Ajker Patrika

কৃষকের দুশ্চিন্তায় মাজরা পোকা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২১, ১৫: ২১
কৃষকের দুশ্চিন্তায় মাজরা পোকা

কারেন্ট পোকা নামে পরিচিত মাজরা পোকার আক্রমণে জেলায় জেলায় ধানগাছ মরে যাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে খেত। ধান গাছে পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি এবং বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকেরা।

কীটনাশক দেওয়ার পরও রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না এই পোকার আক্রমণ থেকে। এর ফলে খেত নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি চলতি মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলনের বিপর্যয় হতে পারে—এমনটাই আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। অন্যদিকে কৃষকেরা এ বিষয়ে মাঠপর্যায়ের কর্মীদের কাছ থেকে যথাযথ পরামর্শ না পাওয়ার অভিযোগ এনেছেন। সেই সঙ্গে আশানুরূপ ফলন না হওয়ায় হতাশা দেখা দিয়েছে কৃষকদের মনে।

নন্দীগ্রাম: উপজেলার শিমলা, হাটধুমা, দলগাছা, বাদলাশন, নামুইট, বামনগ্রাম, দামগাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় শত শত বিঘা জমিতে ধানের শিষ মরে যাচ্ছে। ফলে চলতি আমন মৌসুমে ধানের ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন এখানকার কৃষকেরা। কোনো কোনো কৃষক বলছেন মাজরা পোকা শিষগুলো কেটে দিচ্ছে। আবার কোনো কোনো কৃষক বলছেন এটি একধরনের রোগ।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভায় ১৯ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান রোপণ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৪ হাজার ৬৯২ মেট্রিক টন ধানের। ইতিমধ্যে আগাম জাতের ধান কাটতে শুরু করেছেন কৃষকেরা।

উপজেলার বামনগ্রামের কৃষক তীর্থ সলিল রুদ্র বলেন, ‘আমার ৪০ বিঘা আমন ধানের জমির মধ্যে বাসমতী ও ৪৯ ধানের জমিতে শিষ বেশি মরেছে। কোনো রোগে শিষগুলো মরছে, নাকি মাজরা পোকা শিষ কেটে দিচ্ছে—তা বুঝতে পারছি না। তবে ওষুধ ছিটিয়েছি, খুব একটা কাজ হচ্ছে না।’

দলগাছা গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, ‘আমি ৮ বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছি। আমার ৪ বিঘা জমির অনেক ধান মরে গেছে মাজরা পোকার আক্রমণে।’

এ বিষয়ে নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আদনান বাবু বলেন, ‘মাজরা পোকার আক্রমণে শিষগুলো মরে যাচ্ছে। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে সব সময় কৃষকদের পার্চিং পদ্ধতির পরামর্শ দিয়েছি।’

পাঁচবিবি: এ উপজেলার কৃষকেরা পরামর্শ পেতে মাঠপর্যায়ে দায়িত্বরত কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের দেখা মিলছে না—এমন অভিযোগ করেছেন। আশানুরূপ ফলন না হওয়ায় আশঙ্কায় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন এলাকার কৃষকেরা।

উপজেলার আয়মারসুলপুর ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের কৃষক জহুরুল ইসলাম বলেন, কারেন্ট পোকার আক্রমণে তাঁরসহ অন্য কৃষকের আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে কয়েক দিন আগে বৃষ্টি হয়েছিল। সে পানির জন্য পোকার আক্রমণ থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া গেছে।

দরপাল গ্রামের কৃষক বিনয় চন্দ্র বলেন, ‘আমরা কৃষক শুধু রাতটুকু বাড়িতে ঘুমাই আর সারা দিন মাঠে ফসলের পরিচর্যা করি। আমাদের ফসলে পোকার আক্রমণ বা কোন ফসলে কী ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে—এসব পরামর্শ দেওয়ার জন্য কৃষি অফিসের কাউকে মাঠে ঠিকমতো পাই না।’

আগাইর গ্রামের কৃষক লিটন আরমান বলেন, ‘এ বছর ৪ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছি। ফলন ভালো হওয়ায় বিঘাপ্রতি ২০ মণ ধান পাওয়ার কথা থাকলেও কারেন্ট পোকার আক্রমণে অর্ধেক ধানও ঘরে তুলতে পারব না।’ তাঁরও অভিযোগ, পরামর্শের জন্য কৃষি অফিসের কাউকে না পেয়ে নিজ উদ্যোগে কীটনাশক ব্যবহার করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে আয়মারসুলপুর ইউনিয়নে দায়িত্বরত কৃষি উপসহকারী ফজলে রাব্বীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এত বড় ইউনিয়নে আমি একা দায়িত্ব পালন করছি। যে কৃষক তাঁর ফসলের সমস্যার কথা জানান, সঙ্গে সঙ্গে সরেজমিনে গিয়ে পরামর্শ দিই।’

পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লজ্জায় ধর্ষণের শিকার মায়ের আত্মহত্যা: ৮ বছরের মেয়েটি যাবে কোথায়

এনসিপির পদযাত্রা উপলক্ষে ‘স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত’, প্রধান শিক্ষকের দুই রকম বক্তব্য

বলিদান ও শয়তান পূজার বুদ্ধি দিল চ্যাটজিপিটি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মহড়া শুরু, চলবে ৩০ জুলাই পর্যন্ত

বাংলাদেশ ব্যাংকে পোশাক নির্দেশনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি ৫৪ বিশিষ্ট নাগরিকের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত