শিপুল ইসলাম, তারাগঞ্জ ও আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া
দুই বছরে চারবার ঘর সরিয়েছেন। বসতভিটা হারিয়ে ফের বাঁচার জন্য নতুন ঘর বেঁধেছিলেন। ৬০ শতক জমিতে করেছিলেন আমন ধানের চাষ। আধপাকা আমনখেত নিয়ে স্বপ্ন দেখছিলেন গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের চর ইচলীর কৃষক ছাইয়াদুল ইসলামের। কিন্তু গত ২০ অক্টোবর আকস্মিক বন্যায় ফুলেফেঁপে ওঠে তিস্তা। বাঁধ ভেঙে ঘরবাড়ি, গরু-ছাগলের সঙ্গে ভেসে যায় তাঁর সোনালি ফসল। সব হারিয়ে তিনি এখন নিঃস্ব। একদিনের বন্যা চলে গেছে। ফের জেগে উঠেছে চর। সেই চরে এখন সবুজ ফসলের খেত নেই। আছে কৃষকের বুকফাটা হাহাকার, ধুয়ে মুছে নেওয়া মাটিপোড়া মানুষের ফসলহানির ক্ষত।
ছাইয়েদুল ইসলাম বলেন, ‘দুই বছরে চাইবার ঘর নড়ানু। নদীর ভাঙন মোর পিছু ছাড়িল না। অনেক কষ্ট করি ধারদেনা, পোষা গরু বিক্রি করি আমন ধান নাগাছনু। ধানও ভালো হইছলো। আর কয়দিন পর কাটনু হয়। কোনটে থাকি যে অসময়ে এই বন্যা হইল। ১০ মিনিটে মোর সউগ শ্যাষ করি দিছে। ফসল, থাকার আশ্রয় সউগ শ্যাষ। এক গলা পানি সাঁতরে বউ ছাওয়াসহ জীবন বাঁচাছি। এখন মাইনসের বাড়িত আছি।’
গঙ্গাচড়া ইউএনও অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০ অক্টোবরের আকস্মিক বন্যায় তিস্তাপারের মানুষের প্রাণহানিসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। দেড় শতাধিক পুকুরের কোটি টাকার মাছ ভেসে যায়। ভারত অংশে গজলডোবা ব্যারাজের সবকটি দরজা খুলে দেওয়ায় অসময়ে তিস্তায় এ বন্যা হয় বলে জানিয়েছেন রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাইবো) কর্মকর্তারা। লক্ষীটারী, নোহালী, আলমবিদিতর, কোলকোন্দ, গজঘণ্টা, মর্নেয়া ও গঙ্গচড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই দিনের বন্যায় ওই ৭টি ইউনিয়নের প্রায় চার শতাধিক মানুষের ঘরবাড়ি বিলীন হয় তিস্তা গর্ভে।
গতকাল সরেজমিনে গঙ্গাচড়ার তিস্তা নদীর ইচলী, মধ্যপাড়া, কেল্লারপাড়, মহিপুর, চব্বিশসাল, নোহালী, বাগডহড়া, বৈরাতি, ছালাপাকসহ বিভিন্ন চর ঘুরে দেখা গেছে, বন্যার পানে কমে গেছে। তিস্তার বুকে ফের জেগে উঠেছে চর। বন্যার ক্ষত কাটিয়ে উঠতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। চরে বালু চাপা পড়া ধান কেউ টেনে তুলছেন, কেউ কেউ জমি চাষ করে ফের ফসল ফলানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ছালাপাক চরে বালুতে ডুবে যাওয়া পাকা ধান টেনে তুলছেন ওই চরের বাসিন্দা এনামুল (৪৫)। সেই ধান মাড়াইয়ের পর বাতাসে বালু ঝাড়ছেন তাঁর স্ত্রী। চরে কথা হয় এনামুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘চর ইজারা নিয়ে ধান লাগিয়েছি। নিজের এক একর জমিতে কুমড়া ছিল। সব পানিতে ভেসে বালু চাপা পড়ে গেছে। আমাদের এত বড় ক্ষতি হলো তাও সরকার কিছু দিচ্ছে না। যদি একটু বীজের ব্যবস্থাও করত তাহলেও আমরা বাঁচতে পারতাম।’
রাজবল্লব গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, ‘ভাই, এবারের বন্যাত ফকির হয়ে গেলাম। বউয়ের গয়না বিক্রি করে ফের কুমড়া লাগাচ্ছি। কৃষি বিভাগের লোকজন কোনো খোঁজ নেয় না।’
লক্ষীটারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, ‘বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির শিকার পরিবারগুলোকে এখনো কোনো সহায়তা করা হয়নি।’
গঙ্গাচড়া কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০ অক্টোবরের বন্যায় এক হাজার ৬৫০ হেক্টর জমির আমন খেত, ৩০ হেক্টর জমির বাদাম, মিষ্টি কুমড়া ৩৫ হেক্টর, ১০ হেক্টর জমির আলুখেত নষ্ট হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম গতকাল বুধবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের নিজেদের কোনো ফান্ড নেই। তাই প্রণোদনা দিতে পারিনি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে সহায়তা করা হবে।
ইউএনও তাসলীমা বেগম বলেন, আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখনো সরকারিভাবে কোনো বরাদ্দ আসেনি। তবে আজ (বুধবার) গোখাদ্যের জন্য এক লাখ, শিশু খাদ্যের জন্য এক লাখ, খাদ্যসামগ্রীর জন্য তিন লাখ টাকা রংপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বরাদ্দ পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
দুই বছরে চারবার ঘর সরিয়েছেন। বসতভিটা হারিয়ে ফের বাঁচার জন্য নতুন ঘর বেঁধেছিলেন। ৬০ শতক জমিতে করেছিলেন আমন ধানের চাষ। আধপাকা আমনখেত নিয়ে স্বপ্ন দেখছিলেন গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের চর ইচলীর কৃষক ছাইয়াদুল ইসলামের। কিন্তু গত ২০ অক্টোবর আকস্মিক বন্যায় ফুলেফেঁপে ওঠে তিস্তা। বাঁধ ভেঙে ঘরবাড়ি, গরু-ছাগলের সঙ্গে ভেসে যায় তাঁর সোনালি ফসল। সব হারিয়ে তিনি এখন নিঃস্ব। একদিনের বন্যা চলে গেছে। ফের জেগে উঠেছে চর। সেই চরে এখন সবুজ ফসলের খেত নেই। আছে কৃষকের বুকফাটা হাহাকার, ধুয়ে মুছে নেওয়া মাটিপোড়া মানুষের ফসলহানির ক্ষত।
ছাইয়েদুল ইসলাম বলেন, ‘দুই বছরে চাইবার ঘর নড়ানু। নদীর ভাঙন মোর পিছু ছাড়িল না। অনেক কষ্ট করি ধারদেনা, পোষা গরু বিক্রি করি আমন ধান নাগাছনু। ধানও ভালো হইছলো। আর কয়দিন পর কাটনু হয়। কোনটে থাকি যে অসময়ে এই বন্যা হইল। ১০ মিনিটে মোর সউগ শ্যাষ করি দিছে। ফসল, থাকার আশ্রয় সউগ শ্যাষ। এক গলা পানি সাঁতরে বউ ছাওয়াসহ জীবন বাঁচাছি। এখন মাইনসের বাড়িত আছি।’
গঙ্গাচড়া ইউএনও অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০ অক্টোবরের আকস্মিক বন্যায় তিস্তাপারের মানুষের প্রাণহানিসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। দেড় শতাধিক পুকুরের কোটি টাকার মাছ ভেসে যায়। ভারত অংশে গজলডোবা ব্যারাজের সবকটি দরজা খুলে দেওয়ায় অসময়ে তিস্তায় এ বন্যা হয় বলে জানিয়েছেন রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাইবো) কর্মকর্তারা। লক্ষীটারী, নোহালী, আলমবিদিতর, কোলকোন্দ, গজঘণ্টা, মর্নেয়া ও গঙ্গচড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই দিনের বন্যায় ওই ৭টি ইউনিয়নের প্রায় চার শতাধিক মানুষের ঘরবাড়ি বিলীন হয় তিস্তা গর্ভে।
গতকাল সরেজমিনে গঙ্গাচড়ার তিস্তা নদীর ইচলী, মধ্যপাড়া, কেল্লারপাড়, মহিপুর, চব্বিশসাল, নোহালী, বাগডহড়া, বৈরাতি, ছালাপাকসহ বিভিন্ন চর ঘুরে দেখা গেছে, বন্যার পানে কমে গেছে। তিস্তার বুকে ফের জেগে উঠেছে চর। বন্যার ক্ষত কাটিয়ে উঠতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। চরে বালু চাপা পড়া ধান কেউ টেনে তুলছেন, কেউ কেউ জমি চাষ করে ফের ফসল ফলানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ছালাপাক চরে বালুতে ডুবে যাওয়া পাকা ধান টেনে তুলছেন ওই চরের বাসিন্দা এনামুল (৪৫)। সেই ধান মাড়াইয়ের পর বাতাসে বালু ঝাড়ছেন তাঁর স্ত্রী। চরে কথা হয় এনামুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘চর ইজারা নিয়ে ধান লাগিয়েছি। নিজের এক একর জমিতে কুমড়া ছিল। সব পানিতে ভেসে বালু চাপা পড়ে গেছে। আমাদের এত বড় ক্ষতি হলো তাও সরকার কিছু দিচ্ছে না। যদি একটু বীজের ব্যবস্থাও করত তাহলেও আমরা বাঁচতে পারতাম।’
রাজবল্লব গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, ‘ভাই, এবারের বন্যাত ফকির হয়ে গেলাম। বউয়ের গয়না বিক্রি করে ফের কুমড়া লাগাচ্ছি। কৃষি বিভাগের লোকজন কোনো খোঁজ নেয় না।’
লক্ষীটারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, ‘বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির শিকার পরিবারগুলোকে এখনো কোনো সহায়তা করা হয়নি।’
গঙ্গাচড়া কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০ অক্টোবরের বন্যায় এক হাজার ৬৫০ হেক্টর জমির আমন খেত, ৩০ হেক্টর জমির বাদাম, মিষ্টি কুমড়া ৩৫ হেক্টর, ১০ হেক্টর জমির আলুখেত নষ্ট হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম গতকাল বুধবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের নিজেদের কোনো ফান্ড নেই। তাই প্রণোদনা দিতে পারিনি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে সহায়তা করা হবে।
ইউএনও তাসলীমা বেগম বলেন, আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখনো সরকারিভাবে কোনো বরাদ্দ আসেনি। তবে আজ (বুধবার) গোখাদ্যের জন্য এক লাখ, শিশু খাদ্যের জন্য এক লাখ, খাদ্যসামগ্রীর জন্য তিন লাখ টাকা রংপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বরাদ্দ পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫