Ajker Patrika

আরেক দফা বেড়েছে পণ্যের দাম

জাহাঙ্গীর আলম, জামালপুর
আপডেট : ২১ মে ২০২২, ১১: ১৬
আরেক দফা বেড়েছে পণ্যের দাম

জামালপুরে সব ধরনের পণ্যের দাম আরেক দফা বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। ইতিমধ্যে ক্রয়ক্ষমতা মানুষের সাধ্যের বাইরে চলে গেছে। এক মাসের ব্যবধানে পণ্যের দাম আরেক দফা বেড়েছে। নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় বাজারগুলোয় ক্রেতার সংখ্যা কম। তবে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলেছে, কেউ সরকারনির্ধারিত মূল্যের বেশি দাম নিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গতকাল শহরের বড় দুটি বাজার দৈনিক আনন্দগঞ্জ বাজার ও স্টেশন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাধারণত ক্রেতারা সপ্তাহের বাজার করতে শুক্রবার সকাল থেকে বাজারে ভিড় করেন। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। শুক্রবার যেখানে ক্রেতার ভিড়ে বাজারগুলোয় স্বাভাবিকভাবে চলাচল করা যেত না, সেখানে ক্রেতা নেই বললেই চলে।

দেখা গেছে, চাল, ডাল, পেঁয়াজ, মরিচ, মাছ, মাংস, তেল থেকে শুরু করে সবজির দামও লাগামহীনভাবে বেড়েছে। বাজারে পেঁয়াজের দাম ২৫ থেকে বেড়ে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া তেল ৫ লিটারের বোতল ৭৬০ থেকে বেড়ে ৯৮৫ টাকা, খোলা সয়াবিন ১৩৫ থেকে বেড়ে ১৮০ টাকা, ডিমের হালি ৩০ থেকে বেড়ে ৩৮ টাকা, রসুন ৪০ থেকে বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আটার দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। ৩০ টাকা কেজির আটা হয়েছে ৪৫ টাকা। বেড়েছে ময়দার দামও। ৫০ টাকা কেজির ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে শিশুখাদ্যের দাম। গুঁড়া দুধ ১০০ থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫২০ টাকা। বেড়েছে সরিষার তেলের দামও। ২০০ টাকার সরিষার তেল ২৪০ টাকা। কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে আদার দাম। গত মাসে আদার কেজি ছিল ৭০ টাকা, এখন ১০০ টাকা। তবে রমজানে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া বেগুন এখন বাজারে ৪০ টাকা কেজি। এ ছাড়া আলুর দাম কেজিতে বেড়েছে ৪ টাকা। ১৬ টাকার আলু এখন কেজি ২০ টাকা, কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। গত মাসে বিক্রি হয়েছিল ৬০ টাকা।

বাজারে আসা বাগেরহাট গ্রামের পেশায় রাজমিস্ত্রি মোশারফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সংসারে ৮ সদস্যের ভরণপোষণ করতে হয়। দিনে আয় হয় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। এই টাকায় বাজারে কিছুই কেনা সম্ভব হয় না। পেটে কিছু না পড়লে বাঁচব কেমনে? তাই কিছু কিছু করে প্রতিদিনই নিতে হয়। আগে তো দুই-তিন দিনের বাজার করতে পারতাম।’

আমলাপাড়ার ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ঘুরে ঘুরে বাজার করছেন। দাম শুনে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরছেন। তবে সব দোকানে একই দাম। তিনি বলেন, ‘বাজারের জিনিসপত্রের দাম নিয়ে কী বলব। আগে যা কিনতাম, এখন অর্ধেক কিনছি। এই হলো আমাদের অবস্থা।’

শেখেরভিটার ওয়াহাব মিয়া অটোরিকশাচালক। সারা দিনে তাঁর আয় ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। আগে রাখতে হয় সমিতির ঋণের কিস্তির ১০০ টাকা। এরপর বাজারের চিন্তা। ওয়াহাব বলেন, ‘গরিবের মরণ। ২০০-৩০০ টাকায় এখন আর বাজার হয় না। আগে ১০০ টাকায় মাছ-তরিতরকারি কেনা যেত। এখন তো আধা কেজি তেলই কিনতে হয় ১০০ টাকায়। তেল ছাড়া খামু কেমনে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যারা নিম্ন আয়ের মানুষ, তারা চরম হতাশায় আছি।’

দৈনিক আনন্দগঞ্জ বাজারের রবিন স্টোরের মালিক আনিছুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সব ধরনের জিনিসের দাম গত এক মাসে বেড়েছে। ফলে আগের চেয়ে বেচাকেনা কমে গেছে। বাজারে ক্রেতা আসছে না। শুক্রবার ক্রেতার ভিড় সামলাতে ৩-৪ জন বাড়তি লোক রাখতে হতো। এখন বাজারে কাস্টমার নেই। সরকারি চাকরিজীবীরা তেমন একটা আসছেন না। তাঁরা সপ্তাহের বাজার শুক্রবারেই করে রাখতেন। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে।’ আনিছুর রহমানের মতো মুছা স্টোরের মালিক আবু মুছা, রবি স্টোরের মালিক রবিও একই কথা বললেন।

জামালপুর ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আরিফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন বাজার নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

মির্জা ফখরুলের কাছে অভিযোগ, ১৬ দিনের মাথায় ঠাকুরগাঁও থানার ওসি বদলি

এক ফ্যাসিস্ট নেত্রীর পাল্লায় পড়ে পুলিশ খারাপ হয়েছিল: এসপি

বিএনপি নেতা নাছিরের দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ দুই সৎভাইয়ের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত