Ajker Patrika

আলুর দাম উৎপাদন খরচের অর্ধেক

এস এম রকি, খানসামা (দিনাজপুর)
আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ৪৯
আলুর দাম উৎপাদন খরচের অর্ধেক

দিনাজপুরের খানসামায় ভালো ফলন পেয়েও আলুচাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে গিয়ে দাম পাওয়া যাচ্ছে চাষের খরচের অর্ধেক। সব কৃষক একসঙ্গে জমি থেকে আলু উত্তোলন করায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

গত বছর এই সময়ে চাষিরা মাঠেই প্রতি কেজি আলু বিক্রি করেছেন ১৫ থেকে ১৬ টাকা দরে। এবার এই দাম পাওয়া যাচ্ছে ৫ থেকে ৬ টাকা। যেখানে প্রতি কেজিতে উৎপাদন খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১২ টাকা। উৎপাদন খরচের অর্ধেক দামে এভাবে আলু বিক্রির ফলে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন চাষিরা।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, কৃষিপ্রধান জেলা দিনাজপুরের খানসামার জমি আলু চাষের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার আলু রাজধানীসহ অন্য জেলাতেও সরবরাহ করা হয়। বর্তমান বাজারে অন্যান্য সবজির দাম বেশি হলেও আলুর দাম অনেক কম। তবে হাইব্রিড জাতের চেয়ে দেশি জাতের আলুর দাম তুলনামূলক বেশি রয়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমি। তবে চাষ হয়েছে ৩ হাজার ২৫০ হেক্টরে। আলুর ফলন অনেক ভালো হয়েছে।

সিট আলোকডিহি গ্রামের চাষি সোহেল রানা জানান, এক বিঘা জমিতে আলু উৎপাদন করতে সাধারণত ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা খরচ হয়। এতে গড়ে ৭৫ মণ আলু পাওয়া যায়। এই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ ১০ থেকে ১২ টাকা, আর এবার এই খরচ আরও বেড়েছে।

বালাপাড়া গ্রামের লিটন ইসলাম বলেন, ‘এবার দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। গত বছর ভালো দাম পেয়ে লাভবান হয়েছিলাম, কিন্তু এবার ছয় টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে, তবু ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। আলু চাষে ক্ষতির মুখে পড়েছি, সঙ্গে আগ্রহও কমে যাচ্ছে।’

ব্যবসায়ীদের তথ্য অনুযায়ী, পাইকারেরা চাষিদের কাছ থেকে হাইব্রিড জাতের আলু প্রতি কেজি পাঁচ থেকে ছয় টাকায় কিনে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছেন ৮ থেকে ১০ টাকায়। খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ১৬ টাকা কেজি। ফলে কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়লেও লাভবান হচ্ছেন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব রায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে সবাই একই সঙ্গে আলু তোলায় দাম কম। সময়ের সঙ্গে দাম কিছুটা বাড়বে। এতে চাষিদের লোকসান কমে যাবে। চাষিদের যেকোনো পরামর্শ দেওয়ার জন্য কৃষি বিভাগ মাঠপর্যায়ে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত