Ajker Patrika

ঢাকায় বোমা পড়লে সবার কী উল্লাস

এ আর চন্দন, ঢাকা
ঢাকায় বোমা পড়লে সবার কী উল্লাস

একাত্তরের ১২ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী দিনাজপুরের খানসামা আক্রমণ করে। সেই আক্রমণে ভারতীয় বাহিনীর ১৫ জন এবং মুক্তিবাহিনীর ৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মিত্রবাহিনী তখন পাকিস্তানি বাহিনীর মেজর খুরশীদ ওমানসহ ১৯ সেনাকে আটক করে।

এরপর মুক্তিবাহিনী নীলফামারীর দিকে এগিয়ে যায়। অন্যদিকে হানাদার বাহিনীর একটি দল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণের মুখে পিছু হটার একপর্যায়ে বিরল থানার বহলা গ্রামে গ্রামবাসীকে মাইকযোগে একত্র হওয়ার নির্দেশ দেয়। সেখানে মাগরিবের আজানের সময় অনেকে নামাজের কাতারে দাঁড়িয়ে গেলে হানাদাররা তাদের ওপর ব্রাশফায়ার করে।

ওই গণহত্যায় শহীদ হন ৩৭ জন নিরীহ মানুষ। এদিন সকালে নরসিংদী হানাদারমুক্ত হয়। মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী বগুড়া মুক্ত করতে এগিয়ে এলে পাকিস্তানি সেনারা বগুড়া শহরের এতিমখানায় অবস্থান নেয়। ওই সময় গাইবান্ধায় থাকা মিত্রবাহিনীর ওপর পাকিস্তানি হানাদাররা গোলাবর্ষণ শুরু করে। ভারতীয় বাহিনী পাল্টা গোলাবর্ষণ চালালে হানাদার সেনারা পালিয়ে যাওয়ার সময় বেশ কয়েকজন সেনাকে গ্রামবাসী পিটুনি দিয়ে মেরে ফেলে। কুমিল্লায় ক্যান্টনমেন্ট থেকে পালিয়ে যাওয়া পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে চান্দিনায় আগের রাতে মিত্রবাহিনীর চলা যুদ্ধের একপর্যায়ে হানাদারদের গোলাবারুদ শেষ হয়ে গেলে ১২ ডিসেম্বর ভোরে প্রায় ১ হাজার ৭০০ হানাদার সেনা মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। এতে চান্দিনা হানাদারমুক্ত হয়। মুক্তিবাহিনী গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ দখল করার পর হানাদার সেনারা গোবিন্দগঞ্জ ছেড়ে নদী পেরিয়ে লামাকাজীতে শক্ত প্রতিরক্ষাব্যূহ গড়ে তুলেছিল। সেই ব্যূহ ভেদ করতে কর্নেল শওকত মিত্রবাহিনীর জেনারেল গিলের কাছে বিমান হামলার সাহায্য চান। এরপর ভারতীয় চারটি মিগ বিমান লামাকাজীতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অবস্থানের ওপর বোমাবর্ষণ করে। মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকাংশ দল একত্রে সিরাজগঞ্জ শহরের উত্তরে শৈলাবাড়িতে হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প আক্রমণ করে। ওই সময় মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে হানাদার বাহিনীর ব্যাপক যুদ্ধের একপর্যায়ে হানাদার বাহিনী টিকতে না পেরে পালিয়ে যায়। 

‘ঢাকায় যখন বোমা পড়ছিল, তখন সকলের কী উল্লাস’ শিরোনামে এদিন কলকাতার যুগান্তরে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে ঢাকা থেকে কলকাতা প্রত্যাগত এক ফরাসি নারীর ভাষ্যে বাংলাদেশের অবস্থা উঠে আসে। ওই নারী যুগান্তরকে বলেন, ‘আমি ২ বছর যাবৎ ঢাকায় আছি। আমি ৭ দিনের মধ্যেই ঢাকা ফিরে যাব। দুঃখিত ঢাকায় নয়, স্বাধীন বাংলাদেশে যাব। আমি ঢাকাকে ভালোবাসি। আমি বাঙালিদের ভালোবাসি।’ 

দিল্লির রামলীলা ময়দানে এক বিশাল জনসভায় এদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বলেন, ‘ভারত নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই পাকিস্তানের দুর্দশার জন্য দায়ী। কমিউনিজম ঠেকানোর নামে সামরিক সাহায্য দিয়ে এবং গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধে ইন্ধন জুগিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই পাকিস্তানের গোরস্তান রচনার পথ প্রশস্ত করেছে। কারণ, এই সামরিক সাহায্যই পাকিস্তানের জঙ্গি শাসকদের উদ্ধত এবং আপন জনগণের প্রতি উদাসীন করে তুলেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

পারভেজ হত্যায় অংশ নেয় ছাত্র, অছাত্র ও কিশোর গ্যাং সদস্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত