Ajker Patrika

ঢলের পানিতে ডুবল পাকা ধান

গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ মে ২০২২, ১৮: ১৭
Thumbnail image

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের উজানের ঢলে প্রায় তিন হাজার বিঘার পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন রাধানগর ইউনিয়নের বিল কুজন ও এর সংলগ্ন বিল এলাকার কৃষকেরা। ধান কাটার শেষ মুহূর্তে এসে এমন পরিস্থিতিতেও মিলছে না শ্রমিক। ফলে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে শ্রমিক ও নৌকার ভাড়া করতে হচ্ছে।

এদিকে বিলের পানি প্রতিদিন বাড়তে থাকয় আরও শত হেক্টর জমির ধান তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কৃষক ও এলাকাবাসীর দাবি, পুনর্ভবা নদী খননসহ বিলকুজইন ঘাটে স্লুইসগেট বা সেতু নির্মাণ করা হোক।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক দিন থেকে পুনর্ভবা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিলের নিম্নাঞ্চলে ফসল তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকার বিল কুজন, সুকডোবা, দুবইলনাইন, চন্দের বিলসহ বেশ কয়েকটি বিলের পাকা ধান তলিয়েছে। ধানগুলো নিয়ে কৃষকের মধ্যে চলছে হাহাকার। যে যতটুকু পাড়ছে ধান কেটে উঁচু জায়গায় রাখছে। অনেকে ডুব দিয়ে ধান কাটছেন। তবে শ্রমিক-সংকট থাকায় অনেকে ডুবে যাওয়ার পাকা ধান কাটতে পারছেন না।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৫ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষা হয়েছে। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ওই বিলেই রয়েছে ১ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমির ধান। এর মধ্যে প্রায় ৪০০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে।

চেরাডাঙ্গার গ্রামের কৃষক খায়রুল ইসলাম বলেন, তাঁর সাত বিঘার ধান গাছ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বাকি পাঁচ বিঘা জমির ধান কেটে আনতে পারছেন না তিনি।

আরেক কৃষক রবিউল বলেন, কুজইন বিলে তাঁর সাড়ে পাঁচ বিঘার ধান কেটে জমিতে রাখা ছিল। কোনো কিছু বোঝার আগেই ঢলের পানিতে তাঁর ধান তলিয়ে গেছে। তাঁরমতো অনেকের একই অবস্থা।

ধানকাটা শ্রমিক জাব্বার বলেন, ভোলাহাট উপজেলা থেকে ধান কাটতে এসেছেন তিনি। ৯০০ টাকা করে দিনমজুরের কাজ করছেন। এ ছাড়া নৌকায় ধান নিয়ে আসতে ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে।

এলাকাবাসীর দাবি, কুজন ঘাটে একটি সেতু বা স্লুইসগেট নির্মাণ করা হলে প্রতিবছরের মতো এ অবস্থা হতো না। তাঁরা চান এ অঞ্চলের কৃষকের দুরবস্থার কথা মাথায় রেখে দ্রুত এর সমাধানের ব্যবস্থা করা হোক।

রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান বলেন, কৃষকেরা দিনরাত বিলের ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাঁরও ২২ বিঘার ধান ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভির আহমেদ সরকার বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন তিনি। তিনি কৃষকের দুরবস্থা দেখেছেন। কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক এম কে এম গালিভ খান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে সহায়তা দেওয়া হবে। এলাকাবাসীর ও কৃষকদের দাবির প্রেক্ষিতে একটি স্লুইসগেট ও সেতু নির্মাণের আশ্বাস দেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত