গাছ কেটে কেমন সৌন্দর্যবর্ধন ডিএসসিসির

সৌগত বসু, ঢাকা
Thumbnail image

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় সৌন্দর্য বাড়াতে বিভিন্ন সড়কদ্বীপ ও সড়ক বিভাজক ভেঙে নতুন করে বানাতে গিয়ে পুরোনো গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সড়কদ্বীপ ও বিভাজকের মাঝখানে থাকা গাছ কেটে ফেলছেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি, তাদের গাছ কাটার অনুমতি আছে।
ডিএসসিসি সূত্রে জানা যায়, সড়কের সৌন্দর্যবর্ধনে ৯ কোটি ৬২ লাখ টাকার একটি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডেও সড়ক বিভাজকের উন্নয়নকাজ হচ্ছে।

ডিএসসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী সালেহ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, গাছ কেটে আরও সুন্দর করে সড়ক বিভাজক তৈরি করা হবে। তবে সেখানে আগে থেকেই সড়ক বিভাজক থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, আগের চেয়ে সুন্দর বিভাজক তৈরি হচ্ছে। এতে রাস্তা বড় হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ঠিকাদারকে গাছা কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। গাছ না কাটলে মেডিয়ান (বিভাজক) কীভাবে তৈরি করা হবে? গাছ যেগুলো কাটা হচ্ছে তার পরিবর্তে আরও ভালো প্রজাতির গাছ লাগানো হবে।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, আবাহনী মাঠের সামনে থেকে ধানমন্ডি ১৫ নম্বর পর্যন্ত বিভাজকে গাছ লাগানোর জন্য যেটুকু জায়গা রাখা হয়েছে, তাতে বড় আকারের কোনো গাছের বেড়ে ওঠা সম্ভব নয়।

গাছ কাটার প্রতিবাদে জানুয়ারিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন এলাকাবাসী। তিন মাস বন্ধ থাকার পর গত সোমবার রাতে আবার গাছ কাটা শুরু হয়। পরে স্থানীয় লোকজনের প্রতিবাদের মুখে বন্ধ হয় গাছ কাটা। তবে ততক্ষণে কেটে ফেলা হয় শতাধিক গাছ।

সাতমসজিদ রোডে গত সোমবার রাতে গাছ কাটার সময় প্রতিবাদ করেন স্বতন্ত্র আর্ট ও মিউজিয়াম কিউরেটর আমিরুল রাজীব। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সোমবার রাতে গাছ কাটার সময় বাধা দিই। না শুনলে পুলিশকে জানাই। তবে পুলিশের এই বিষয়ে এখতিয়ার না থাকায় তা বন্ধ করা যায়নি। এর মধ্যে প্রায় এক শ গাছ কেটে ফেলেছে তারা।’

গাছ কাটার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাতে সাতমসজিদ রোডে মানববন্ধন করা হয়। তাতে অংশ নেন সমাজকর্মী সুলতানা কামাল, খুশি কবিরসহ এলাকাবাসী।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর, অঞ্চল ও পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আদিল মোহাম্মদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা শহরে এভাবে সড়ক বিভাজক ভেঙে নতুন করে করা কর্তৃপক্ষের এক ধরনের শৌখিনতায় পরিণত হয়েছে। আদৌ এই সড়ক বিভাজক ভেঙে ফেলার প্রয়োজন আছে কি না তা দেখতে হবে। যদি সৌন্দর্যবর্ধন করতেই হয় তবে গাছ কেন কাটতে হবে? দীর্ঘদিন ধরে এই বিভাজকের ওপরে গাছ ছিল। এক ধরনের সবুজায়ন তৈরি হয়েছে। এই নগর পরিকল্পনাবিদ বলেন, এই প্রকল্প প্রকৌশলীরা বাস্তবায়ন করছেন। অথচ এটা নগর পরিকল্পনাবিদের কাজ।

বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, গাছ কেটে আবার সেখানে কংক্রিটের একটা বিভাজক তৈরি করার যে প্রকল্প তাতেই বোঝা যায় যে তারা গাছের গুরুত্ব বোঝে না। গাছের নিচে পুলিশ বক্স ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, এই গাছ কাটার ফলে আর ঠান্ডা অনুভূত হয় না এখানে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত