Ajker Patrika

ডায়রিয়া রোধে টিকা পাবেন ২৩ লাখ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২২, ১১: ২৪
ডায়রিয়া রোধে টিকা পাবেন ২৩ লাখ মানুষ

ডায়রিয়ার প্রকোপ কমাতে টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আগামী মাসেই শুরু হবে টিকাদান কর্মসূচি। ডায়রিয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত রাজধানীর পাঁচটি স্থানের ২৩ লাখ মানুষকে কলেরার টিকা দেওয়া হবে। জায়গাগুলো হলো যাত্রাবাড়ী, দক্ষিণখান, মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও বাড্ডা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম গতকাল বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘এ বছর দেশে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা ও এর আশপাশের জেলাগুলোয় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি।’ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডায়রিয়ার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে যাত্রাবাড়ীতে। যেখানে সপ্তাহে আক্রান্ত হচ্ছেন সাড়ে এগারো শ মানুষ। যা অন্য এলাকার দ্বিগুণ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র নাজমুল বলেন, ‘দেশজুড়ে ডায়রিয়ার রোগী বাড়তে থাকলেও সবাইকে টিকা দেওয়া আপাতত সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে কলেরার টিকার সংকট রয়েছে। আমরা যা পেয়েছি, সেগুলো নাইজেরিয়া ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আমাদের দিয়েছে। সরবরাহ বাড়লে ঢাকার বাইরেও দেওয়া হবে।’

চলতি বছরের মার্চের মাঝামাঝি থেকে এখন পর্যন্ত দৈনিক ১ হাজার ২০০ রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছেন কেবল রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে। আইসিডিডিআরবি সূত্রে জানা গেছে, ডায়রিয়ায় ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, তাঁদের কাছে চারজনের তথ্য রয়েছে। এ বিষয়ে নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা হয়তো পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাইনি। তথ্য পেলে তদন্ত করে দেখব।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আরেক মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, যাত্রাবাড়ীতে নিরাপদ পানির সংকট বেশি। পানির উৎস নিরাপদ না হলে সমস্যা কমবে না।

এদিকে ডায়রিয়ার জন্য সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আঞ্চলিক কার্যালয়-৩-এ গতকাল কঠিন বর্জ্যব্যবস্থা নিয়ে সভা আয়োজন করে দুস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র (ডিএসকে), কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর (কাপ), বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ (বারসিক) এবং ইনসাইটস্।

সভায় ডিএনসিসির অঞ্চল-৩-এর সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আজিজুন নেছা বলেন, বস্তিতে বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা না করা হলে পানি ও বায়ুদূষণ হবে। অব্যবস্থাপনার কারণে কড়াইলসহ বিভিন্ন বস্তিতে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। ডায়রিয়া, কলেরাসহ নানা রকম পানিবাহিত রোগ বাড়ছে।

কড়াইল বস্তি উন্নয়ন কমিটির সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ময়লা সংগ্রহ করি। অনেক সময় ময়লা সংগ্রহ করার পর সিটি করপোরেশনের বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রে (এসটিএস) দিলে, তারা নিতে চায় না। এতে বস্তির পরিবেশ খারাপ হয়ে যায়। রোগ-শোক ছড়ায়।’

বস্তির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সিটি করপোরেশনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে কাপের নির্বাহী পরিচালক খোন্দকার রেবেকা সান ইয়াত বলেন, বর্জ্য অব্যবস্থাপনার কারণে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি দূষণ হয়। বস্তিগুলোতে এ সংকট আরও বেশি। বস্তি এলাকাও এই শহরের অংশ। বস্তি ভালো থাকলে পুরো শহর ভালো থাকবে। এর জন্য ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে এগিয়ে আসতে হবে।

সভায় ডিএনসিসির সংরক্ষিত কাউন্সিলর আমেনা বেগম সভাপতিত্ব করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত