Ajker Patrika

রিমান্ড শেষে ৩৭ আসামি কারাগারে

পীরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২১, ১৫: ৪০
রিমান্ড শেষে ৩৭ আসামি কারাগারে

পীরগঞ্জের বড় করিমপুর কসবা গ্রামের মাঝিপাড়ায় হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মামলায় ৩৭ আসামির রিমান্ড শেষ হয়েছে। গতকাল রোববার তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পুনরায় রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ৩৮ আসামিকে পীরগঞ্জ আমলি আদালতে তোলা হলে ৩৭ জনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছিলেন বিচারক ফজলে এলাহী খান। সেই সঙ্গে এক আসামির বয়স ১৮ বছরের কম হওয়ায় তাকে শিশু আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

এদিকে হামলার প্রধান উসকানিদাতা সৈকত মণ্ডল ও রবিউল ইসলামকে পীরগঞ্জ থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল আদালতে পাঠানো হয়েছে।

পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্র বলেন, ‘রিমান্ডে নেওয়া আসামিরা ঘটনার ব্যাপারে যেসব তথ্য দিয়েছে তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তবে কেউ সরাসরি হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেনি।’

ওসি আরও বলেন, ‘সৈকত আর রবিউল ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদেরও কোর্ট হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।’

অভিযোগ রয়েছে, গত ১৭ অক্টোবর রাতে মাঝিপাড়ার পরিতোষ সরকার ধর্ম অবমাননা করে ফেসবুক পোস্টের মন্তব্যের ঘরে ছবি পোস্ট করেন। এ ঘটনায় উগ্রবাদীরা পরিতোষের বাড়ি ঘেরাও করেন। তার আগেই পরিতোষ সপরিবারে পালিয়ে যান। আর উত্তেজিত জনতার হাত থেকে পীরগঞ্জ থানা-পুলিশ পরিতোষের পাড়ার বাড়িঘর রক্ষা করতে পারলেও উত্তরপাড়ার হিন্দুপল্লি রক্ষা করতে পারেনি। সেখানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে দুটি গরু এবং ৩১টি ঘর পুড়ে যায়। আর প্রায় অর্ধশত ঘরে লুটপাট ও ভাঙচুর করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশের করা চার মামলায় ৬২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

হামলার উসকানিদাতা সৈকত মণ্ডল ও রবিউল ইসলামকে গত শুক্রবার রাতে ঢাকার অদূরে টঙ্গী থেকে র‍্যাব আটক করে। সৈকত পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের চেরাগপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজের দর্শন বিভাগ ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন। তাঁকে গত ১৮ অক্টোবর সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। আর রবিউল মাঝিপাড়ার পাশের বটেরহাট জামে মসজিদের ইমাম এবং খেজমতপুর গ্রামের বাসিন্দা।

এদিকে মাঝিপাড়ায় এখন ধীরে ধীরে আতঙ্ক কাটছে, ফিরছে স্বস্তি। ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের পাশে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা ও ব্যক্তি সহায়তা নিয়ে দাঁড়িয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া টিন দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলোর মেরামত প্রায় শেষের দিকে। প্রতিটি বাড়িতেই এখন লোকজন ফিরে এসে বসবাস করছেন। তিন দিন আগেই রেডক্রিসেন্টের দেওয়া চারটি তাঁবু গুটিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর গত শুক্রবার থেকে ক্ষতিগ্রস্তরা নিজ বাড়িতে রান্না করা খাবার খাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত