের নিয়োগ বোর্ড বাতিলের জন্য উপাচার্যের কাছে গেছি। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন।’

বাংলা বিভাগের নিয়োগ বোর্ড স্থগিত নিয়োগ বোর্ডের দুই সদস্য বসতে অস্বীকৃতি জানানোয় এবং শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের মুখে বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বোর্ড বসার কথা ছিল। স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নুর আহমদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, অনিবার্য কারণবশত বাংলা বিভাগের নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করা হয়েছে। 

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শিরীণ আখতার সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষক সমিতি কি ভিসি, প্রো-ভিসি নিয়োগ দেয়? আমাকে ও প্রো-ভিসিকে মহামান্য রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের জায়গায় অন্য কাউকে না দেবেন, ততক্ষণ কাজ করে যাব। শিক্ষক সমিতিকে বলুন, একজনকে নিয়ে আসুক, আমরা সসম্মানে জায়গা ছেড়ে দেব। কেউ একজনকে চিঠি নিয়ে আসতে বলুন, ফুলের মালা দিয়ে চলে যাব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত