Ajker Patrika

যেখানে ব্যতিক্রম মাহমুদউল্লাহ

রানা আব্বাস, ডালাস থেকে
আপডেট : ০৬ জুন ২০২৪, ১২: ৩৯
যেখানে ব্যতিক্রম মাহমুদউল্লাহ

‘তাসকিন, এই তাসকিন, ওই যে দেখো, ওই যে...’—নেট থেকে বিসিবির অফিশিয়াল ফটোগ্রাফারকে দেখিয়ে তাসকিন আহমেদের সঙ্গে মজা করতে চেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। তাঁর এই মজা-রসিকতার সঙ্গে দলের সবাই পরিচিত। কিছুক্ষণ পর অনুশীলনে তাঁকে বল হাতে মজা করতে দেখা গেল অনুজ স্পিনারদের সঙ্গে।

দুদিন আগে বিসিবির ভিডিও সাক্ষাৎকারে শরীফুল ইসলাম বলছিলেন, ‘রিয়াদ ভাই (মাহমুদউল্লাহ) সবার সঙ্গে ভালো মেশেন। তিনি আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বড়। আমাদের সঙ্গে এমনভাবে মেশেন, মনেই হয় না যে তিনি বয়সে বড়। দলকে একেবারে চাঙা করে রাখেন। মনে হয় যে আমরা খুব ছোট থেকে একসঙ্গে খেলছি।’

হাসি-রসিকতায় ড্রেসিংরুম মাতিয়ে রাখা মাহমুদউল্লাহ নিজের দায়িত্ব নিয়েও অনেক সচেতন। ধারাবাহিক ব্যর্থতায় দলে গুমোট একটা আবহ লক্ষ করা গেল গত কদিনে। এই দৃশ্যপটে মাহমুদউল্লাহ ব্যতিক্রম। মনে হলো, বিষাদে ডুবে থেকে, হতাশায় ভেঙে পড়ার কোনো অর্থ খুঁজে পাননি তিনি। মহেন্দ্র সিং ধোনির বিরাট ভক্ত মাহমুদউল্লাহ নিজের মতো করে হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করছেন। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপেও মাহমুদউল্লাহকে এমন দেখা গিয়েছিল—বিধ্বস্ত দলের মধ্যে তিনি জ্বলেছিলেন উজ্জ্বল তারা হয়ে।

হাসিখুশি চেহারার পেছনে একটা উপলব্ধি মাহমুদউল্লাহর মধ্যে কাজ করতে পারে—ক্যারিয়ারের এই সায়াহ্নে এসে আর কী চাওয়া-পাওয়ার আছে? ৩৮ বছর বয়স আর ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে বাদ পড়ার চিন্তা, বাজে খেলার হতাশায় নিমজ্জিত হওয়ার কোনো মানেই নেই! ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে তাঁর দলে থাকা না থাকা নিয়ে যে আলোচনা-বিতর্ক, ওই কঠিন বাস্তবতা যখন পেরিয়ে এসেছেন, মাহমুদউল্লাহর এখন দুশ্চিন্তা নয়, এগিয়ে চলা শুধুই উপভোগের মন্ত্রে। দলের বাকিদের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহর পার্থক্য এখানেই।

১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে উপভোগ্য সময় যতটা পেয়েছেন, যন্ত্রণার পাল্লা তার চেয়ে বেশিই ভারী ছিল। মাহমুদউল্লাহ তাই বিসিবিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘সংগ্রাম তো আলহামদুলিল্লাহ আমার ক্যারিয়ারজুড়েই কম-বেশি ছিল। সব সময় আল্লাহর ওপর বিশ্বাস করি। আল্লাহর কাছে সব সময় আমার যা কিছু বলার বলি এবং সব সময় বিশ্বাস করি, আল্লাহ সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী। আমার ভালো সময়, খারাপ সময়—সবকিছুরই একটা শিক্ষণীয় বিষয় থাকে। এটা বিশ্বাস করি।’

আরব আমিরাতে হওয়া ২০২২ এশিয়া কাপে ভালো না খেলায় মাহমুদউল্লাহ বাদ পড়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ওই বিশ্বকাপ না খেলার দুঃখ এখনো ভুলতে পারেন না তিনি, ‘২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যখন ছিলাম না, খারাপ লেগেছিল। মনে হয়েছিল, দলে আমি থাকতে পারতাম। যাহোক, সেটা হয়নি। সেটার জন্য আমার কোনো কষ্ট নেই। আমি সব সময়ই আলহামদুলিল্লাহ। যেটা বলি যে দলের জন্য যতটুকু করতে পারি, সেটা আমার উপস্থিতি দিয়ে হোক বা পারফরম্যান্স দিয়ে কিংবা অভিজ্ঞতা দিয়ে হোক—সর্বোচ্চটা সব সময় নিংড়ে দিই।’

সেই নিংড়ে দেওয়ার আরেকটা দারুণ সুযোগ মাহমুদউল্লাহ পাচ্ছেন এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। যে বয়সে তিনি দাঁড়িয়ে, ২০ ওভারের বিশ্বকাপ সামনে আর খেলা হবে কি না কে জানে! শেষ ভেবেই হয়তো এবার ভিন্ন কিছু উপহার দেওয়ার প্রত্যয় মাহমুদউল্লাহর কণ্ঠে, ‘চেষ্টার কমতি থাকে না। আশা করি, এবার ভালো কিছুই করব। ট্রফি জিততে ভাগ্যের সহায়তা লাগে। খুব কাছাকাছি গিয়েছিলাম, তবে পারিনি। আমাদের সমর্থন করলে যেকোনো কিছু আমরা করতে পারি।’

নিউইয়র্কে ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে শুধু তাঁর ব্যাটই হেসেছিল। এবার মূল মঞ্চেও রাঙানোর অপেক্ষায় মাহমুদউল্লাহ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত