Ajker Patrika

দালালের ‘সাইক্লোন’ তবু থামছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৩: ২৩
দালালের ‘সাইক্লোন’ তবু থামছে না

টাকা দিয়েছেন দুই-চার মাস আগে, কিন্তু এখনো বুঝে পাননি পণ্য। টাকা ফেরত না দিয়ে দেওয়া হয়েছে চেক। সেই চেক ব্যাংকে দিলে প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে। ভোগান্তির শিকার এমন হাজারখানেক মানুষের ভিড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দালাল প্লাসের কার্যালয়ে। এই যখন অবস্থা, তখনো ৫০ শতাংশ ছাড়ের ঘোষণা দিয়ে ‘সাইক্লোন ক্যাম্পেইন’ চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

গতকাল সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে দালাল প্লাসের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় ভবনের চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ, তিনটি তলাজুড়ে হাজারখানেক গ্রাহকের ভিড়। কারও পাওনা ৩০ হাজার, কারও ৫ লাখ, কারও আবার ১৫ লাখ বা তারও বেশি। তাঁদের প্রায় সবাইকেই গত তিন মাসে একাধিকবার ব্যাংকের চেক দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ব্যাংকে নিলেই সেই চেক প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে। চেক নয়, গ্রাহকেরা চান টাকা। কিন্তু তিনতলায় মাত্র তিনজন গ্রাহকসেবা কর্মী ছাড়া কাউকেই পাচ্ছিলেন না তাঁরা। সকাল থেকে বলা হচ্ছিল মালিকপক্ষের লোকজন এসে তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরাসরি কেউই আসেননি গ্রাহকদের সামনে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভে এসে গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার পুরোনো আশ্বাস নতুন করে দিয়ে যান প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এস এম রাব্বি আল মামুন। গ্রাহকেরাও সেই আশ্বাস সম্বল করে আরও একবার বাড়ি ফেরেন।

সাদিক আহমেদ নামের এক গ্রাহক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ৫০ শতাংশ ছাড়ের বিজ্ঞাপন দেখে গত ৭ জুন তিনি পাঁচটি মোটরসাইকেল অর্ডার করেন। ব্যাংকের মাধ্যমে টাকাও পরিশোধ করে দেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত একটিও পাননি। গত দুই মাসে দুইবার রিফান্ড চেক দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। দুইবারই চেক প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।

আবদুল্লাহ সিয়াম নামের আরেকজন গ্রাহক বলেন, ‘আমাকে জানানো হয়েছিল আজকে অফিসে এলে টাকা দিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু আজও টাকার বদলে চেক ধরিয়ে দিয়েছে।’

গ্রাহকেরা যখন পণ্য না পেয়ে টাকা ফেরত নেওয়ার জন্য ঘুরছেন, তখনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অর্ধেক দামে পণ্য দেওয়ার বিজ্ঞাপন দিয়ে যাচ্ছে দালাল প্লাস। গত রোববার ৫০ শতাংশ ছাড়ের ‘সাইক্লোন ক্যাম্পেইনে’ বলা হয়, অর্ডার করার দিন থেকে পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে পণ্য সরবরাহ করা হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা মেনে কার্যক্রম পরিচালনার কথাও বলা হয়।

অস্বাভাবিক এই ছাড়ের অফার এবং গ্রাহকদের টাকা আটকে রাখা প্রসঙ্গে ফোনে কথা বলতে রাজি হননি প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা। গতকাল বেলা ১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দালাল প্লাসের অফিসে অপেক্ষা করলেও তাঁদের কাউকে পাওয়া যায়নি।

বিকেলে প্রতিষ্ঠানটির সিইও রাব্বি আল মামুন ফেসবুক লাইভে জানান, পেমেন্ট গেটওয়েতে তাঁদের টাকা আটকে আছে। এ জন্য তাঁরা গ্রাহকদের পাওনা টাকা ফিরিয়ে দিতে পারছেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত