Ajker Patrika

বিরক্ত ক্রেতা, হতাশ বিক্রেতা

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২২, ১০: ৪৭
বিরক্ত ক্রেতা, হতাশ বিক্রেতা

করোনাকালীন বিধিনিষেধ না থাকায় বরিশালের ঈদবাজারেও ভিড় বেড়েছে এবার। কিন্তু পণ্যের দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা গেছে। আবার আশানুরূপ বিক্রি নেই দাবি করে হতাশা প্রকাশ করেছেন বিক্রেতারাও। যদিও নগরীর ছোট-বড় শপিং মল, বিপণিবিতান ঘুরে দেখা গেছে, দাম নিয়ে বিরক্তি ক্রেতাদের। বিরক্তি থাকলেও বেচাকেনা থেমে নেই কোথাও। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের পদচারণায় সরগরম হয়ে থাকছে পুরো নগরী।

একসময় বরিশালবাসীর কাছে ঈদবাজার মানেই ছিল চকবাজার। ঈদপোশাকের জন্য আগে সবাই ভিড় জমাতেন ঐতিহ্যবাহী এই এলাকার দোকানগুলোয়। কিন্তু এবার সেই প্রেক্ষাপট অনেকটাই বদলে গেছে। বরিশালের ঈদবাজারে এবার ক্রেতাদের নজর কেড়েছে ইজি, রিচম্যান, সেইলর, টপ টেনের মতো নামী ব্র্যান্ডের শোরুমগুলো। নগরীর সদর রোড, গির্জা, মহল্লাসহ বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা এসব ব্র্যান্ডের দোকানে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকছে।

নগরের প্রসিদ্ধ পোশাকের দোকান ‘এম আলী’র স্বত্বাধিকারী মো. শাহীন বলেন, করোনায় আগের ঈদগুলোয় ক্রেতার যে চাপ থাকত, এবার তা নেই। আবার বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শাখা বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতারা সেদিকেও ঝুঁকছেন। তা ছাড়া দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণেও অনেকে নতুন পোশাক কেনার আগ্রহ হারিয়েছেন।

তবে ক্রেতারা বলছেন অন্য কথা। চকবাজারে জুতা কিনতে আসা সাবিলা জাহান নামের এক গৃহিণীর দাবি, এবার বেশির ভাগ জামা-জুতোই পুরোনো ডিজাইনের। গত দুই বছরে যা বিক্রি হয়নি, তা গছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা। দামও বেশি।

ব্র্যান্ডের দোকানের পণ্য নিয়ে সাদিয়া খান নামের এক শিক্ষিকা বলেন, ব্র্যান্ডের দোকানের পণ্য ভালো কিন্তু দাম বেশি। বরিশালের মানুষ এখনো তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেনি।

চকবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুর রহিমের দাবি, গত দুই বছরে চকবাজারের ৪৫০ দোকান মালিকের ৩০০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। ঈদকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরে বেচাকেনা বেড়েছে কিন্তু তা আশানুরূপ নয়।

চকবাজার এবং ব্র্যান্ডের দোকানের পণ্যে যাঁরা সন্তুষ্ট হতে পারছেন না, তাঁরা ভিড় জমাচ্ছেন নগরীর বাজার রোডে। এখানে বেশ সাশ্রয়ী দামে পণ্য মিলছে বলে জানালেন একাধিক ক্রেতা। এখান থেকে ৩ হাজার টাকায় দুটি শাড়ি কিনেছেন আসমা আক্তার নামের একজন ক্রেতা। তিনি বলেন, বাজার রোডে পণ্যের দাম চকবাজারের চেয়ে অনেক কম।

বাজার রোডের রামকৃষ্ণ বস্ত্রালয়ের বিক্রেতা কৃষ্ণ মজুমদার বললেন, তাঁরা ক্রেতার রুচি এবং সামর্থ্যের কথা চিন্তা করেই পণ্য বিক্রি করেন।

এদিকে গরিবের বাজার হিসেবে পরিচিত নগরীর হাজি মো. মহসীন মার্কেট ও সিটি মার্কেটেও বেচাকেনা জমে উঠেছে। তবে হাজি মহসীন মার্কেটে পণ্যের অস্বাভাবিক দাম চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে ঘুরে এ অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। একটি দোকানে ২ হাজার টাকা দাম হাঁকিয়ে শেষ পর্যন্ত একটি পাঞ্জাবি ৮০০ টাকায়ও বিক্রি করতে দেখা গেছে। অধিকাংশ পণ্যের ক্ষেত্রেই এমন দাম হাঁকানো হচ্ছে। তীব্র গরমে এমন দরদামে বিরক্ত হয়ে অনেক ক্রেতা চলে যাচ্ছেন সিটি মার্কেটে। মোশারফ হোসেন নামের এক ক্রেতা বললেন, মহসীন মার্কেটে কয়েক গুণ বেশি দাম চাওয়া হয়। সেই তুলনায় সিটি মার্কেটে দাম অনেকটা সহনীয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত