Ajker Patrika

ইভিএম মেরামতে ১২৬০ কোটি টাকা চায় ইসি

মারুফ কিবরিয়া, ঢাকা
Thumbnail image

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কতটি আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ করা হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কারণ, সংস্থাটির হাতে যে ১ লাখ ১০ হাজার ইভিএম আছে, সেগুলোর বেশির ভাগ বিকল। এই অবস্থায় বিকল ইভিএম মেরামতের জন্য সরকারের কাছে ১ হাজার ২৬০ কোটি ৯০ লাখ টাকা চেয়েছে ইসি। এই টাকা পেতে এরই মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে কমিশন।

সূত্র জানায়, নষ্ট ইভিএম মেরামত করতে বরাদ্দ চেয়ে ২১ মার্চ অর্থ বিভাগে চিঠি দেয় ইসি। যদি একসঙ্গে সব পাওয়া না যায়, সে ক্ষেত্রে দুই ধাপে হলেও টাকা দিতে অনুরোধ করেছে সংস্থাটি। এ ক্ষেত্রে প্রথম ধাপে চলতি অর্থবছরের মধ্যে ৬৩০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। পরের ধাপে বাকি ৬৩০ কোটি টাকা আগামী অর্থবছরে দিলেও চলবে বলে জানিয়েছে ইসি।

এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ইভিএম মেরামতসহ জাতীয় নির্বাচনী ব্যয় বাবদ প্রায় চার হাজার কোটি টাকা চেয়ে অর্থ বিভাগে চিঠি দিয়েছিল ইসি। শিগগির এই চিঠির জবাব না আসায় এই মুহূর্তে শুধু ইভিএম মেরামতের জন্য টাকা চেয়েছে সংস্থাটি। এ-সংক্রান্ত চিঠি পাঠানোর দুই দিন কেটে গেলেও অর্থ বিভাগ থেকে এখনো সাড়া পায়নি ইসি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আশা করছি, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই অর্থ বিভাগ ইসির পাঠানো চিঠির জবাব দেবে। দেখি কী হয়।’

অর্থ বিভাগ যদি ইসির চাওয়া পূরণও করে, সে ক্ষেত্রে হাতে থাকা তিন মাসের মধ্যে নষ্ট ইভিএমগুলো মেরামত সম্ভব কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে অশোক কুমার বলেন, টাকা পেলে সবই সম্ভব। আর খরচের বিষয়টা তো দেখবে বিএমটিএফ (বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি)। তারাই ইভিএমগুলো মেরামত করে নির্বাচনের জন্য ব্যবহারযোগ্য করে তুলবে।

পাঁচ সিটিতে ইভিএমে ভোট
১৫ মার্চ ইসির ১‍৬তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় আগামী মে-জুনের মধ্যে গাজীপুর, বরিশাল, সিলেট, রাজশাহী ও খুলনা সিটি করপোরেশনে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সভা শেষে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানিয়েছেন, ২৩ মে থেকে ২৯ জুনের মধ্যেই এসব সিটি করপোরেশন নির্বাচন হবে। এই পাঁচ সিটিতে ইভিএমে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

চলতি অর্থবছর শেষ হওয়ার তিন মাস বাকি। এই অল্প সময়ের মধ্যে নষ্ট হওয়া ইভিএম কতটা সারিয়ে তোলা যাবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রিফাত শাহরিয়ার বলেছেন, ‘তিন মাসের মধ্যে এত পরিমাণ ইভিএম মেরামত করা খুবই কঠিন। যদি ধরি, একটা ইভিএম মেরামত বাবদ ১০ হাজার টাকা দরকার, তাহলে সেটা সম্ভব। কিন্তু যে পরিমাণ টাকা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে চাওয়া হয়েছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে ইভিএমগুলোয় বড় ধরনের সমস্যা রয়েছে। সেগুলো মেইনটেন্যান্স করা এতটা সহজ নয়।’

পাঁচ সিটিতে ইভিএমে ভোট গ্রহণ চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, যন্ত্রগুলো কতটা ত্রুটিপূর্ণ তা সবার জানা নেই। এ ছাড়া ইভিএমে নির্বাচন নিয়ে অনেক জটিলতা ও বিতর্ক রয়েছে। নতুন করে বিতর্ক না করাই শ্রেয়। রাজনৈতিক দলগুলো ইভিএম চায় না। তাই এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত