Ajker Patrika

সিইও নেই ১৩ জীবনবিমা কোম্পানি র

আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২১, ১৫: ৩৮
সিইও নেই ১৩ জীবনবিমা কোম্পানি র

দেশের ৩৫টি জীবনবিমা কোম্পানির মধ্যে ১৩টি কোম্পানির শীর্ষ পদ তথা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পদ ফাঁকা। সিইও ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এসব প্রতিষ্ঠান। এমনকি শূন্যপদ পূরণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) দেওয়া তাগাদাও আমলে নিচ্ছে না পরিচালনা পর্ষদ। মূলত খরচ কমানো এবং ইচ্ছেমাফিক প্রতিষ্ঠান চালাতে শীর্ষ পদে ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি বসিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।  

আইডিআরএর হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সিইও নেই—এমন জীবনবিমা প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে আলফা ইসলামিক লাইফ ইনস্যুরেন্স, বেস্ট লাইফ ইনস্যুরেন্স, চার্টার্ড লাইফ ইনস্যুরেন্স, ফারইস্ট ইসলামিক লাইফ ইনস্যুরেন্স, গার্ডিয়ান লাইফ ইনস্যুরেন্স, যমুনা লাইফ ইনস্যুরেন্স, মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স, এনআরবি গ্লোবাল লাইফ ইনস্যুরেন্স, প্রতিরক্ষামূলক ইসলামী জীবনবিমা, সোনালী লাইফ ইনস্যুরেন্স, ট্রাস্ট লাইফ ইনস্যুরেন্স, আস্থা লাইফ ইনস্যুরেন্স এবং আকিজ তাকাফুল লাইফ ইনস্যুরেন্স। এ ছাড়া ৪৫টি সাধারণ বিমা কোম্পানির মধ্যে জনতা ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড সিইও ছাড়াই ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এনআরবি গ্লোবাল লাইফ ইনস্যুরেন্স প্রায় চার বছর ধরে সিইও ছাড়াই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আলফা ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সের সিইও পদটি ২০১৯ সালের আগস্ট মাস থেকে শূন্য পড়ে আছে। বেস্ট লাইফ ইনস্যুরেন্সের সিইও একরামুল আমিন ২০১৯ সালের আগস্টে পদত্যাগের পর পদটি আর পূরণ হয়নি।

যমুনা লাইফ ইনস্যুরেন্সের সিইও হিসেবে বিশ্বজিৎ কুমার মণ্ডলের মেয়াদ ২০২০ সালের ৬ এপ্রিল শেষ হয়ে গেলে এর পর থেকে কোম্পানির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুল হাসান খন্দকার ভারপ্রাপ্ত সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

১৩টি জীবনবিমার সিইও পদ দীর্ঘদিন ধরে খালি থাকার বিষয়ে আইডিআরএর মুখপাত্র এবং নির্বাহী পরিচালক এস এম শাকিল আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইন অনুযায়ী ছয় মাসের বেশি এসব পদ ফাঁকা রাখার সুযোগ নেই। এসব পদ পূরণে সংশ্লিষ্ট বিমা কোম্পানিগুলোকে আইডিআরএর পক্ষ থেকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে এবং সম্ভাব্য সিইও তালিকা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা এতে কোনো কর্ণপাত করেনি।  

বিমা কোম্পানি আইনের ৮০ ধারার ৪ উপধারায় বলা হয়েছে, বিমা কোম্পানির সিইও পদ একাধারে তিন মাসের অধিক সময়ের জন্য শূন্য রাখা যাবে না। তবে শর্ত থাকে যে বিশেষ পরিস্থিতিতে উক্ত সময়সীমা আরও তিন মাস বাড়াতে পারবে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এই আইনের তোয়াক্কা না করেই বছরের পর বছর ভারপ্রাপ্ত সিইও দিয়ে চলছে জীবনবিমা কোম্পানিগুলো।

আইন অমান্যকারী এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, যেকোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে শীর্ষ কর্মকর্তাদের যথাসময়ে নিয়োগ দিতে হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চলতি দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা অবসরে যাওয়ার বেশ আগেই নতুন সিইও নিয়োগ দেওয়া হয়। এটা বাংলাদেশেও চালু করার সময় এসেছে। কোনো সংস্থার প্রধানসহ বেশিসংখ্যক পদ বেশি দিন খালি থাকতে পারে না। দীর্ঘদিন শীর্ষ পদ খালি আছে—এমন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

 কিছু বিমা কোম্পানি পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃপক্ষ কোম্পানির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতে এবং স্বার্থ হাসিল করতে পছন্দের ব্যক্তিকে ভারপ্রাপ্ত সিইও নিয়োগ দিয়ে প্রতিষ্ঠান চালাতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন আইডিআরএর সাবেক চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ। তিনি বলেন, এটা বিমা খাতের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। একটি বিশেষ মহল অযোগ্য লোকদের বিভিন্ন দায়িত্ব দিয়ে প্রতিষ্ঠান চালাতে চায়। সিইও পদের জন্য তাদের পছন্দের কাউকে পায় না বলে নিয়োগ দেয় না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত