Ajker Patrika

সেতু-কালভার্ট আছে, খাল নেই

পাবনা ও চাটমোহর প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২২, ১৩: ০২
Thumbnail image

পাবনার চাটমোহরে বিভিন্ন এলাকার সড়কপথে সেতু-কালভার্ট আছে, কিন্তু খাল নেই। একের পর এক খাল ভরাট হওয়ায় সেতু ও কালভার্টগুলো দৃশ্যমান রয়েছে, কিন্তু খালগুলো অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। ফলে সড়কের একপাশ থেকে অন্যপাশে পানি চলাচল করতে পারছে না। লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুগুলো নির্মিত হলেও কার্যকারিতা হারিয়েছে।

একসময় পাবনা-বাঘাবাড়ি সড়কের চাটমোহর অংশ, চাটমোহর-ছাইকোলা সড়কসহ অন্য কিছু সড়কের দুই পাশে বেশকিছু খাল ছিল। যাতায়াতের সুবিধার কারণে সড়ক যোগাযোগ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে সরকার বিভিন্ন সময় খালগুলোর ওপর সেতু-কালভার্ট নির্মাণ করে। কিন্তু সেই সেতু বা কালভার্টের দুই পাশের মালিকেরা তাঁদের জমি ভরাট করে ফেলেন। ফলে কালভার্টগুলো দাঁড়িয়ে থাকলেও অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে খালগুলো। এ ছাড়া চাটমোহর-ছাইকোলা সড়কের খালগুলোর অনেকাংশ দখল করে ভরাট করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এতে পানির স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে।

জানা গেছে, পাবনা-বাঘাবাড়ি সড়কের চাটমোহর অংশে উথুলী, হারানমোড় এলাকাসহ বেশকিছু স্থানে সেতুর দুই পাশের মালিকেরা তাঁদের জমি ভরাট করায় সেতু কার্যকারিতা হারিয়েছে। চাটমোহর হাসপাতাল গেট থেকে ছাইকোলা অভিমুখী সড়কের ধানকুনিয়া, কাটেঙ্গা ও ছাইকোলা এলাকায় গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। সেগুলোর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।

চাটমোহর-ছাইকোলা সড়কের ধানকুনিয়া থেকে ছাইকোলার দূরত্ব প্রায় ছয় কিলোমিটার। এসব এলাকার গ্রামগুলোর পূর্বপাশে গুমানী নদী এবং পশ্চিমে কয়েকটি বিল। নদীর সঙ্গে বিলের সংযোগ খালগুলো দিয়ে বর্ষার পানি বিলে প্রবেশ করত। ইতিমধ্যে বিভিন্ন সময় মাটি ফেলে সবগুলো খাল ভরাট করা হয়েছে। পশ্চিম পাশের বিলগুলোর পানি নিয়ন্ত্রণের জন্য বিলচলন ইউনিয়নের নটাবাড়িয়া ও চরসেনগ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া কিনু সরকারের জোলায় (খালে) একটি স্লুইসগেট নির্মাণ করা হয়েছে। গুমানী নদীর সঙ্গে বিলের সংযোগ খালগুলো ভরাট করে ফেলার পরও সেগুলোর ওপরে অপ্রয়োজনীয় সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সড়কটির এ অংশের কোনো খালই এখন সচল নেই। এ ছাড়া আরও কিছু সড়কের সেতুসংলগ্ন খাল ভরাট করে ফেলছেন জমির মালিকপক্ষ।

কাটাখালী গ্রামের ইশারত আলী বলেন, নাটোরের জোনাইলের সোন্দভা এলাকা থেকে বড়াল নদের একটি খাল কাটাখালী-বাঙ্গাল্লা হয়ে চিকনাই নদীতে পড়েছে। এ খালের প্রায় পুরোটাই বিভিন্ন পন্থায় অসাধু ব্যক্তিরা দখল করে ভরাট করে ফেলেছেন। অনেক আগে কাটাখালী বাজারের অংশে এ খালের ওপর একটি সেতু নির্মিত হয়েছিল। সেতুটি এখনো দাঁড়িয়ে থাকলেও দুই পাশ ভরাট করায় অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে খালটি।

খাল ভরাটের বিষয়ে চলনবিল রক্ষা আন্দোলন ও বড়াল নদ রক্ষা আন্দোলনের সদস্যসচিব এস এম মিজানুর রহমান বলেন, অননুমোদিত খাল ভরাটের অধিকার কারও নেই। এগুলো দেখার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের। প্রশাসন অনেক সময়ই দেখে না। প্রশাসনের অবহেলার কারণে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থে জমির মালিকেরা বা এলাকাবাসী খাল ভরাট করছেন। পরিবেশের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। কোনো কোনো এলাকায় অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।

এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) আবুল মনসুর আহমেদ বলেন, তাঁরা সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরবচ্ছিন্ন রাখতে কাজ করছেন। অনেক সময়ই বিভিন্নভাবে কেউ কেউ কালভার্ট বা সেতুর সম্মুখ ভাগ ভরাট করছেন। তবে সেটি যদি সেতু বা কালভার্টের মুখে হয়, তাহলে বিষয়টি তাঁরা দেখবেন। তবে যদি দূরে হয়, তাহলে স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড দেখতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত