Ajker Patrika

‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের বাঁচান’

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ১০: ০৯
Thumbnail image

বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আইয়ুব রানার বয়স এখন সত্তর। ১৫ বছর ধরে কিডনির ডায়ালাইসিস করেই বেঁচে আছেন তিনি। এই জটিল রোগের পেছনে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। তিন বছর আগে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ও হাসপাতালে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে কিডনি ডায়ালাইসিস সেবা চালু হয়। এর পর থেকে অল্প টাকায় চিকিৎসা নিয়ে আসছিলেন তিনি। সেই সেবাটি হঠাৎ বন্ধ হওয়ার খবরে অন্য সবার মতো তিনিও আতঙ্কিত ছিলেন।

আজকের পত্রিকার সঙ্গে যখন তিনি কথা বলছিলেন তখন তাঁর বাম হাতের রক্তনালি দিয়ে ডায়ালাইসিস চলছিল। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, আমাদের বাঁচান। এখানে অনেক গরীব রোগী আছেন, যাঁরা নামমাত্র টাকা দিয়ে ডায়ালাইসিস করে বেঁচে আছেন। তাই চমেকের ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ হলে চিকিৎসার খরচ মেটাতে না পেরে শত শত কিডনি রোগী মারা যাবে।’

পটিয়া থেকে আসা রুপন কান্তি দাশ গতকাল বুধবার সকাল ৯টা থেকে অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি বেলা ১২টার দিকে কিডনি ডায়ালাইসিস করার জন্য সিরিয়াল পান। অনেক ধার-দেনা করে তাঁকে ডায়ালাইসিসের খরচ মেটাতে হয়। প্রতি মাসে তাঁকে ৯ বার ডায়ালাইসিস করাতে হয়। গরীব রোগীর কোটায় প্রতি ডায়ালাইসিসের জন্য তাঁকে দিতে হয় ৫১০ টাকা।

রুপন কান্তি দাশ বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ থাকার খবরে চিন্তিত ছিলাম। কারণ বাইরে চিকিৎসা করানোর মতো টাকা নেই। চিকিৎসার অভাবে মরতেই হতো।’

চমেক হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস কার্যক্রম হঠাৎই বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ভারতীয় প্রতিষ্ঠান স্যান্ডর মেডিকেইডস (প্রা.) লিমিটেড। তাঁদের পক্ষ থেকে গত ২ জানুয়ারি এ বিষয়ে নোটিশ দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে দেওয়া ওই নোটিশে বলা হয়, ৫ জানুয়ারি থেকে চমেক হাসপাতালে ডায়ালাইসিস বন্ধ থাকবে। এ জন্য তাঁরা বিকল্প ব্যবস্থা নিতে রোগীদের প্রতি অনুরোধ জানান।

ডায়ালাইসিস সেন্টারের ইনচার্জ ডা. হিমেল আচার্য বলেন, তাঁদের শয্যা রয়েছে ৩১টি। প্রতিদিন প্রায় ১৫০ রোগী ডায়ালাইসিস করান। মাসে এই সংখ্যা প্রায় আড়াই আজার।

চমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আফতাব উল ইসলাম বলেন, স্যান্ডরের সঙ্গে ২০১৭ সালে সরকারের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী তাঁরা এত দিন সেবা দিয়ে আসছে। সেবার বিপরীতে তাদের যে পরিমাণ অর্থ দেওয়ার কথা তা পরিশোধ না করায় সেবা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।

আফতাব উল ইসলাম আরও বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা সেবা চালিয়ে নেবেন বলে জানিয়েছেন। টাকার বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কেও বলেছি।’

স্যান্ডর মেডিকেইডসের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, সরকারের কাছে গত দুই বছরের প্রায় ২৩ কোটি টাকা পান তাঁরা। টাকা পরিশোধের জন্য তাঁদের কাছে স্বাস্থ্য বিভাগ ১০ তারিখ পর্যন্ত সময় চেয়েছে। এই সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে ফের সেবা বন্ধ করা হতে পারে বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত