Ajker Patrika

৬ বিলিয়ন ডলার চেয়ে চার দাতা সংস্থাকে চিঠি

শাহ আলম খান, ঢাকা
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯: ১৫
৬ বিলিয়ন ডলার চেয়ে চার দাতা সংস্থাকে চিঠি

ডলার-সংকটে সরকার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও সারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের আমদানি বিল কয়েক মাস ধরে পরিশোধ করতে পারছে না। অন্যান্য পণ্যেও আমদানি বিল বকেয়া থাকায় বড় লটে আমদানিও করা যাচ্ছে না। এদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের স্থিতিশীলতা ধরে রাখাও জরুরি। এমন বাস্তবতায় বিদেশি দাতা সংস্থাগুলোর শরণাপন্ন হয়েছে সরকার। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ (আইএমএফ) চার আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে ঋণ হিসেবে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজেট সহায়তা চেয়ে চিঠি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, আইএমএফের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের চলমান ঋণ কর্মসূচির বাইরে অতিরিক্ত ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়ে সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও জাইকার কাছে ১ বিলিয়ন ডলার করে নতুন ঋণ সহায়তা দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ঋণ চেয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে অর্থসচিব ড. মোহাম্মদ খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, শিগগির সংস্থাগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হবে।

অর্থ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, সংস্থা চারটির কাছ থেকে মৌখিকভাবে ঋণের আশ্বাস পেয়েই তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে ঋণ প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সম্প্রতি এক অনলাইন সভায় আইএমএফের কাছ থেকে এই ঋণ পাওয়ার বিষয়ে মৌখিক সম্মতি পাওয়া যায়। এ বিষয়ে আগামী অক্টোবরে আইএমএফের বার্ষিক সাধারণ সভায় সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা হবে। সেখানেই ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ মঞ্জুরের সবুজ সংকেত পাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া চলতি মাসে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজারের ঢাকা সফরে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণের বিষয়ে আলোচনা হবে। বিশ্বব্যাংক এই বাজেট সহায়তায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ভর্তুকি প্রত্যাহার করা এবং নতুন পাওয়ার সেক্টর মাস্টারপ্ল্যান দ্রুত চূড়ান্ত করার শর্ত দিতে পারে। সব মিলিয়ে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রস্তাবিত ঋণগুলো পাওয়ার আশা করছেন কর্মকর্তারা। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার শুধু বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও সার আমদানিতেই ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের বিল বকেয়া রেখে গেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকার বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে নিট ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। আর বছরজুড়ে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত ঋণ পেলে বাজেটে লক্ষ্যমাত্রার নিট ঋণের ৭০ হাজার ৮০০ কোটি টাকার (প্রতি ডলারে ১১৮ টাকা ধরে) জোগান আসবে।

জানা গেছে, গত বছরের জানুয়ারিতে আইএমএফের সঙ্গে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি করে সরকার। ইতিমধ্যে ওই ঋণ চুক্তির আওতায় প্রায় ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থসংকটে থাকা পাকিস্তান আইএমএফ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলারের বেলআউট প্রোগ্রাম পেয়েছে। ফলে বাংলাদেশও সংস্থাটি থেকে অতিরিক্ত ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।

দাতা সংস্থার ঋণের এই অর্থের যেন কোনোভাবেই অপচয় না হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এ প্রসঙ্গে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, আগে অনেক অর্থ অপচয় হয়েছে। তবে এখন থেকে জনগণের এই অর্থ আর অপচয় হতে দেওয়া হবে না।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিদ্যমান বাস্তবতার কারণেই হয়তো সরকারকে দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে আবার ঋণ কর্মসূচিতে যেতে হচ্ছে। তবে বাজেট সহায়তা হিসেবে ঋণ নেওয়া হলেও তা কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে, তার অগ্রাধিকারও ঠিক করতে হবে, যাতে অর্থের অপচয় না হয়। এই ঋণ সরকারের আমদানি বিল পরিশোধে ব্যবহার করা যেতে পারে। পাশাপাশি এখন যে সংস্কারমূলক গুচ্ছ উদ্যোগ রয়েছে, সেখানেও ব্যবহার করা যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত