Ajker Patrika

ব্লাস্ট রোগে নষ্ট ধান দিশেহারা কৃষক

মো. গোলাম মোস্তফা, পূর্বধলা
ব্লাস্ট রোগে নষ্ট ধান দিশেহারা কৃষক

নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় বোরো ধানের খেতে ‘নেক ব্লাস্ট’ রোগের আক্রমণ দেখে দিয়েছে। এতে নষ্ট হয়ে গেছে কৃষকের ধান। এই রোগে কোনো কোনো কৃষকের বোরোখেত সম্পূর্ণ নষ্ট আবার কারোর ফলন কমার আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তাঁরা।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২১ হাজার ৭৮০ হেক্টরে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। অনুকূল আবহাওয়া ও মৌসুমের শুরুতে সেচসুবিধার ফলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। এ বছর ব্রি-ধান ২৮, ২৯, ৮১, ৫৮, ৮৪, ৮৮, ৮৯ ও উচ্চফলনশীল জাতের ধান রোপণ করেছেন কৃষক। এর মধ্যে প্রায় ২৩ শতাংশ জমিতে ব্রি-ধান ২৮ জাতের চাষ হয়েছে। আর ব্রি-২৮ জাতের ধানের খেতেই নেক ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ বেশি দেখা দিয়েছে।

ভুক্তভোগী কৃষকেরা জানান, ধানে থোড় হওয়ার আগে পাতায় এক ধরনের দাগ দেখা দেয়। কিছুদিন পর ধানগাছের কাণ্ডে রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। শিষ বের হওয়ার পর দূর থেকে দেখে মনে হবে খেত পেকে গেছে।

হোগলা গ্রামের ফারুক হোসেন ফকির জানান, তিনি এ বছর অন্যান্য জাতের পাশাপাশি ৬০ শতকে ব্রি-ধান ২৮ জাতের বোরো আবাদ করেছিলেন। কিন্তু ব্রি ২৮ জাতের ধানের শিষ বের হওয়ার পর দেখতে পান শিষ সাদা হয়ে মরে যাচ্ছে। স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে বালাইনাশক প্রয়োগ করলেও কোনো কাজ হয়নি। ইতিমধ্যে শিষ বের হওয়া শেষ হয়েছে। কিন্তু এখন নেক ব্লাস্টে ধানের খেত যেভাবে নষ্ট হয়েছে, তাতে ধান কাটতে পারবেন না বলে জানান তিনি। তবে অন্য জাতের ধানের ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান ফারুক হোসেন।

খলিশাউড় ইউনিয়নের বনপাড়া গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ৮০ শতক জমির মধ্যে গত এক সপ্তাহে নেক ব্লাস্ট রোগে অর্ধেক নষ্ট হয়ে গেছে। এই জমির ধান আর কাটতে পারব না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বোরো ধান নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, নেক ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধে উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে স্কোয়াড গঠন করা হয়েছে। নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন করে ব্লাস্টসহ ধানের অন্যান্য বালাই দমনে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

ব্রি-২৮ জাতের ধানে নেক ব্লাস্ট রোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, এ জাতটি প্রায় ২০-২৫ বছরের বেশি সময় ধরে চাষ হচ্ছে। ফলে এ জাতের রোগবালাই প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে। নেক ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকায় ব্রি-৮৮ ও 
ব্রি-৮৯ জাতের ধান চাষের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত