Ajker Patrika

ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া
আপডেট : ১৩ মে ২০২২, ১৫: ৩৪
Thumbnail image

গঙ্গাচড়ায় এবার বোরো ধানের ফলন ভালো হলেও সংগ্রহের আগেই অনেক জমির ফসল শিলাবৃষ্টির আঘাতে ঝরে গেছে। সেই সঙ্গে শ্রমিক সংকটের কারণে পাকা ধান ঘরে তুলতে পারছেন না চাষিরা। এতে তাঁদের মধ্যে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গঙ্গাচড়ায় এ বছর ১১ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ১৫০ হেক্টর বেশি। তবে গতবার চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৪৬ হাজার ৯৯১ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হলেও এ বছর এখন পর্যন্ত তা নির্ধারণ করা যায়নি।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বড়বিল, নোহালী, কোলকোন্দসহ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, কিছুদিন আগের শিলাবৃষ্টিতে অনেক জমির ধান মাটিতে ঝরে পড়েছে। আর এখন শ্রমিক সংকটের কারণে অনেক চাষি ধান কাটতে পারছেন না। তাঁরা চিন্তিত অবস্থায় দিন পার করছেন।

কোলকোন্দের স্কুলপাড়া গ্রামের ধানচাষি মমিনুর ইসলাম বলেন, ‘এ বছর দুই বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগিয়েছিলাম। খরচ হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার টাকা। প্রথম দিকে ফলন ভালোই হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন আগে শিলার কারণে জমির অনেক ধান মাটিতে ঝরে পড়ে। যে জায়গায় বিঘাপ্রতি ২০ মণ ধান হওয়ার কথা সেখানে এখন ধান পাব মনে হয় ১৩ থেকে ১৪ মণ। বিক্রি করলে বর্তমান বাজার দরে পাব প্রায় ১০ হাজার টাকা। এদিকে আবার শ্রমিকেরা বিঘাপ্রতি ধান ঘরে তুলে দিতে নিচ্ছে ৫ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে এক বিঘা জমিতে ধান উৎপাদনে খরচ হচ্ছে ২৩ হাজার টাকা। এখন বলেন আমরা বাঁচাব নাকি মরব!’

একই হতাশার কথা শোনা গেল বড়বিলের জমির উদ্দিনের কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘এই জমিতে গতবার বোরো মৌসুমে বিঘা প্রতি ১৯ থেকে ২০ মণ ধান পেয়েছি। এবার শিলাবৃষ্টিতে অনেক ধান পড়ে গেছে। শিষ মাটিতে পড়ে ধানের চারা গজাচ্ছে। বিঘাপ্রতি ১৫ মণ ফলন হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। ধানের দামও কম। কালকে বাজারে ৮০ কেজি ধান বিক্রি করি পেয়েছি ১ হাজার ৩০০ টাকা। এই দাম থাকলে মরা লাগবে এবার। সরকারের কাছে একটাই দাবি, ধানের দাম যেন বাড়ায়।’

নোহালীর সুশীল রায় জানান, তিনি তিন বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগিয়েছেন। ফলন ভালো হয়েছিল। তবে কয়েক দিনের শিলাবৃষ্টিতে অর্ধেক ধান ঝরে গেছে। বাকি ধান শ্রমিক সংকটের কারণে ঘরে তুলতে পারছেন না। আবার যদি শিল পড়ে তাহলে বাকি ধানটুকুও ঘরে তুলতে পারবেন না।

বড়বিলের বাগপুর চোক্তাপাড়া গ্রামের কৃষিশ্রমিক বাবুল বিশ্বাস জানান, গত বোরো মৌসুমে এলাকায় বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২২ মণ ফলন হয়েছে। এবার ঈদের আগে থেকেই তিনি ধান কাটছেন। কোনো কৃষকের জমিতে বিঘায় ১২ থেকে ১৩ মণের বেশি ফলন দেখেননি। তবে বাজারে ধানের দাম বাড়লে কৃষক হয়তো কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কিছু কিছু এলাকায় এ ধরনের সমস্যা হয়েছে। তবে গতবারের তুলনায় এবার ফলন ভালো হওয়ার আশা করছি।’

ধানের দাম কমের বিষয় জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের কাজ হচ্ছে উৎপাদন বাড়ানো। বাজার মনিটরিংর জন্য আলাদা লোকজন রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত