Ajker Patrika

ইটভাটায় পুড়ছে কাঠ নির্বিকার প্রশাসন

আবুল কাসেম, সাতক্ষীরা
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ৪৪
ইটভাটায় পুড়ছে কাঠ  নির্বিকার প্রশাসন

সাতক্ষীরায় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে ইটভাটা। আর এসব ভাটায় কয়লার বদলে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ ও টায়ার। এতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন জনসাধারণ। ভাটা মালিকদের এসব কর্মকাণ্ড রোধে প্রশাসনিক তৎপরতা না থাকাকে দায়ী করেছেন জলবায়ু পরিষদের নেতারা।

ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির তথ্যমতে, জেলায় ১৪০টি ভাটা রয়েছে। এর মধ্যে শুধু সদর উপজেলাতেই আছে অর্ধশতাধিক।

সরেজমিনে দেখা যায়, সাতক্ষীরা সদরের বেতনা নদী ও তালার কপোতাক্ষ নদীর দুই ধারে ফসলি জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে অর্ধশতাধিক ইটভাটা। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইনের কোনো নিয়মই মানা হয় না এসব ভাটাগুলোতে। পুড়ছে কয়লার বদলে কাঠ। জেলার অধিকাংশ ভাটায় ঝিকঝাক কিলন পদ্ধতির ব্যবহার নেই। এদের মধ্যে অধিকাংশ ভাটায় পুরোনো ফিড পদ্ধতির। এতে কালো ধোয়ায় বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ।

কাঠ পোড়ানোর জন্য অনেক অজুহাতই দাঁড় করাচ্ছেন ভাটা মালিকেরা। কেউ বলছেন, কয়লার দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় কাঠ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। আবার অনেকে ভাটার মধ্যে মণে মণে কাঠ রেখে বলছেন, তাঁদের হাওয়া ভাটায় কাঠ ব্যবহার করা যায় না। আবার অনেকে বলছেন, ইট পোড়ানোর প্রথম দফায় কাঠের ব্যবহার করতে হয়।

এ প্রসঙ্গে বিনেরপোতা এলাকার ভাটা মালিক প্রকৌশলী ফরিদ রহমান জানান, গতবার কয়লার দাম ছিল ৮০০-৯০০ টাকা মণ। আর এবার কয়লার দাম হয়েছে ১ হাজার ৮০০ টাকা মণ । ইটের দাম গতবার প্রতি হাজার ছিল ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। এবারও তাই। ইটের দাম বাড়েনি কিন্তু কয়লার দাম বৃদ্ধিতে পাওয়ায় অনেক ভাটা মালিকেরাই কাঠ ব্যবহার করছেন।

বিনেরপোতা এলাকার আরেক ভাটা মালিক লিয়াকত সরদার বলেন, কাঠের কেজি আড়াই টাকা। আর কয়লার কেজি ১৮ টাকা। তাহলে কাঠ ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও অনেকে বাধ্য হয়ে কাঠ ব্যবহার করছেন। তাই তিনি কয়লার দাম কমাতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানান।

পরিবেশ বিপন্নের জন্য অনেকাংশে দায়ী অবৈধভাবে পরিচালিত এসব ইটভাটা। আর তদারকি না থাকার জন্য প্রশাসনের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন জলবায়ু পরিষদের নেতারা।

এ বিষয়ে জেলা জলবায়ু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাধব দত্ত বলেন, সাতক্ষীরায় দেড় শতাধিক ইটভাটা রয়েছে। এর কিছু বৈধ, কিছু অবৈধ। তবে এখন ভাটায় কাঠ পোড়ানোর ফলে পরিবেশের যে ক্ষতি হচ্ছে, সেটা খুবই ভয়ানক বিষয়। পরিবেশ অধিদপ্তর যদি ব্যবস্থা না নেয়, প্রশাসন যদি ব্যবস্থা না নেয়, তবে আমাদের আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া বিকল্প পথ থাকবে না।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সরদার শরীফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা অভিযান চালাব। তবে আমাদের লোকবল খুবই কম। ট্রান্সপোর্ট নেই। ম্যাজিস্ট্রেটও কম। তারপরেও আমরা ভাটা মালিকদের নোটিশ করেছি। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে আমরা ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত