Ajker Patrika

দেশীয় মাছ বিলুপ্তির শঙ্কা চায়না দুয়ারির ফাঁদে

সনি আজাদ, চারঘাট (রাজশাহী) 
Thumbnail image

কারেন্ট জালের থেকেও ভয়ংকর এক জাল দিয়ে মাছ শিকার করছেন রাজশাহীর চারঘাটের কিছু জেলে। জালের নাম ‘চায়না দুয়ারি’। এই জালে শুধু দেশীয় ছোট মাছ নয়, বরং আটকা পড়ছে সব প্রজাতির জলজপ্রাণী। স্বল্পব্যয়ে ও পরিশ্রমে বেশি আয়ের উৎস হওয়ায় জেলেদের কাছে এটি খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এতে দেশীয় মাছ বিলুপ্তির আশঙ্কা করছেন সচেতনমহল।

উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ‘চায়না দুয়ারি’ জাল দিয়ে অবাধে চলছে মাছ শিকার। বিশেষ করে উপজেলা সদরের পদ্মা নদী, বড়াল স্লুইসগেট, মুংলি, পুঠিমারী ও রাজেন্দ্রপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশ্যে এই জাল দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে জোরালো কোনো ভূমিকা নেই বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

জালটি তৈরির ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লোহার রডের গোলাকার বা চতুর্ভুজ আকৃতির কাঠোমোর চারপাশে ‘চায়না জাল’ দিয়ে ঘিরে এই ফাঁদ তৈরি করা হয়। ক্ষেত্রভেদে ‘চায়না দুয়ারি’ ৫০ হাত আবার ৭০ হাত পর্যন্ত লম্বা হয়। একটি দুয়ারি জাল তৈরিতে ৫-১০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়।

এ ছাড়া বাংলাদেশে প্রচালিত কোনো মৎস্য আইন ও বিধিমালায় সরাসরি চায়না দুয়ারি জাল নিষিদ্ধ করা হয়নি। তবে মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ বিধিমালায় সাড়ে চার সেন্টিমিটার বা তার থেকে কম দৈর্ঘ্যের ফাঁসবিশিষ্ট জাল ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন বাজারে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছের পোনা বিক্রি হচ্ছে। যেগুলো ‘চায়না দুয়ারি’ জাল দিয়ে ধরা হয়েছে—বলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই ফাঁদ বসালে নদীর পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া এই জালের ছিদ্র ছোট হওয়ায় ছোট-বড় কোনো মাছ বের হওয়ার সুযোগ নেই। শুধু মাছ নয়, জলজপ্রাণী যেমন শামুক, ঝিনুক, সাপ, ব্যাঙসহ প্রায় সবই আটকা পড়ে এই জালে। যখন ডাঙায় শুকাতে দেওয়া হয়, তখন জালে লেগে থাকা মাছ খেতে এসে আটকা পড়ে পাখিরাও।

উপজেলার মিয়াপুর গ্রামের জেলে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, উভয় দিক থেকে ছুটে চলা যেকোনো মাছ সহজেই এতে আটকা পড়ে। একবার যেকোনো ছোট-বড় মাছ ঢুকলে বের হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রশাসনের চোখের সামনে অসাধু জেলেরা এভাবে মাছের আবাসস্থল নষ্ট করছেন। এতে সাধারণ জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

উপজেলা সদরের আদর্শ মৎস্য সমিতির সভাপতি খাইরুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদী থেকে প্রবাহিত হওয়া বড়াল নদের পানিতে রয়েছে মাছের ডিম ও পোনা। ক্ষুদ্রাকৃতির কোনো মাছের পক্ষেও এই ফাঁদ থেকে বেরিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এই জাল এসে দেশীয় মাছের বংশ শেষ করে দিচ্ছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ওয়ালিউল্লাহ মোল্লাহ বলেন, চায়না দুয়ারি জাল বন্ধে মৎস্য আইনে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা নেই। তাই বাজারে বিক্রি বন্ধে কারেন্ট জালের মতো কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। তবে নদীতে ব্যবহারের ক্ষেত্রে মাছ ধ্বংসের ধারা প্রয়োগে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। তাঁরা সেভাবেই অভিযান কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত